বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে অংশ নেয়া ২১ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ৯৬টি মামলা। কাউন্সিলর পদে এসব প্রার্থীর কারো কারো নামে রয়েছে বিভিন্ন ধারায় সর্বোচ্চ ৩০টি পর্যন্ত মামলা থাকার রেকর্ড। মাত্র তিনটি ওয়ার্ড ছাড়া বাকি ২৪টি ওয়ার্ডে এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া কাউন্সিলরদের অন্তত ২১জন সন্ত্রাস বিরোধী, বিশেষ ক্ষমতা, দ্রæত বিচার, বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদক ও অস্ত্র আইন মামলার আসামী। ওই ২১জন ছাড়াও অনেকেই তাদের নামে থাকা বিভিন্ন মামলায় অব্যাহতি, খালাস পেয়েছেন। নির্বাচনের দায়িত্বে রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেয়া হলফনামায় প্রার্থীরা মামলা সংক্রান্ত ছকে এসব উল্লেখ করেন। কুসিকের ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে এবারে ১৪১ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
কুসিকের বিষ্ণুপুর, ভাটপাড়া এলাকা নিয়ে গঠিত ১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর কাজী গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী, বিশেষ ক্ষমতা, দ্রæত বিচার ও বিস্ফোরক, অস্ত্র আইনে মোট ১৯টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার ১১টি বিচারাধীন, ৩টি স্থগিত, ২টি তদন্তাধীন এবং ৩টিতে তিনি খালাস পেয়েছেন। ছোটরা এলাকা নিয়ে গঠিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মো. বিল্লালের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী, বিশেষ ক্ষমতা, দ্রæত বিচার, আইন-শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ ও বিস্ফোরক আইনে ৩০টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ১২টিতে অব্যাহতি, ৮টিতে খালাস পেয়েছেন। চলমান রয়েছে ১০টি। কালিয়াজুরি শাসনগাছা এলাকা নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদের নামে ১৪টি মামলার সবক’টিতে তিনি খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন। এনামুল হক ভূইয়া আরেক প্রার্থীও তার একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। জাহাননগর, কাপ্তানবাজার ও ইসলামপুর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা আপোষমূলে নিষ্পত্তি হয়েছে। গাংচরের একাংশ, রাজগঞ্জ, মনোহরপুর ও গঙ্গাগঞ্জের একাংশের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর একে সামাদ সাগর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালাস পেয়েছেন। গাংচরের একাংশ, চানপুর, শুভপুর, চকবাজার ও গঙ্গাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী, বিশেষ ক্ষমতা, দ্রæত বিচার ও বিস্ফোরক আইনে ২৫টি মামলা রয়েছে। গোবিন্দপুর ও অশোকতলার একাংশ নিয়ে গঠিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আট প্রার্থীর মধ্যে আতিকুর রহমান খান পিন্টুর নামে ২টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে একটিতে জামিনে আছেন, আরেকটি বিচারাধীন। ওই ওয়ার্ডের মোজাম্মেল আলম নামে আরেক প্রার্থী চার মামলায় খালাস পেয়েছেন। অশোকতলার একাংশ ও দ্বিতীয় কান্দিরপাড়ের একাংশ নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চার প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ একরাম হোসেনের নামে নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস বিরোধী, বিশেষ ক্ষমতা, দ্রæত বিচার ও বিস্ফোরক আইনে ১৫টি মামলা রয়েছে।
মনোহরপুর ও উত্তর চর্থার একাংশ নিয়ে গঠিত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই প্রার্থীর মধ্যে হাবিবুর আল আমিন সাদী তাঁর নামে থাকা দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। বজ্রপুর ও উত্তরচর্থার একাংশের এলাকা নিয়ে গঠিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর মধ্যে কাজী জিয়াউল হক মুন্না এক মামলা থেকে খালাস এবং সফিউল আজম রতন এক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। দক্ষিণ চর্থার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে চার প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর শাখাওয়াত উল্লাহর দুই মামলার একটি বিচারাধীন। আরেকটি থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ নিয়ে গঠিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর সেলিম খান চার মামলায় খালাস পেয়েছেন। বজ্রপুরের একাংশ ও প্রথম মুরাদপুরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চার প্রার্থীর মধ্যে হুমায়ন কবীরের নামে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আরেক প্রার্থী শাহজাহান সিরাজীর একটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। টিক্কাচর ও সংরাইশ এলাকা নিয়ে গঠিত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের নামে একটি এবং জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুলের নামে একটি মামলা চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ ও সুজানগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুই প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর মো. সোহেলের নামে থাকা ৫টি মামলার ৩টিতে খালাস এবং ২টিতে তিনি অব্যাহতি পান। অপরদিকে সাবেক কমিশনার দেলোয়ার হোসেনের নামে সন্ত্রাসবিরোধী, বিস্ফোরক আইন ও অন্যান্য ধারার ৯টি মামলার মধ্যে ৭টি বিচারাধীন রয়েছে এবং ২টিতে খালাস পেয়েছেন। নুরপুর ও দ্বিতীয় মুরাদপুরের একাংশ নিয়ে গঠিত ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কমিশনার আফসান মিয়ার নামে থাকা একটি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। নেউরা, সৈয়দপুর, নোয়াপাড়া, উত্তর রসুলপুর, দক্ষিণ রসুলপুর, রাজাপাড়া এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর জয়নাল আবেদীনের নামে সন্ত্রাস বিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে ৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও ওই ওয়ার্ডে আরেক প্রার্থী জাকির হোসেনের নামে সন্ত্রাস বিরোধী ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৮টি মামলা রয়েছে। আশ্রাফপুর, জাঙ্গালিয়া, রামনগর ও শাকতলার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নয় প্রার্থীর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর কাজী মাহবুবুর রহমানের নামে ১টি মামলা চলমান রয়েছে। আক্তার হোসেন নামে আরেক প্রার্থী দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। উত্তর রামপুর, উত্তর হিরাপুর, মোস্তফাপুর, কচুয়া, দক্ষিণ গোপিনাথপুর, দৈয়ারা, বড় দূর্গাপুর, লক্ষীপুর, শ্রীভল্লবপুর, শ্রীমন্তপুর ও দূর্গাপুর এলাকা নিয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে হাবিবুর রহমান দুই মামলার একটিতে খালাস পেয়েছেন। আর অপরটি বিচারাধীন অবস্থায়। আরেক প্রার্থী আবদুল কাদের মজুমদার বুলু একটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। চাঙ্গিনী, চাঁদপুর, জয়পুর, মনিপুর, মঠপুস্কুরিনী, বাতাবাড়িয়া ও নন্দনপুর নিয়ে গঠিত ২৩নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে মাহবুব আলমের তিন মামলার একটি নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বাকি দুইটি তদন্তাধীন ও শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। উত্তর বাগমারা, দক্ষিণ বাগমারা, ফিরোজপুর, লালমাইয়ের একাংশ, বার্ড, কোটবাড়ী, বিজিবি ক্যাম্প, পলিটেকনিক, রামপুর, সালমানপুর এলাকার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় প্রার্থীর মধ্যে আবদুল কাদের জিলানীর নামে মাদক আইনে একটিসহ মোট ২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। কালিকিংকরপুর, চৌয়ারা, ছোট ধর্মপুর, ডুমুরিয়া, তারাপাইয়া, দয়াপুর ও লক্ষীপুর এলাকা নিয়ে ২৫নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর মধ্যে জিল্লুর রহমান চৌধুরীর নামে ২টি মামলা রয়েছে। কালিকাপুর, গোয়ালমথন, চাংগিনি, ধনপুর, বল্লভপুর, বাউবন্দ, রাজেন্দ্রপুর ও মহেশপুর এলাকা নিয়ে গঠিত ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নয় প্রার্থীর মধ্যে চারজনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা হলেন-গোলাম সারোয়ার কাউসার, আবদুস সাত্তার, কফিল উদ্দিন মজুমদার ও মোবারক হোসেন। উত্তরধনাইতরি, উলুরচর, কমলাপুর, ধনাইতরী, পাঠানকোট, মাটিয়ারা পূর্ব-পশ্চিম, রায়পুর, লক্ষীপুর, সাওড়াতলী, নোয়াগ্রাম নিয়ে গঠিত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় প্রার্থীর মধ্যে আবুল হাসান দ্রæত বিচার আইনের একটিসহ মোট ৩টি মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন।
এদিকে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের হলফনামার আলোকে দেখা গেছে, বাগিচাগাঁও এলাকা নিয়ে গঠিত ৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঝাউতলা, কান্দিরপাড়, বাগিচাওগাঁওয়ের একাংশ নিয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ড ও উনাইসার, কাজীপাড়া, দিশাবন্দ, লক্ষীনগর এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নামে কোন মামলা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।