পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের সাথে সম্ভাব্য সামরিক চুক্তির বিষয়ে দেশবাসীকে জানাতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার : ‘সহায়ক সরকার সংবিধানে নেই’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংবিধানা তো কোনো ধর্মগ্রন্থ না; যে সেটা সংশোধন করা যাবে না। দেশের জন্য প্রয়োজন হলে মানুষই তা তৈরি করে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সামরিক চুক্তির বিষয়ে জনগণকে জানানোর দাবি জানান তিনি বলেন, জঙ্গি নামে দেশে ড্রামা হচ্ছে। সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, জঙ্গিবাদ তৈরি করেছেন, কী ভয়াবহ পরিণতি জঙ্গিবাদের। সাংবাদিকভাইরা অনেকে জানেন, আমেরিকা তিনটি দেশকে চিহ্নিত করেছে, এটার মধ্যে হচ্ছে-পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে ভিসা সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। আমাদের যারা কাজ করতে যান সিঙ্গাপুরে, তাদের অনেককে ফেরত আসতে হচ্ছে। কেনো?
তাদের (বিদেশী) যে লক্ষ্য ছিলো যে, বাংলাদেশকে জঙ্গি স্টেট হিসেবে চিহ্নিত করা, সেটা আমাদের সদাশয় সরকারের অতি দক্ষতার কারণে গোটা পৃথিবীতে এই ধারণা দেয়া হচ্ছে যে- বাংলাদেশ একটা জঙ্গি রাষ্ট্রের পরিণত হচ্ছে। সুনির্দিষ্টভাবে আপনারা (সরকার) এগুলো তদন্ত করছেন না। যাদেরকে ধরছেন জঙ্গি হিসেবে, গত কয়েকদিন ধরে আবার নতুন একটা ড্রামা শুরু হয়েছে, খেয়াল করছেন কিনা জানি না।
প্রথম ড্রামাটা হলো টঙ্গিতে। জানি না আসল ব্যাপারটা কী? সাংবাদিক ভাইরা কতটুকু বুঝতে পারছেন, আমি বুঝতে পারছি না। কুমিল্লার বাসস্টপে দেখা গেলো জঙ্গি আক্রমণ হলো, ছবি বিরাট করে দিয়ে দিয়েছে। ইজ ইট পসিবল? ওই সময়ে ওই মুহূর্তের মধ্যে একটা ছবি তুলে গান পয়েন্টে দেখা যাচ্ছে যে ছবিটা আসছে। আমি জানি না, আপনারা (সাংবাদিক) ভালো বলতে পারবেন। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
বিভিন্ন বাড়ি থেকে জঙ্গি ধরার বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কোনো বাড়ি, একটা বাড়িতে কেউ নেই, সেই বাড়ি থেকে গ্রেনেড উদ্ধার করছেন, সেই বাড়ি থেকে জঙ্গি উদ্ধার করছেন।
আমরা এগুলোকে অস্বীকার করছি না বা এগুলোকে আমরা বাতিল করে দিচ্ছি না। কিন্তু আপনাকে জনগণের সামনে গ্রহণযোগ্য যুক্তি খাঁড়া করতে হবে এবং সঠিক সুষ্ঠু তদন্ত করে এগুলো ব্যবস্থা নিতে হবে। জঙ্গিবাদকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। আমরা প্রথমেই বলেছিলাম তাভেল্লা (ইতালীয় নাগরিক) হত্যার পরে যে, জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হোক, সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। সেটা তো করেনেই নি উল্টো আমাদের নেতাদের আসামি করেছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর উদ্যোগে তারেক রহমানের ১১তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদÐে দÐিত দলের স্থায়ী কমিটির মরহুম সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। সে তো যুদ্ধাপরাধী নন বা অন্য কোনো ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত না। মামলার হাজিরা দিতে এসে তাকে তুলে নেয়া গেলো। পরিস্কারভাবে পত্র-পত্রিকায় উঠলো যে, সাদা পোষাকধারী এসে তাকে তুলে নিয়ে গেছে।
৭ মাস পরে তাকে ফেলে দিয়ে গেলো তার বাড়ির সামনে। নো এনসার। গোটা জাতির সামনে এটার কোনো উত্তর নেই। লাশ পড়ে থাকছে রাস্তার ধারে ডোবার ধারে, দ্যাস নো এনসার। বলা হচ্ছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্রসফায়ারে বন্দুকধারীদের সাথে যুদ্ধে, হত্যা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ওবায়দুল কাদের (আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক) সাহেব গতকাল ( বুধবার) বলেছেন, সহায়ক সরকার সংবিধানে নেই। সংবিধান কাদের জন্য, সংবিধান কারা তৈরি করেন। মানুষের জন্য সংবিধান, মানুষের প্রতিনিধিরাই সংবিধান প্রণয়ন করেন। আজকে আপনারা যে সংবিধান তৈরি করেছেন, ওটাকে একটা বাইবেল বানিয়ে দিয়েছেন। মানে সংবিধানের মধ্যে তিনটা অনুচ্ছেদ আছে যেটা কোনো দিনই পরিবর্তন করতে পারবেন না। তাহলে প্রজাতন্ত্র হলো কী করে। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন আসবে কিভাবে? জনগণকে থেকে তারা পুরোপুরিভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে এই ধারণা তাদের মধ্যে জন্মেছে। তারা (ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ) দেখেছে, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বলেই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। দেশে উন্নয়নের নামে দুর্নীতির বিস্তার ও অর্থনৈতিক দুরাবস্থার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েক বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আমাদের যত কর্মী প্রাণ দিয়েছেন, এতো ত্যাগ স্বীকার করেছে, কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এতো প্রাণ দিয়েছে বলে আমার জানা নেই। আজ আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে, আমাদের নিজেদেরকে সজাগ করে, জাগরণ সৃষ্টি করে, জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। জনগণকে জাগিয়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। আপনার যাওয়ার অন্য কোনো জায়গ নেই, জনগণের কাছেই আমাদের যেতে হবে। সেই জনগণই আমাদের একমাত্র জায়গা, সমস্ত শক্তির উৎস, তাদেরকে সংগঠিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সম্ভাব্য চুক্তির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারতের হিন্দুস্থান টাইমস, হিন্দু পত্রিকায় দেখছি, আমাদের দেশেও কয়েকটি পত্রিকায় বেরিয়েছে- চুক্তি করছেন, নিরাপত্তা ও সামরিক চুক্তি করছেন। ভালো কথা, দেশে দেশে নিরাপত্তা চুক্তি হয়, সামরিক চুক্তি হয়। বাংলাদেশের চুক্তি ভারতের সঙ্গে করবেন জনগণ কিছুই জানবে না, এটা তো হতে পারে না। এদেশ প্রজাতন্ত্র। পিপলস হ্যাভ রাইট টু নো তার সরকার জোর করে থাকুক, যেভাবে থাকুক তারা তার দেশের জন্য কী করছে?
এখন পর্যন্ত একটা চুক্তি আপনারা জনসমক্ষে উপস্থাপন করেননি। এটা হচ্ছে মেনডেটারি যে, জনগণের সামনে গণতান্ত্রিক দেশে চুক্তিগুলো প্রতিস্থাপন করতে হবে। সেটা করা হচ্ছে না।
তিস্তাসহ বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীর পানি বন্টনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘকাল ধরে অপেক্ষা করছি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, এবার বোধহয় পানির কিছুটা সুরাহা হবে। এখন পর্যন্ত এক ফোঁটা পানি আমরা তিস্তা নদীতে পাইনি, দেশের ৫৪টি নদী আছে, কোনটাতে পানি আসে না।
শুধু তাই নয়, প্রতিদিন আমার সীমান্তে বিএসএসফ আমার দেশের নাগরিককে মারছে। কোনো সভ্য দেশে এই ধরণের ঘটনা ঘটছে না। আমরা সেদিন কয়েকজন ক‚টনীতিকের সাথে কথা বলছিলাম, তারা বলছেন যে, এ ধরণের ঘটনা পৃথিবীর কোথাও হয় না। তোমার যদি বর্ডার ক্রস করে, ইউ ক্যান এরেস্ট হিম। কিন্তু গুলি করে মেরে ফেলবে- এরচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন আর কিছুই হতে পারে না। আমরা নিরবে নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে আছি।
সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুুল বায়েস মিয়া, ড্যাবের অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. বজলুল করীম ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।