রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মো. আশরাফুল আলম, বাকৃবি থেকে : পানির অপর নাম জীবন। আবার পানির কারণেই ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রতিবছর ১৮ কোটি মানুষ মারা যায় পানিবাহিত রোগের কারণে। বাংলাদেশের মতো ৩য় বিশ্বের দেশগুলোর মানুষরাই সবচেয়ে বেশি পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। শুধু তাই নয়, মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েও বছরে ১০ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। ২০১৫ সালে শুধু ম্যালেরিয়াতেই মারা গেছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। আর একমাত্র ডেঙ্গুর ঝুঁকিতেই রয়েছে বিশ্বের ১০০টি দেশের প্রায় ২৫০ কোটি মানুষ যার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। পানি বিশোধন ও মশক নিধনের জন্য জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না কৃষি শিক্ষার সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে। পানি বিশোধন কোনো প্ল্যান্ট না থাকায় সাপ্লাইয়ের পানিই ব্যবহার করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের। অন্যদিকে মশার প্রকোপ বাড়লেও নেয়া হয় না কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বা দমন পদ্ধতি। সম্প্রতি বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ টানা ৩-৪ দিন আবাসিক হলে পানি না থাকায় এবং ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। সঠিকভাবে পানি সরবরাহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রোক্টর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও করে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শীত যেতে না যেতেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়াবহ রোগের আশংকায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের কাছে স্থাপিত পাম্পের সমস্যার কারণেই মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে পানির সংকট দেখা দেয়। তবে শহীদ নাজমুল আহসান হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিনিয়তই ওই হলে পানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দুই একদিন পরপরই দুপুরের পর পানি থাকে না। সন্ধ্যার দিকে পানি আসলেও তা ময়লাযুক্ত থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। বারবার অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী লেকে গিয়ে গোসল করতে হয়েছে তাদেরকে। একই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশা খাঁ হলের শিক্ষার্থীদের। তারা জানায়, হলে পানি সরবরাহের সমস্যা চলছে গত ২ মাস ধরে। তবে গত ৩ দিন ধরে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বাথরুমে পানি না থাকায় ঈশা খাঁ লেকের ময়লা পানিতে গোসল করতে হচ্ছে। সঠিকভাবে পানি সরবরাহের জন্য গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রোক্টর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও করে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানান ঈশা খাঁ হলের হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহীন ইসলাম খান বলেন, পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ার কারণে মূলত এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে। আপাতত অন্যান্য পাম্প বন্ধ রেখে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন পানি সরবরাহ ও পানিতে ময়লা আসছে না। বুধবার আরডিএ থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে নতুনভাবে বোরিং করে অন্য একটি মেশিন স্থাপন করা হবে। এদিকে পানির সমস্যার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশার উপদ্রব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলগুলোর চারপাশের অতিরিক্ত আগাছা, ঝোপ-ঝাঁড়, ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা এবং নিয়মিত মশানাশক স্প্রে না করায় আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশার উপদ্রব। যেকোনো মুহূর্তে দেখা দিতে পারে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ প্রাণঘাতী রোগের প্রাদুর্ভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শিক্ষার্থী আবীর হোসেন বলেন, বাকৃবিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে দু’এক বছর দেখেছি হলের আশেপাশে স্প্রে করা হতো। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে স্প্রে করার দৃশ্য চোখেই পড়েনি। গরম কাল না আসতেই যে হারে মশার প্রকোপ বাড়ছে তাতে যেকোনো সময় ভয়াবহ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। এদিকে মশা দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীদের নানা ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। হেলথ কেয়ার সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়েজ আহমেদ বলেন, মশা দমনে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, এলার্জিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। হলের আশে পাশে স্প্রে করার বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহŸায়ক অধ্যাপক ড.মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, মশা দমনের দায়িত্ব স্বাস্থ্য প্রতিষেধক শাখার। তবে দ্রæত এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। স্বাস্থ্য প্রতিষেধক শাখার প্রধান ডা. শাহাদৎ হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। হেলথ কেয়ার সেন্টারে দেখা করতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।