Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

জয়পুরহাটে ১৫ দিনে ৬ শতাধিক রোগী হাসপাতালে

রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডের প্রকোপ

| প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : চলমান খরা বৈরী আবহাওয়া ও প্রখোর রোদের কারণে জয়পুরহাটসহ এ অঞ্চলে রোটা ভাইরাস (ডায়রিয়া) ও টাইফয়েডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া ও টাইফয়েডের প্রকোপ অব্যাহত থাকলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গত ১৫ দিনে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে জেলার উপজেলা হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসছে ৪০ থেকে ৪৫ জন আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু রোগী নিয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে আসছেন তাদের স্বজনরা। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ওইসব শিশুদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে জায়গা নিয়ে তাদের চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি শুরু হয়। তবে হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১০ ফেব্রæয়ারি থেকে এর প্রকোপ বাড়তে থাকে। সেদিক থেকে প্রায় প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত আধুনিক জেলা হাসপাতালে প্রায় ৩৭ জন শিশু ভর্তি ছিল। বৈরী আবহাওয়া, প্রখোর রোদ, ধুলোবালির পাশাপাশি অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নতা থেকে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব ঘটে। হাসপাতালে ভর্তির পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ৩/৪ দিন এবং টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীরা ৭/৮ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছে। গত ২০ ফেব্রæয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ শতাধিক রোগীকে হাসপাতালের বেডে, মেঝেতে ও বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এসব রোগীরা প্রচÐ জ্বর, শরীর ব্যথা এবং শিশুরা সাধারণত বমি, পাতলা পায়খানা ও পেটের ব্যথায় ভুগছিল। হাসপাতালেন চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শহরের সাগরপাড়া মহল্লার ১ বছরের শিশু দ্বীপ, পাঁচবিবি উপজেলাার জীবন পুরের সাদিয়ার অভিভাবক জানান, তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের এলাকার প্রায় শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। অপরদিকে টাইফয়েট এ আক্রান্ত সদরের শান্তিনগর এলাকার ডালিয়া ঘোষ (২৮), কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের লিয়াকত (৩২) বলেন, তারা টায়ফয়েড আক্রান্ত হয়ে গত ১০ দিন যাবৎ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা বলেন, ইদানীং প্রায় মানুষের এই অসুখ হচ্ছে। কেউ হাসপাতালে আসে আবার অনেকে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এ জ্বর অনেকদিন যাবৎ ভোগায়। জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ খুরশিদ আলম বলেন, চলমান বৈরী ও রু² আবহাওয়ায় দিনে প্রচÐ রোদ ও গরম, রাতে শীত, সেই সাথে ধুলাবালির কারণে রোটা ভাইরাস এবং টাইফয়েড রোগ বেড়ে চলেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। গত দুই সপ্তাহে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৬শ’ নারী, পুরুষ ও শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগামীতে আবহাওয়া অনুক‚লে আসলেই এর প্রাদুর্ভাব কমে আসবে, তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ