Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পিতার মামলায় যেতে হলো কারাগারে

| প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : ফটিকছড়িতে পিতার সাজানো মামলায় পুত্রকে যেতে হয়েছে কারাগারে! পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় কৌত‚হলের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, ফটিকছড়ির দৌলতপুরস্থ পেয়ারা বাড়ির জনৈক নন্না মিয়া (৮০) ও দেলোয়ারা বেগম (৭০) ঔরসে জন্ম নেয়া ৪ পুত্রই কাতার প্রবাসী। তাদের মধ্যে প্রবাসে দোকানের হিসাব-নিকাশ এবং বাড়িতে ভিটি-জমির ভাগ-বণ্টন নিয়ে বিরোধ চরমাকার ধারণ করে। এ নিয়ে ভাই ভাই মারামারিও বেশ ক’বার হয়েছে। নান্না মিয়ার তৃতীয় পুত্র শাহ আলমের পক্ষে করা অভিযোগে প্রকাশ, তার ছোটভাই নজরুল প্রায় ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়ে দেশে পালিয়ে আসে এবং সম্প্রতি তাকে না জানিয়েই যৌথ বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি ভেঙে ছাদে উঠার পথ বন্ধসহ বৈদ্যুতিক লাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। একমাত্র শিশু সন্তান নিয়ে বাড়িতে থাকা স্ত্রী নিরুপায় হয়ে তাকে ঘটনা জানালে তিনি দ্রæত দেশে ফিরে সিঁড়ি ভাঙার কারণ জানতে চায়। তখন তার পিতা-মাতা ছোট ছেলের পক্ষ নিলে বাক-বিতÐা হয়। পরে শাহ আলম সমাজের কাছে বিচার চাইলে সমাজপতিরা তারিখ নির্ধারণ করে। এতে নান্না মিয়া ও তার ছোট ছেলে অনুপস্থিত থাকে। নিরুপায় হয়ে শাহ আলম পরিবার গত ১৫ ফেব্রæয়ারি ফটিকছড়ি থানা পুলিশের আশ্রয় নেয়। পরের দিন কাউন্টার অভিযোগ দায়ের করে তার পিতা নান্না মিয়া। পুলিশ উভয় অভিযোগের তদন্ত তারিখ ঠিক করে ২১ ফেব্রæয়ারি। কিন্তু তার পূর্বদিন ২০ ফেব্রæয়ারি পুত্র শাহ আলমকে ফাঁসাতে মিথ্যা একটি মামলা দায়ের করে নান্না মিয়া। যাতে পরের দিনের পুলিশি তদন্ত রোধ করা যায়। ওসি বাহাদুর অজ্ঞাত কারণে ২১ ফেব্রæয়ারি ওই মামলা এফআইআর হিসেবে গণ্য করেছেন! নান্না মিয়া নিজের একপুত্রকে বাঁচাতে এবং আরেক পুত্রকে গায়েল করতে গত ৬ মার্চ গোপনে চট্টগ্রামের সিজেএম কোর্টে আরেকটি মামলা দায়ের করে রাখে। থানায় দায়েরকৃত মামলায় গত ৭ মার্চ জামিন নিতে পুত্র শাহ আলম কোর্টে সারেন্ডার করলে পিতার আইনজীবী গোপন মামলাটিও কোর্টের নজরে দেয়। তখন দু’মামলা-ই তার কাল হয়ে দাঁড়ায় এবং কোর্ট তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। এখনো জেলে আছে সে পুত্র শাহ আলম। এলাকাবাসী জানান, নান্না মিয়া একজন ধূর্ত প্রকৃতির লোক। স্ত্রীর সাথে যার বনাবনি খুবই কম। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই চরম ঝগড়াটে। এরই জের ধরে স্ত্রী দেলোয়ারা নান্না মিয়াকে একবার জবাইকালে (অর্ধজবাই অবস্থায়) এলাকাবাসী ধরে ফেলে এবং ওই ঘটনায় স্ত্রী মাসান্তর কারাগারে থাকে। ১৫ ফেব্রæয়ারিও ওই পরিবারে সিঁড়ি ভাঙা ও বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদ করায় শাহ আলম ও ছোটভাই নজরুলের মধ্যে ঝগড়া-মারামারি শুরু হয়। এতে ছোটপুত্র নজরুলের পক্ষ নেয় পিতা নান্না মিয়া ও মা দেলোয়ারা। দু’জনকে থামাতে গিয়ে ধস্তাধস্তিতে পিতার নাকে আঘাত লেগে মৃদু রক্তক্ষরণ হয়। সে-ই রক্ত চোখে-মুখে মেখে মিথ্যা মামলা সাজায় পিতা নান্না মিয়া আর ছোটভাই নজরুল। সে মিথ্যা মামলায় জেলে যেতে হয় শাহ আলমকে। দু’পুত্রের মারামারিতে কার আঘাতে পিতার রক্তক্ষরণ হলো- সেটা উদ্ঘাটন না করে পুলিশও কোন রহস্যময় কারণে মিথ্যা মামলা নিল; এক ঘটনায় ২টি অভিযোগ, ২টি মামলা কি করে হয়- সেটাই এখন এলাকাবাসীর প্রশ্ন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ