Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উখিয়ায় কর্মসৃজনের ৩৪ প্রকল্পের কাজ চলছে নামমাত্র

| প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দীপন বিশ্বাস, উখিয়া (কক্সবাজার) থেকে : উখিয়ায় হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতাধীন গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাজে গৃহীত ৩৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে নামেমাত্র। এক কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার ব্যয় বরাদ্দে গত ৪ মার্চ থেকে এ কর্মসূচি মাঠপর্যায়ে শুরু হলেও পালংখালী ইউনিয়নের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের দাবি, জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে এ ইউনিয়নের অনুক‚লে বরাদ্দের টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত রোববার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দফতরে গেলে দেখা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ অনুপস্থিত। তিনি প্রায় সময়ই অনুপস্থিত থাকেন এমনটি জানালেন অনেকেই। মুঠোফোনে তার অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেকনাফে আছেন। অফিস সহকারী মিজানের কাছে কিছু তথ্য চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, কাবিখা প্রকল্পের আওতাধীন উখিয়া থানার গেইট নির্মাণের কাজ চলছে। অথচ থানায় গিয়ে গেট নির্মাণের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। কর্মসৃজন প্রকল্পের তথ্য চাইলে ওই অফিস সহকারী মিজান ইউএনও’র অনুমতি ছাড়া তথ্য দেয়া সম্ভব নয় বলে জানান। পরে ৫ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে যতটুকু তথ্য সংগৃহীত হয়েছে তাতে প্রতীয়মান হয়, এবারের কর্মসৃজনের কাজ চলছে সম্পূর্ণ দায়সারা। কাগজে-কলমে তদারকি কর্মকর্তার নাম থাকলেও তিনি মাঠে নেই। কর্মসৃজন প্রকল্পের যাবতীয় তথ্যাদি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ইতোপূর্বেও উখিয়ার কর্মসৃজন নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির রেকর্ড রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে ৭টি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। রতœাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী জানান, তাকে ১৫০ জন শ্রমিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৪টি প্রকল্প কাগজে-কলমে লেখা থাকলেও এ ইউনিয়নে ৬টি প্রকল্পের কাজ চলছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা জানান, ভিন্ন কথা। তারা বলেন, কর্মসৃজনের শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায় না। তবে শুনেছি অফিসের সব কর্তাই যেন ম্যানেজ আছে। জালিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, গত শনিবার থেকে তার ইউনিয়নে কাজ শুরু হয়েছে। ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৬৮ জন শ্রমিক কাজ করছে। হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম জানান, তার ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও সড়ক নির্মাণসহ ৬টি প্রকল্পের ৩৮০ জন শ্রমিক গত শনিবার থেকে কাজ করছেন। রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, ৩৭০ জন শ্রমিক ৯টি প্রকল্পের কাজ করছেন। তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে শতভাগ কাজ আদায় করার মনমানসিকতা নিয়ে গত শনিবার থেকে শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেছেন। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, তার ইউনিয়নে ৫২৩ জন শ্রমিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে ৪০ দিনের কর্মসৃজনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ইউপি সদস্যরা কাজ করতে আগ্রহী না হলে এ ইউনিয়নে বরাদ্দের টাকা ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি উখিয়া উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা যথাসময়ে হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, জনপ্রতিনিধিরা সময় মতো শ্রমিকদের তালিকা প্রদান করতে না পারায় কাজ আরম্ভ করতে বিলম্ব হয়েছে। পালংখালী ইউনিয়নের কাজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের টাকা নিয়ে মতানৈক্য হওয়ার কারণে তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ