Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুকুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা, বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা দামুড়হুদার আমবাগান

| প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে : চলতি মৌসুমে দামুড়হুদার আমবাগানগুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে। মৌমাছি, ভ্রমরসহ নানারকম কীটপতঙ্গের গুনগুনানি ও মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ভালো ফলন পেতে মুকুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। মালিকরা তাদের আমবাগানগুলো আম ব্যবসায়ীদের নজরে আনতে এবং গাছে অধিক ফলের আশায় নানাভাবে মুকুলের যতœ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে মৌসুমী আম ব্যবসায়ীরাও ঘুরে দেখতে শুরু করেছেন এলাকার বিভিন্ন আমবাগান। এবার ছোট-বড়, দেশি-হাইব্রিড মিলে সব জাতের আমগাছে প্রচুর মুকুল দেখা দিয়েছে। অভিজ্ঞজনদের ধারণা, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাগান আকারে ২৬০ হেক্টর এবং পতিত জমি ও বসতবাড়ির সাথে ১৪০ হেক্টর মোট ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমগাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় নানা প্রজাতির আমবাগান রয়েছে। এসব বাগানে রয়েছে হিমসাগর, বোম্বাই, ফজলি, ল্যাংড়া, কাঁচামিঠা, আ¤্রপালি, রূপালিসহ দেশি ও হাইব্রিড জাতের নানা প্রজাতির আমগাছ। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সম্প্রতি বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে নতুন নতুন আমবাগান তৈরি হয়েছে। বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের অনেকে জানান, কৃষি অফিসের হিসাবের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি জমিতে আমবাগান রয়েছে। উপজেলার আমবাগান ব্যবসায়ী জগন্নাথপুরের আসাদুল, রশীদ, চন্দ্রবাসের নাজিম ও শামসুল হক বলেন, পৌষ-মাঘ মাস থেকেই দেশের বিভিন্ন মোকামের পাইকারি আম ব্যবসায়ীরা দামুড়হুদা উপজেলার স্থানীয় আম ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে বাগান কেনার জন্য তদবির শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা অনেকে বাগান কিনে ভালো ফলন পেতে নিজেদের মতো করে আমগাছেও মুকুলের পরিচর্যা করছেন। অনেক বাগান মালিকরা মুকুল আসার আগে থেকেই নিজেরা বাগানে বালাইনাশক ও হরমোন স্প্রে করে যতœ নিচ্ছেন। উপজেলার আমবাগান মালিক গোবিন্দপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম মাস্টার, সুলতানপুর গ্রামের লিটন, দশমী গ্রামের বশির, চন্দ্রবাস গ্রামের শামসুল হক, নাজিম, পারকৃষ্ণপুর গ্রামের জসিম ও আ. হামিদ বলেন, এসময় আমরা বাগানে নানারকম বালাইনাশক ও হরমোন স্প্রে করি। এই বালাইনাশক স্প্রে করলে বাগানে বিভিন্ন ছত্রাক ও ক্ষতিকর পোকামাকড় মারা যায় এবং হরমোন ¯েপ্র করার ফলে আমের মুকুল সতেজ হয়। নুরুল ইসলাম মাস্টার জানান, তার নিজস্ব জমিতে ১৬ বিঘা জমিতে হিমসাগর ও বোম্বাই জাতের বাগান করেছেন। ৫-৬ বছর যাবৎ ফলন পাচ্ছেন। এবার সব গাছেই প্রচুর পরিমাণে মুকুল এসেছে। বাগান ব্যবসায়ী চন্দ্রবাস গ্রামের নাজিম উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যে পরিমাণ মুকুল এসেছে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এমন মুকুল দেখা যায়নি। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে এবার সব গাছেই যেভাবে মুকুল এসেছে তাতে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করা যায়। আমবাগানে ঔষধ ¯েপ্রকারী দশমী গ্রামের লিয়াকত, এরশাদ ও জুয়েল বলেন, শীত মৌসুমের শুরুতেই বাগানে স্প্রে করার কাজ চলছে জোরেশোরে এবং আমাদের আয়ও ভালো হচ্ছে। প্রতি বছরই আমরা এই সময় অন্যান্য কাজের পাশাপাশি আমবাগানে ঔষধ স্প্রে করে বাড়তি আয় করে থাকি। গাছে ঔষধ স্প্রে করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। তাতে মনে হচ্ছে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ