Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নীরব প্রশাসন : বিশেষ নিরাপত্তায় জুয়া চলছে বগুড়ার শাজাহানপুরে

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে ঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে কড়া নিরাপত্তায় চলছে মাদক ও জুয়ার রমরমা আসর। কেটি প্রভাবশালী গোষ্ঠি দীর্ঘদিন যাবত জুয়া ও মাদক ব্যবসা নির্বিঘেœ পরিচালনা করায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সচেতন মহল। এ বিষয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাজাহানপুরের নয় মাইল লোহার ব্রিজ তালতলা এলাকায় এক ইউপি মেম্বারের পরিচালনায় হিটলু ও শিলুর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ও জুয়ার আসর বসানো হয়েছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই ইউপি সদস্যসহ কয়েক প্রভাবশালী হিটলু ও শিলুর নেতৃত্বে নির্বিঘেœ  সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলছে রমরমা জুয়ার আসর। এলাকাবাসি ও প্রত্যক্ষদশীরা জানায়, জুয়াড়িরা প্রতিদিন বগুড়া ও বগুড়ার বাহির থেকে মোটর সাইকেল ও সিএনজি যোগে শাজাহানপুরের নয় মাইল  লোহার ব্রিজ তালতলা এলাকায়  মাদক জুয়ার আসরে পৌঁছায়। এদিকে কতিপয় স্থানীয় জুয়াড়– জুয়ার টাকা জোগাড় করতে চুরি ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এলাকায় বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। ওই চক্র জুয়ার আসর বসিয়ে সাধারন মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ  টাকা। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, হিটলু –শিলুর নেতৃত্বে রয়েছে ৫/৬ জন নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের কাজ শাজাহানপুরের নয় মাইল থেকে পূর্ব দিকে কিছু রাস্তা আসার পর লোহার ব্রিজ-এর পাশের চায়ের দোকান ডানে মাটির রাস্তায় প্রায় দুইশ’ গজ আসার পর তালতলা পর্যন্ত উপরোক্ত ৬ জন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। নয় মাইল থেকে জুয়া ও মাদকের আসর পর্যন্ত (তালতলা) পৌছার আগেই কোন অপরিচিত বা প্রশাসনের লোক মনে হলেই  হিটলু-শিলু  বাহিনীর লোক জুয়ার আসর পরিচালককে  সর্তক করে দেয়।
তবে প্রশাসন রয়েছে নিরব থাকায় হিটলু-শিলু রয়েছে অধরা। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে সচেতন মহল। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একাধিক  সুত্র জানায়, থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশসহ সংশ্লিস্টদের ম্যানেজ করেই হিটলু- শিলু  দির্ঘদিন যাবত মাদক ও জুয়া চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি বগুড়া জেলা যুবলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক , সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে শহরের সাতমাথাসহ বিভিন্ন স্থানে সভা সমবেশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।এর পরেও কতিপয় অসাধু  পুলিশের সহযোগিতায় শাজাহানপুরে প্রকাশ্য মাদক ও জুয়া চলছে। ওই এলাকার আব্দুর রহমান, মজিবর রহমান ও মুজাম শেখ ও বুলু মিয়া বলেন, ওই জুয়ার আসরে জুয়া খেলতে এসে এক শ্রেণীর দাদন ব্যবসায়ীর কাছে মোটর সাইকেল, সোনার গহনা ও ব্যাংকের চেক বন্ধক রেখে উচ্চ সুদে টাকা নিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে এলাকায় গরু চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেউ কেউ বউয়ের গহনা, মটরসাইকেল ও দামী আসবাবপত্র বন্ধক রেখেও জুয়া খেলে সর্বশান্ত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক  জানান, তার ছেলে জুয়া খেলতে খেলতে সর্বশান্ত হয়েছে। বউয়ের গহনা পর্যন্ত বিক্রি করে জুয়া খেলেছে। একটা মটরসাইকেল ছিল সেটাও বন্ধক রেখেছে। তিনি বলেন, এই জুয়ার আসর বন্ধ না হলে অনেক পরিবারই সর্বশান্ত হয়ে যাবে। জুয়া আসর বন্ধ করতে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে জানান তিনি। তবে ইউপি মেম্বার, হিটলু ও শিলুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ চৌধরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে মাদক ও জুয়ার আসর হয় না। তার পরেও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ প্রসঙ্গে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী বলেন, জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ