পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতায় বাদশা আলমগীরের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে সেটাই যথার্থ। পিতা-মাতার পরই শিক্ষকের অবস্থান। ইতিহাস বলে, যুগে যুগে অতি অত্যাচারী শাসকরাও নত শিরে গুরুর (শিক্ষক) সামনে দাঁড়িয়েছেন। শিক্ষককে অসম্মানের ধৃষ্টতা হিটলারদের মতো স্বৈরশাসকরাও দেখাননি। চাণক্য শ্লোকে আছে, ‘এক অক্ষরদাতা গুরুকেও গুরু বলিয়া মান্য করিবে; যে মান্য করিবে না, সে শতবার কুকুরের গর্ভে জন্মগ্রহণের মতোই চন্ডালত্ব লাভ করিবে।’ শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। সেই শিক্ষক সমাজের কিছু অসৎ ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে জাতির মেরুদন্ড ভাঙছেন।
শিক্ষকদের বলা হয় জাতি (আগামীর মানুষ) গড়ার কারিগর। তারাই আগামীর সমাজ নির্মাণ করেন। ছাত্রছাত্রীদের নৈতিকতা ও পারিপার্শ্বিক শিক্ষাদানের কারণে তারা সমাজে সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। অথচ কতিপয় শিক্ষকের নৈতিকতার স্খলন ও অর্থলোভে ভ‚লণ্ঠিত হচ্ছে দেশের সকল শিক্ষকের সম্মান। শিক্ষক সমাজের গায়ে লেপ্টে যাচ্ছে নোঙরা কাদা। কিছু অর্থের লোভে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অপরাধে জড়িত শিক্ষকদের স্বীকারোক্তিতে প্রমাণ মেলে, ঘুষ দুর্নীতির কারণেই মহৎ ও সমাজের সম্মানিত ‘শিক্ষকতা’ পেশায়ও কিছু লোভাতুর ব্যক্তি ঢুকে গেছেন। তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজের সুবাদে ‘বেড়ায় ক্ষেতের ধান খাওয়া’ এবং ‘সর্ষের ভেতর ভ‚ত’ প্রবাদ দু’টির প্রতিনিধিত্ব করছেন। মেধার স্বাক্ষরের বদলে ঘুষ প্রদান বা কোটা পদ্ধতির সুযোগে শিক্ষকতা মহান পেশায় প্রবেশ করে গোটা শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করছেন। পাবলিক পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিক্ষক জড়িত’ খবর যেন রাষ্ট্রের গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে দূষিত করার নামান্তর। অথচ দেশের হাজার হাজার জ্ঞানতাপস শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার পর গত কয়েক দিন থেকে এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি টিভির টকশোগুলোতেও শিক্ষাবিদরা এ নিয়ে বিতর্ক করছেন। কেউ কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন।
অসৎ ব্যক্তি সব পেশায় রয়েছে। কিন্তু জাতি গঠনে মানুষ গড়ার কারিগর ‘শিক্ষকতা পেশায়’ অসৎ লোক থাকা বাঞ্চনীয় নয়। একসময় স্কুল-কলেজ-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরি ও পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের সাথে কেবল ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী, বিজি প্রেসের কর্মকর্তা এবং সিন্ডিকেট জড়িত ছিল। এমন খবর মানুষ জেনে আসছে। কোটিং সেন্টারের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করতো। কিন্তু এখন এদের সাথে যুক্ত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদেরই একাংশ। নিজের পরিচালিত কোচিং সেন্টার আর স্কুলের রেজাল্ট ভালো (সুনাম বাড়াতে) করার জন্য প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িয়ে পড়ছেন তারা। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন হলে পৌঁছানোর আগেই এদের হাত ধরে ছড়িয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শতভাগ কমনের নিশ্চয়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। প্রশ্ন ফাঁস এবং কোচিং সেন্টার বন্ধে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কঠোর অবস্থানের পরও কাজে আসছে না কোনো কিছুই। এতদিনের প্রশ্ন ফাঁসের মূল উৎস বিজি প্রেসের সিন্ডিকেট ভেঙে নতুন পদ্ধতিও চালু করেছেন তিনি। তবে শিক্ষাব্যবস্থার আস্থার জায়গা শিক্ষকদের মাধ্যমে ফাঁস হওয়ায় হতাশ হয়েছেন মন্ত্রী নিজেও। জড়িত শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কোচিং সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আর শিক্ষকদের এ ধরনের কাজকে কলঙ্ক বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তারা শিক্ষার্থীদেরও নৈতিক অবস্থান ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ ধরনের লোককে শিক্ষকতা পেশা থেকে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয়- মেডিক্যাল ভর্তি, বিসিএস-ব্যাংকসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠছে প্রতিনিয়ত। মাঝে মাঝেই এসব ঘটনার সাথে জড়িত বিভিন্ন সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারও করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে কোচিং সেন্টারের আড়ালে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, মেডিক্যাল কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, বিসিএস, ব্যাংকসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও ঘটনা ঘটেছে। ওইসব ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের হাতে পিএসসি, ব্যাংকের কর্মকর্তা, কোচিং সেন্টারের শিক্ষক, চিকিৎসক, বিজি প্রেসের কর্মচারী, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন। গত কয়েকবছর ধরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে এর মূল উৎস বিজি প্রেসকে চিহ্নিত করে এর সিন্ডিকেটও ভেঙে দেন তিনি। প্রশ্ন ফাঁস রোধে বিজি প্রেসে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার, প্রশ্ন শাখায় মেটাল ডিটেক্টর, পেপার ডিটেক্টর, ভল্ট ডোর, গোপন ক্যামেরা, সিসিটিভি বসানো হয়েছে এবং মুদ্রিত প্রশ্ন সিলগালা করতে স্ট্রংরুম তৈরিও করা হয়েছে। শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম অর্জন করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক প্রতিযোগিতার কারণেও কঠোর সমালোচনা এবং ব্যবস্থা নেন। গতবছর থেকে পাবলিক পরীক্ষায় সেরা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত করার বিষয়টি বাতিল করা হয়। কোচিং সেন্টার ও গাইড বই বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারির পরও কোনো কিছুতেই তা বন্ধ হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রীর চেয়ে প্রভাবশালীদের হাতে এসবের নিয়ন্ত্রণ থাকার কারণে মন্ত্রণালয় অসহায় অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।
শিক্ষামন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরও একের পর এক ফাঁস হচ্ছে প্রশ্নপত্র। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্টরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম বাড়ানোর জন্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করছেন। শিক্ষকদের নেতৃত্বাধীন একটি চক্র জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নেয়ার পথে বা প্রশ্ন ভাগ করার সময় ছবি তুলে তা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষা শুরুর দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে প্রশ্নপত্র। সেই প্রশ্নের সমাধানও হচ্ছে ১০ মিনিটের মধ্যেই। আর অতি অল্প সময়ে সেসব সমাধান নিজেদের লিঙ্ক, ভুয়া ফেসবুক আইডি ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে চক্রের সদস্যরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বলেন, এটি দূর করতে হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে কিছুটা কমবে। এ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে- এমন অভিযোগ পরীক্ষার্থীরা করেন। তবে এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলো খোদ শিক্ষকদের। নিজের পরিচালিত কোচিং সেন্টার এবং প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ভালো করতেই তারা আশ্রয় নেন এমন ঘৃণ্য কাজের। প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত রাজধানীর কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলামের জবানবন্দিতেই ওঠে এসেছে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তাদের পরিচালিত জ্ঞানকোষ নামের একটি কোচিং সেন্টারসহ কয়েকটি কোচিং সেন্টারের নাম। এর সাথে জড়িত থাকায় গত ১ মার্চ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তারা ৫ মার্চ খুরশিদ আলমের আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। তারা জানান, এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত রাজধানীর অন্তত ১১টি স্কুল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো হতো এসব প্রশ্ন। এমনকি কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আবদুুল আলিম এর সাথে জড়িত বলে তারা জানান। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জড়িত ১১টি স্কুলের মধ্যে কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেট্রোপলিটন ক্রিয়েটিভ স্কুল, শহীদ নবী উচ্চ বিদ্যালয়, আন্নাত কিন্ডারগার্টেন, মানিকনগর আইডিয়াল স্কুল, শাহজাহানপুর রেলওয়ে হাইস্কুল, মতিঝিল কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়, মান্ডা স্কুল, মা মনি কিন্ডারগার্টেন, জে এস কিন্ডারগার্টেন। তারা জানান, এই কাজে সহযোগিতা করছেন বিভিন্ন স্কুল ও কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকরা। পরীক্ষার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো প্রশ্নের ছবি মোবাইলে ধারণ করে পাঠিয়ে দেয়া হয় চক্রের সদস্যদের হাতে।
রমরমা ব্যবসা করতে প্রশ্ন ফাঁসের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে- কিছু কোচিং সেন্টার প্রশ্ন ফাঁসের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। নিজেদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে এবং রমরমা বাণিজ্য করতেই তারা এ ধরনের কাজ করছে। এর আগে তারা ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও কুষ্টিয়া জেলায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের আটজনকে গ্রেফতার করে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সাথে যেসব এমপিওভুক্ত শিক্ষক জড়িত তাদের এমপিও বাতিল করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত নয় এমন শিক্ষকদের বরখাস্ত এবং সরকারি চাকরিজীবীদের বিচার বিভাগীয় মামলার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁস সম্ভব নয়। নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে এটি অস্বীকার করা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাব, তদন্ত কমিটির ফলাফল জনসম্মুখে প্রকাশ না করার কারণে এর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ছাপানো ও বিতরণে প্রায় ৪০টি ধাপ রয়েছে। এদের মধ্যে ১৯টি হচ্ছে বিশেষ ধাপ। এগুলোতে প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে সরকারি দলের নেতাকর্মী, কোচিং সেন্টার ও গাইড ব্যবসায়ীরা জড়িত। এদের একটি সিন্ডিকেট সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রশ্ন ফাঁস করে। এ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁস রোধে যেসব আইন আছে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় না। কোচিং সেন্টার ও গাইড বই বন্ধে নীতিমালা থাকলেও এসবের কোনো প্রয়োগ নেই। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চৌর্যবৃত্তি ও ডাকাতি করছে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সন্তানদের সৎ মানুষ হিসেবে গড়তে শিক্ষক-অভিভাবককে সৎ হতে হবে। যেসব স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে আইনে আওতায় আনা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজ কিছু শিক্ষকের হাত ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। এতদিন প্রশ্ন ফাঁসের মূল উৎস ছিল বিজি প্রেস। এক সময় বিজি প্রেসের একটি সিন্ডিকেট প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন সে সিন্ডিকেট ভাঙা হয়েছে। নতুন সেট সিস্টেম চালু করে নিরাপদে জেলায় জেলায় প্রশ্ন পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
বর্তমানে কিছু শিক্ষক এমন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সবচেয়ে আস্থার জায়গা শিক্ষকরা। এদের মধ্যেও কিছু দুর্নীতিবাজ ঢুকে গেছে। এদের হাত ধরেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। যারা প্রশ্ন ফাঁস করছে এবং যে অভিভাবক টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন কিনছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলেও মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।