পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : আয়ুষ্কাল ছিল ১৫ বছর। কিন্তু পাঁচ বছর যেতে না যেতেই সব বিকল হয়ে পড়ে। এরপর সেগুলো মেরামত করতে ব্যয় করা হয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। তারপরেও সচল করা যায়নি বিআরটিসির ৪৯টি ভলভো বাস। এখন নতুন করে মেরামতের জন্য আরো ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। খোদ বিআরটিসির কর্মকর্তারাই মনে করেন, এতদিন বিকল হয়ে পড়ে থাকার পর এই বাসগুলো পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব নয়। কোনোমতে বাসগুলো চালু করা গেলেও তা টেকসই হবে না। এতে করে পুরো টাকাটাই অপচয় হবে। বহুমুখী গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ভলভোর মতো উন্নতমানের বাস মেরামতের মতো ওয়ার্কশপ ও পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা নেই বিআরটিসির। একসঙ্গে ৫০টি ভলভো কিনে তাই এমনিতেই বেশি টাকা নষ্ট করা হয়েছে। মেরামতেও যাচ্ছে আরো অনেক টাকা। আগামীতে এই খাতে আরো টাকা ব্যয় করা সমীচীন হবে না।
রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০০৪ সালে কেনা হয় ৫০টি দ্বিতল ভলভো বাস। সুইডিশ সরকারের অর্ধেক অনুদান ও অর্ধেক ঋণে বাসগুলো কেনায় ব্যয় হয় প্রায় ৫২ কোটি টাকা। প্রতিটি বাসের মূল্য ধরা হয়েছিল এক কোটি তিন লাখ টাকা। কেনার সময় বাসগুলোর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছিল ১৫ বছর। কিন্তু পাঁচ বছর যেতে না যেতেই একে একে সব বিকল হয়ে পড়ে। সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে বাসগুলো মেরামতে বিভিন্ন সরঞ্জাম আনা হয়েছিল ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার। চার বছরের মাথায় ১৭টি বাস অচল হয়ে পড়ে। আর ২০০৯ সালে অকেজো বাসের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪-এ। বাকিগুলো দেড় বছরের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে। বহুদিন ধরে ৪৯টি বাস অচল হয়ে পড়ে আছে। এর মধ্যে বিআরটিসির মিরপুর ডিপোতে ২৭টি ও কল্যানপুর ডিপোতে ২২টি বাস পড়ে আছে। সচল আছে মাত্র একটি বাসÑ যা মিরপুর থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত চলাচল করে।
বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে সরকারি তহবিল ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (সিডা) অর্থায়নে ৫০টি ভলভো বাস কেনা হয়। সে সময় বাসগুলো ছিল একেবারে অত্যাধুনিক এবং বিলাসবহুল। প্রতিটি বাসের আসন সংখ্যা ১২০টি। বিশাল আকৃতির বাসগুলোতে আসন ছাড়াও অতিরিক্ত ৪০ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারে। একেকটি বাস পাঁচটি মিনিবাসের সমান যাত্রী বহন করতে সক্ষম।
সূত্র জানায়, প্রতিটি ভলভো বাস বছরে সাত লাখ ২০ হাজার যাত্রী পরিবহন ও ছয় হাজার কিলোমিটার চালানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সে সময় একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোটামুটি ভালো থাকলেও প্রতিটি বাসে বছরে তিন লাখ ১৪ হাজার ৮০০ যাত্রী পরিবহন করা হয়। সে হিসাবে বছরে গড়ে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটারই চলেছে বাসগুলো। এরপর পর্যায়ক্রমে বাসগুলো বিকল হতে থাকে। বিগত সাত-আট বছর ধরে বাসগুলো বিআরটিসির ডিপোতে অযতœ আর অবহেলায় পড়ে আছে। বাসগুলোর নিচের অংশে লতাপাতা ও আগাছা এবং ওপরের অংশ বৃক্ষরাজিতে ছেয়ে গেছে। এর মধ্যে খুচরা যন্ত্রাশ চুরিও হয়ে গেছে। টায়ার-টিউবসহ বাসগুলোর বডির অবস্থা খুবই খারাপ। বিআরটিসির কর্মচারীরা মনে করেন, এতদিন পড়ে থাকার পর এগুলো আর মেরামত করার মতো অবস্থায় নেই। যদি করাও হয়, তবে সেগুলো রাস্তায় খুব বেশিদিন চলতে পারবে না। সূত্র জানায়, বাসগুলো মেরামতের জন্য এ পর্যন্ত ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল বিআরটিসি। সেই টাকারও সদ্ব্যহার করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, মেরামতের টাকাও লুটপাট হয়েছে। নষ্ট হওয়া যন্ত্রাংশ সময়মতো লাগানো হয়নি।
বিআরটিসি সূত্র জানায়, সাত-আট বছর ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা ভলভো বাস মেরামতের জন্য ‘বিআরটিসির ৫০টি ভলভো দ্বিতল বাস মেরামত’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সে হিসাবে প্রতিটি এক কোটি তিন লাখ টাকা মূল্যের বাস মেরামতে ব্যয় ধরা হচ্ছে ৭৪ লাখ টাকা করে। দীর্ঘদিন পর এত টাকা খরচ করে কি ফল পাওয়া যাবে তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় আছে। বিআরটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, বাসগুলো মেরামত করা সম্ভব। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে কয়েক লাখ টাকার যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে মেরামত করলে কোটি টাকা মূল্যের পরিবহন হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।