পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার : টহলরত পুলিশের ধাওয়ায় মোটরসাইকেল আরোহী এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ লোকজন টহলের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে কুমিল্লা কোতয়ালী থানাধীন বালুতুপা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক আবু তাহের কুমিল্লা সদরের সীমান্ত এলাকা শাহপুরের আবুল কাশেমের ছেলে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ পুলিশের একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয় এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার তিন পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করে কোতয়ালী পুলিশে সোপর্দ করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ ওই যুবককে মেরে ধানক্ষেতে লাশ গুমের চেষ্টা করছিল।
ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের একটি মাইক্রোবাস টহল কাজে নিয়োজিত থাকাবস্থায় ওই মোটরসাইকেল আরোহীকে ধাওয়া করে। কোতয়ালী থানা এলাকার চাপাপুর এতিমখানা মোড়ে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয় পুলিশের মাইক্রোবাস। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক রাস্তার পাশে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর টহল পুলিশের মাইক্রোবাসটিও রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায়। পুলিশ গাড়ি তোলার জন্য ফোনে র্যাকার আসতে বলে। পরে পুলিশের তিন সদস্য রাস্তার পাশে পড়ে থাকা যুবকের লাশ ধানক্ষেতের দিকে নিয়ে যায়। ঘটনাটি এলাকার কিছু লোক দেখতে পেয়ে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে সাধারণ লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে।
এসময় পুলিশের একজন এএসআই ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে চলে যাবার বিষয়টি এলাকার লোকজন টের পেলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তখন হৈচৈ শুরু হলে পুলিশের তিন সদস্য এলাকার লোকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যেতে বলে। এরিমধ্যে র্যাকার এসে পুলিশের মাইক্রোবাসটি রাস্তার উপর তোলার পর পুলিশ সদস্যরা ধানক্ষেতে যুবকের লাশ রেখে গাড়িতে উঠার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা পুলিশের তিন সদস্যকে আটকে রাখে এবং একপর্যায়ে মাইক্রোবাসে আগুন দেয়। খবর পেয়ে প্রথমে কোতয়ালী পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। এসময় ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে একটি ইউনিট এসে গাড়ীতে দেয়া আগুন নেভায়। পরে ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, তানভীর সালেহীন ইমন, পিআইবি পুলিশ ও র্যাব-১১ এর একটি টিম। এছাড়াও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হোন। তাদের সম্মিলিত চেষ্টায় বিক্ষুব্ধ লোকজনকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে সদর দক্ষিণ থানার তিন পুলিশ কনস্টেবল মিজান, খোরশেদ, কালামকে কোতয়ালী পুলিশে সোপর্দ করার পর তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং ধানক্ষেত থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে সদর দক্ষিণ থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ‘থানার এএসআই জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের এই টিম ল²ীপুর এলাকায় ওয়ারেন্টের আসামী ধরার জন্য রাতে অভিযানে বের হয়েছিল। অভিযান শেষে ভোরে থানায় ফেরার পথে গাড়ী চালক তন্দ্রাভাবের জন্য মোটর সাইকেলটিকে দেখতে পায়নি। ফলে পুলিশের মাইক্রোবাসের সাথে সংঘর্ষেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এএসআই জহিরুল সামান্য আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থল থেকেই হাসপাতালে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। আর পুলিশের অন্য সদস্যরা র্যাকার এনে গাড়িটি উদ্ধার করে আনার জন্য সেখানে অপেক্ষায় থাকে। এক পর্যায়ে সকাল হয়ে ওঠলে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভিড় করে এবং ঘটনার বিষয়ে সঠিক কিছু না জেনেই মাইক্রোবাসে আগুন দেয়।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন পুলিশ ওই যুবকের লাশ একটি ধানক্ষেতে গুম করার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরেই লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে তিন পুলিশকে আটকে রাখে এবং পুলিশ হুমকি দেয়ায় তারা মাইক্রোবাসে আগুন দেয়। মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ওই যুবক মারা গেলে লাশ তো রাস্তার পাশে পড়ে থাকবে। পুলিশ যুবকের লাশ ধানক্ষেতে নিয়ে যাবে কেনো ?
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশের ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এঘটনায় কোন পুলিশ দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তাদের কঠিন বিচার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।