Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে দুই কোম্পানির বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা : পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে দুই কোম্পানির বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুল্ক গোয়েন্দারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে চুয়াডাঙ্গার মেসার্স কন্টেক কনস্ট্রাকসন্স লি: এবং ঝিনাইদহের প্রি-স্ট্রিস্ট পোল লি: দীর্ঘদিন থেকে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে আসছে। আমদানিকৃত পাথর নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের কথা বলে এই দুই প্রতিষ্ঠান মূল্য সংযোজন কর আইন (মুসক) ৭-এর সুবিধা নিয়ে প্রতি ৫’শ মে: টন ভারতীয় বোল্ডার পাথর ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা শুল্ক কম দিয়ে আমদানী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উক্ত প্রতিষ্ঠান দু’টি আমদানিকৃত এই পাথর নিজেদের ফ্যাক্টরিতে না নিয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আশে পাশে জায়গা ভাড়া নিয়ে স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করছে। এমনকি স্থলবন্দরের ওয়্যার হাউসও ব্যবহার করছেনা। প্রতিষ্ঠান দু’টি মূল্য সংযোজন কর আইনকে তোয়াক্কা না করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগকারীরা ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মূসক ৭-এর সুবিধা বাতিল এবং আমদানি করা বিল অব এন্ট্রির উপর ডিমান্ড নোটিশ ইস্যু করে ইতোমধ্যে মূসক ৭ এর আওতায় আমদানি কৃত পণ্যের উপর সরকারি রাজস্ব আদায়ের দাবি জানিয়েছেন। গত ৭ ফেব্রয়ারি করা আবেদনে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেছেন এ দুই প্রতিষ্ঠানের মূসক ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় বাজারে পাথর বিক্রির ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি তফিজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন-মূল্য সংযোজন কর আইনের ৭-এ বলা আছে কোনো প্রতিষ্ঠান কাঁচামাল হিসেবে আমদানিকৃত পণ্য নিজেদের উৎপাদনে ব্যবহার করলে কর মওকুফের সুবিধা পেতে পারে। কিন্তু উল্লেখিত দুটি প্রতিষ্ঠান শুল্ক মওকুফের সুবিধা নিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে নিজেদের কাজে ব্যবহার না করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছে। এটি শুল্ক ফাঁকির অপরাধের মধ্যেই পরে। তিনি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এদিকে মেসার্স কন্টেক কনস্ট্রাকসন্স লি: (গ/ং ঈড়হঃবপয ঈড়হংঃৎঁপঃরড়হ খঃফ.) এর পক্ষে সিএন্ডএফ এজেন্ট জাহাঙ্গীর আলম প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগে মুসক ৭-এর প্রয়োজনীয় শর্তাদি পালন করে সুবিধা গ্রহণ করেছি। বর্তমানে মুসক ৭-এর শর্তাদি পালন করেও এর সুবিধা গ্রহণ করছি না। সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে এবং প্রয়োজনীয় শুল্ক পরিশোধ করেই পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। প্রি-স্ট্রিস্ট পোল লি: (গ/ং চৎব-ঝঃৎবংংবফ চড়ষব খঃফ.) এর প্রতিনিধি মশিউল আযম ইমন জানান, অভিযোগ সত্যি নয়। যেহেতু আমাদের ভাঙ্গা পাথর দরকার তাই ভারত থেকে পাথর আমদানি করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেও স্টোন ক্রাসার মেশিনে ভাঙ্গিয়ে আমরা ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাচ্ছি। স্বার্থহানি ঘটছে বলে ব্যবসায়ীদের অন্য একটি দল এই অভিযোগ করেছে। অভিযোগকারীরা আরও জানান যে, বিষয়টির প্রতি অনেকবার অভিযোগ করার সত্তে¡ও কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টির অনেক তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। তবে আরও একটু তদন্তের প্রয়োজন আছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা রওনাকুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ সত্য হলে উক্ত দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সচেতন সমাজ মনে করছে এসব অনিয়ম বার বার হচ্ছে কিন্তু তদন্তের পরও বন্ধ হচ্ছে না। কারণ অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ