Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় ব্যবহারিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ!

| প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনার মহানগরীর খালিশপুরস্থ রোটরি স্কুলে ব্যবহারিক (প্রাক্টিক্যাল) পরীক্ষার নামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে (বিজ্ঞানে) ৭০০ টাকা ও (মানবিক+ব্যবসায়) ৪০০টাকা হারে আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের। মডেল স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগে নেয়া হয়েছে এক হাজার টাকা আর মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখায় ৫০০টাকা হারে। শুধু ওই দু’টি স্কুলে নয়; খুলনার হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল ব্যতীত প্রায় প্রতিটি স্কুলেই এসএসসি’র প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের থেকে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে হয়রানি, প্রাক্টিক্যালে কম নম্বর ও ফেল করিয়ে দেবার হুমকির কারণে কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে অভিযোগ দিচ্ছেন না। কিন্তু তদন্ত সাপেক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে প্রতিকার চাইছেন সবাই। গতকাল রোববার থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে; চলবে আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত।
রোটারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুবনা আরা বলেন, ‘আমার কাছে কেন জিজ্ঞাসা করছেন? আপনার কি রোটারি স্কুলে বাচ্চা পড়ে? অন্য অন্য স্কুলে খবর নিয়েছেন তারা কত করে নিয়েছে? আমাদের স্কুলে সাইন্সের স্টুডেন্টের এক রকম নেয়া হয়েছে; আর কমার্সের স্টুডেন্টের কাছ থেকে এক রকম ও মানবিকে এক রকম নেয়া হয়েছে। আর কত নেয়া হয়েছে এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না। কারণ আমি ভারপ্রাপ্ত আছি। আমাদের স্কুলের ঘটনা যদি জানতে চান-তবে আগে-পিছে চিন্তা করেই বলেন। এসবের ব্যাপারে আমি হেডমাস্টার কিছুই জানি না। তবে অন্য স্কুলের চেয়ে কম নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি’
বোর্ড নির্ধারিত ফিসের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিধি নিষেধ সম্পর্কের বিজ্ঞপ্তি পেয়েছিলেন কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে স্কুলের যে কেন্দ্রে পরীক্ষা হয় সেখানে কিছু টাকা খরচাপাতি আছে, যারা পরীক্ষা নিতে আসে সেখানেও কিছু কিছু খরচাপাতি আছে। এক্সটারনাল নিয়োগ করতে হয়; তাদেরও টাকা-পয়সা দেয়া লাগে। অতিরিক্ত ফিস আদায় না করতে বোর্ড থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বলেও স্বীকার করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালিশপুরের বঙ্গবাসী ও নগরীর মডেল স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে। কেউ টাকা দিতে ঢিলেমি করলে- হয়রানি, প্রাক্টিক্যালে কম নম্বর ও ফেল করিয়ে দেবার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ কারণে কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক অভিযোগ করার সময় নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেননি।
প্রত্যেক স্কুলের শিক্ষকরাই পরীক্ষার্থীদের থেকে এ অর্থ আদায় করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। বিজ্ঞান বিভাগের আদায়কৃত অর্থের কিছু অংশ বাইরে থেকে আগত পরীক্ষক (শিক্ষক) কে কিছুটা দেয়া হয়। বাকি অর্থ প্রধান শিক্ষক নিজে বা কয়েকজনের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেন বলে শিক্ষকদের সূত্র জানিয়েছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক টি এম জাকির হোসেন বলেন, ফরমপূরণের অর্থের সাথে সংযুক্ত করে বোর্ড ব্যবহারিক পরীক্ষার ফিস পূর্বেই নিয়ে নেয়। ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় নির্ধারিত কেন্দ্রে সম্ভাব্য খরচ পাঠিয়ে দেয়া হয়। কোনোভাবেই ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে একটি পয়সাও কেউ নিতে পারবেন না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নেয় এবং তা প্রমাণিত হয় তবে অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলীম জানান, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রুল আদেশের প্রেক্ষিতে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিলÑ এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বেশি ফিস কোনো অজুহাতেই আদায় করা যাবে না। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ