Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নৈশ প্রহরী কাম পিয়ন নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

সাতক্ষীরায় ৪৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী কাম পিয়ন নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ৪৫ জন চাকরি প্রার্থীকে ইতোমধ্যে নিয়োগ চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিয়োগে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী কাম পিয়ন নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহŸান করা হয়। ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ পদের বিপরীতে ২৫০টি আবেদন পড়ে। কুখরালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর বালক, রসুলপুর বালিকা, রইচপুর, ঘোসপাড়া, কামলনগর, বাটকেখালি, পৌর মাছখোলা, মুন্সিপাড়া, বদ্দীপুর, মিয়া সাহেবডাঙ্গী, রাজার বাগান শান্তি নিকেতন, ইসলামিয়া, বাজুয়াডাঙ্গা, দাশপাড়া, কাঠিয়া সরকারপাড়া, শিকড়ি, ঘোনা, গোদাঘাটা, খানপুর, শিয়ালডাঙ্গা, পদ্দশাখরা, মাহমুদপুর, বড়দল, চুপড়িয়া, বলাডাঙ্গা, ছাতিয়ানতলা, রঘুনাথপুর, এগারআনি, আখড়াখোলা, ছয়ঘরিয়া, ধলবাড়িয়া, সাতানি, ফয়জুল্লাহপুর, পল্লীসুলতানপুর, উত্তর তলুইগাছা, গড়িয়াডাঙ্গা, নবাতকাঠি, আড়–য়াখালি, দৌলতপুর পারকুখরালি, রাজারবাগান ও দামারপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপরোক্ত ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৫টির নিয়োগ ইতোমধ্যে প্রায় চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ৪৯ জন নৈশ প্রহরী নিয়োগে আওয়ামী লীগ নেতা, শিক্ষক নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ কয়েক জনের মধ্যে প্রার্থী ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে। ভাগে পাওয়া প্রার্থীর নিকট থেকে স্ব-স্ব ব্যক্তি জনপ্রতি ৫ থেকে ৬ লাখ করে টাকা নিয়েছেন। আবার কোন কোনো নেতা একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৪৯ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। সরকার সমর্থক অনেক নেতাকর্মীর ছেলেরা আবেদন করেছেন। তারা টাকাও দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে টাকা নিলে ফাঁস হতে পারে এ জন্য তাদের ছেলেদের চাকরি না দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ছেলেদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়নের চুপড়িয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে দল করে আসছি। তার ছেলে একই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী পদে আবেদন করেছেন। কিন্তু তার ছেলেকে চাকরি না দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে ইন্দিরাা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা রেজাউল ইসলামের ভাইপোকে। পরীক্ষার বোর্ড করা হয়েছে পাতানো। পেনসিল দিয়ে নাম্বার লিখে পরে তা তুলে দিয়ে যারা টাকা দিয়েছে তাদের নাম প্রথম করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর আবেদন করবেন। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন রাজনগর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাঈদ আলি। তিনি জানান, তার গ্রামের হাসানুজ্জামান নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হচেছ। তার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সে জামায়াত-শিবির করে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নিয়োগ বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ জানান, নিয়ম মেনে নিয়োগ বোর্ড করা হয়েছে। বাইরে থেকে কেউ টাকা নিলে সেটি তার দেখার বিষয় নয়। কেউ লেনদের সাথে জড়িত নয়। বাইরে থেকে কেউ লেনদেন করলে সেটি তার দেখার বিষয় নয়। নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহম্মেদ সজল জানান, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। বোর্ডের সকল সদস্য সমান নাম্বার দিতে পারবেন। পরীক্ষায় যে বেশি নাম্বার পেয়েছে তাকে চ‚ড়ান্ত করা হেয়েছে। আগে থাকতে কেউ টাকা দিলে তার দায়িত্ব বোর্ডের সদস্যদের নয়। নিয়ম মেনে দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করা হয়েছে। এরপরও কেউ লিখিতভাবে প্রমাণসহ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ