বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
* ঠেকানো যাচ্ছে না শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকির প্রবণতা
* অমুসলিম শিক্ষকরা পাঠদান করছেন ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
আনোয়ার হোসেন জসিম, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাউপকরণ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্য দিকে শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার মান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু শিক্ষকরা পাঠদান করছেন ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা। গত মঙ্গলবার ও বুধবার সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। (১ মার্চ) বুধবার বেলা দুইটায় বরুনা ফয়জুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি ‘খ’ শাখায় গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষিকা অষ্টমী দেব ১৬ জন ছাত্রছাত্রীকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার অজুর চারটি ফরজ বোর্ডে লিখে পাঠদান করাচ্ছেন। পাশের কক্ষে সহকারী শিক্ষিকা সীতা রাণী রায় তৃতীয় শ্রেণির ‘ক’ শাখার ১৪ জন ছাত্রছাত্রীকে একই বিষয়ে পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত কুমার পালকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকা শেলী রাণী দেব ২৭ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে ইসলাম শিক্ষার দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত সম্পর্কে পাঠদান করাচ্ছেন। পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষিকা দিপা পাল ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার সালাতের আরকান সম্পর্কে পাঠদান নিচ্ছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত কুমার পাল বলেন, অনেকদিন যাবত এ বিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষক নেই। নয়নশ্রী ও মনারগাও স্কুলে মুসলিম শিক্ষক নেই। সেকারণে হিন্দু শিক্ষকরা ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা পাঠদান করাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বিদ্যালয়গুলোতে শিশুশ্রেণির জন্য খেলাধুলার উপকরণ কেনার জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। এ টাকা থেকে ৩০০ টাকা ভ্যাট কেটে মোট চার হাজার ৭০০ টাকা অবশিষ্ট থাকে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে গঠিত ক্রয় কমিটির মাধ্যমে নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষাউপকরণ ক্রয় করার কথা থাকলেও গত কয়েকবছর যাবত উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার প্রভাব খাটিয়ে একটি সিন্ডেকেট গড়ে তোলে এসব শিক্ষাসামগ্রী কম দামে ক্রয় করে বিদ্যালয়গুলোতে বিক্রি করে নিজের পকেট ভারী করেছেন। এমনকি তিনি নিজে পার্বন লাইব্রেরি নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি থাকার সুবাদে নানা হয়রানি ও বদলির ভয়ে উপজেলার ১৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাউপকরণ তার লাইব্রেরি থেকে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে জড়িত থেকে বাণিজ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষাউপকরণ মালামাল ক্রয়ে দামের সাশ্রয় ও গুণগত মান ভালোর জন্য আমরা সবাই মিলে যৌথভাবে অর্ডার দিয়ে মালামাল ক্রয় করে থাকি। আগ্রহী শিক্ষকদের সাথে আমি নিজেও এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিলাম’। তবে এ মালামাল ক্রয়ে কোনো মুনাফা করিনি’। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব বলেন, শিক্ষাউপকরণ নিয়ে বাণিজ্যের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ডেকে এনে এ বিষয়ে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।