Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

শত শত বিঘা জমির ফসল নষ্ট, ক্ষতিপূরণ দাবি

পেট্রোকেমের বিষে কৃষকের সর্বনাশ

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা : পেট্রোকেম কোম্পানির ডুপোন্ট অ্যালমিক্স ২০ ডবিøউপি নামে বিষ ব্যবহার করে ঠাকুরগাঁওয়ে শত শত বিঘা জমির ধান গাছ নষ্ট হতে বসেছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষকের ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে তারা। আর পেট্রোকেম কর্তৃপক্ষ বলছেন, কৃষকের ধান গাছ সতেজ করতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জমিতে বিষ ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কায় ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের খোচাবাড়ী এলাকার, নাগেশ্বরবাড়ি, ডাঙ্গাপাড়া, চৌটাকিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩শ কৃষক এখন হতাশায় ভুগছেন। কেউবা নিজ জমিতে, কেউবা পরের জমি বড়গা নিয়ে ধান চাষ করেছেন। চারা রোপণের পর পরই পেট্রোকেম কোম্পানির আগাছা নাশক ডুপোন্ট অ্যালমিক্স ২০ ডবিøউপি নামে বিষ ব্যবহার করে বিপদে পরেছেন ওই এলাকার কৃষক। বিষ ব্যবহারের পর ধানের চারা সতেজ না হয়ে তা নষ্ট হতে বসেছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার অনেক কৃষকের ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়া হতাশায় ভুগছেন। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বিষ ক্রয়কৃত দোকান ঘেড়াও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। বিক্ষোভে কৃষকরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানালে কোম্পানি কর্তৃক ১৫ সদস্য বিশিষ্ট্য একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করে ধান গাছ সতেজে কৃষকদের বিনামূল্যে বেশ কিছু ওষুধ দেয়ার নির্দেশ দেয় ওই কোম্পানি। এরপর দফায় দফায় ওই এলাকায় কৃষি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ উদ্ভিদ বিজ্ঞানিরা মাঠ পরিদর্শন করেন। নাগেশ্বরবাড়ি, ডাঙ্গাপাড়া, চৌটাকিপাড়ার রবিন, চৈতুরাম, মজিবর রহমান শেখ, অনন্ত্যসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা কান্নায় ভেঙে পরে সাংবাদিকদের জানান, আমরা এক বিঘা মাটি ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বড়গা নিয়েছি। আমাদের ধান না হলে কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবো। বিষ বিক্রেতার পরামর্শ নিয়ে ধান ভাল হবে এই আশায় জমিতে বিশ দিয়েছি। কিন্তু জমি গাছ এখন মরে যাচ্ছে আমরা মাঠে মারা যাবো। আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই। আর খোচাবাড়ি বাজারের খুচরা সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন জানান, আমরা ডিলারের কাছ থেকে বিষ নিয়ে কৃষকদের দিয়েছি। তা ব্যবহার করে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা ডিলারকে জানালে তারা নতুন করে কৃষকদের বিনামূল্যে বেশ কিছু ওষুধ দিয়ে পরামর্শ প্রদান করেন। আর লাহিড়ী বাজারে অবস্থিত জয়েন্ট টেড্রাসের স্বত্বাধিকারী পেট্রোকেম কোম্পানির ডিলার আলমগীর হোসেন জানান, মাটির গুণাগুণের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবুও আমি বিষয়টি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে ধান গাছ সতেজে কিছু ওষুধ বিনামূল্যে কৃষককে দিচ্ছেন। তারপরও যদি কৃষক ক্ষতির শিকার হয় ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বালিয়াডাঙ্গী লাহিড়ী চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রধান দীলিপ কুমার চ্যার্টাজি কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে থাকবেন তারা আশ্বস্ত করেছেন। মাঠ পর্যায়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানালেন এই চেয়ারম্যান। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রধান উপ-পরিচালক কেএম মাউদুদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আমরা দেখবো আরো কিছুদিন ধান গাছ সতেজ হচ্ছে কিনা। না হলে প্রয়োজনে কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে কৃষকে দেয়া হবে। এই ঘটনার পর কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে সরিয়ে নিয়েছে অ্যালমিক্স নামক বিষটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ