Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদীতে বাঁধ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ নৌ চলাচল বন্ধ, জনমনে বাড়ছে ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : সিরাজগঞ্জ জেলার মৎস্য ও শষ্য ভান্ডার নামে খ্যাত তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের করতোয় নদীতে আড়াআড়ি বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছে ছাত্রলীগ নেতারা। শুষ্ক মৌসুমে আবার গভীর খাদ করে মাটি কেটে বিক্রিও করা হচ্ছে। নদীতে কাউকে নামতে না দেয়ায় এবং নদীগুলোতে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফুঁসে ওঠেছে এলাকাবাসী। তাদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। তাড়াশ উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার নওগাঁ বাজার সেতু থেকে পূর্ব দিকে আনুমানিক ২কি.মি. করতোয়া শাখা নদী দখল করা হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মামুন মিয়ার নেতৃত্বে এ মাছ চাষ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, নওগাঁ বাজার সংলগ্ন সেতু ও চানপুরে দুটি স্থানে নদীতে আড়াআড়ি বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। বাঁশের সাথে সূক্ষ¥ জাল বেঁধে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাছের খাবার দেয়ার জন্য ছোট ডিঙি নৌকা রাখা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নওগাঁ হাটটি জেলার সবচেয়ে বৃহৎ হাট হিসেবে পরিচিত। নদীতে বেড়া দেয়ায় নৌপথে মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছে না। এ অন্যায় কাজে জড়িতরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, ‘জাল যার জলা তার’ এমন সরকারি নিয়ম থাকলেও আমরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারছি না। অথচ এ নদী থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এ অবস্থায় ওই নদী থেকে মাছ শিকার করতে গেলে মারধর করা হয়। দখলদারদের অত্যাচারে অনেক মৎস্যজীবী পেশা পাল্টে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। নওগাঁ গ্রামের আব্দুল মালেক জানান, নদী দখলদাররা কাউকে নদীতে নামতে দিচ্ছে না। এছাড়া, তারা প্রতিবছর শুষ্ক মৌসমে লাখ লাখ টাকার বালু মাটি বিক্রি করে। গত ৭ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক লিখিত অভিযোগ করা হলেও এখনও তার কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, ইজারা দেয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। নদী দখলদার আশরাফুল বলেন- স্থানীয়ভাবে ইজারা নিয়ে আমরা নদীতে মাছ চাষ করে আসছি। বর্তমানে নদীটি মরা নদীতে পরিণত হওয়ায় এভাবে মাছ চাষ করছি। এখানে কাউকে গোসল করতে নিষেধ করা হয়নি। তবে, এ বছর মাছ চাষ বন্ধে জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আগামী বছর থেকে মাছ চাষে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিলুর রহমান খান বলেন, নদী ইজারা দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে। দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ