রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : ফাল্গুন মাসের শান্ত-স্নিগ্ধ যমুনা নদী হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহে ভাঙনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে খাসরাজবাড়ী ও যুক্তিগাছা গ্রাম নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কর্র্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। খাসরাজবাড়ী ও মাইজবাড়ী ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীরে গিয়ে দেখা গেছে, নিজের জমিতে লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা বাড়ন্ত গমক্ষেতের অপ্রাপ্ত গাছগুলো কাটছেন নতুন মাইজবাড়ী গ্রামের কৃষক ফজলুল হক। গমগাছ নয়, যেন নিজের ভাগ্যকেই কাঁচি দিয়ে কাটাছিলেন মধ্যবয়সী এই কৃষক। পৌষের শীতে ঘামে নয়, তার চোখ দুটো ছলছল করছিল। এই চিত্র এখন এই অঞ্চলের প্রায় দশটি গ্রামের কয়েক তিন-চার বছর আগে ঢেকুরিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান এসে আশ্রয় নিয়েছেন মল্লিকপাড়া ও যুক্তিগাছা চরে। এ নিয়ে পাঁচবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছেন তিনি। এক সময় পৈতৃক বসতবাড়ী আর কিছু জমি থাকলেও এখন তিনি উদ্বাস্ত। তার ভাগ্যকে যেন গ্রাস করেছে যমুনা। খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী ও মাইজবাড়ী ইউপি সদস্য মোকলেছুর রহমান জানান, শুষ্ক মৌসুমে যমুনা নদীর এমন তাগুব এলাকাবাসী আগে কখনো দেখেনি। দুর্গত মানুষের আহাজারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সরকারি দপ্তরে পৌঁছাচ্ছেনা। কর্তৃপক্ষ ধরেই নিয়েছে, বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য সময় নদী ভাঙে না। তিনি আরো জানান, এই অঞ্চলের পূর্বদিকে যমুনার মাঝখানে বিশাল চর জেগে ওঠায় ভাঙনের তীব্রতা এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নতুন মাইজবাড়ী হবিবার রহমান জানান, এলাকার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড হয়তো আবারও নতুন করে রিং তৈরি করবে। এ জন্য কোটি টাকাও বরাদ্দ দেয়া হবে। অথচ আমরা কৃষকরা দিন দিন আরো নিঃস্ব হবে। তিনি আক্ষেপ করে জানন, বাঁধে আশ্রিত এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যারা এক সময় বিঘা বিঘা জমির মালিক ছিল। অথচ এখন তারা অন্যের জমিতে মজুরি খেটে সংসার চালাচ্ছে। টাকার অভাবে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছে না। তিনি বলেন, নদী ভাঙন রোধে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজে শত কোটি টাকা খচর করা হলেও যমুনা নদীর পশ্চিম দিকের আগ্রাসন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণ করার পর আবারও পশ্চিমপাড়ের ফসলি জমি আর জনপদ গ্রাস করবে যমুনা। ভাঙন রোধের নামে এক শ্রেণির ঠিকাদার আর কিছু অসাধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী বিস্তর টাকার মালিক হবে। তবে আমার মতো ভাঙনকবলিত নিঃস্ব মানুষগুলোর হাহাকার থেকেই যাবে। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, যমুনা নদীর ভাঙন রক্ষায় সিরাজগঞ্জ থেকে কাজিপুর পর্যন্ত ১৬টি প্যাকেজ প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭টি প্যাকেজের কাজ শেষ পর্যায়ে। অর্থ বরাদ্দ হলে বাকি ৯টি প্যাকেজের কাজ শুরু হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।