Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেখানে চোখ যায়, সেখানে যাব হারিয়ে

মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ

| প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

‘মন চায় মন চায়, যেখানে চোখ যায়, সেখানে যাবো হারিয়ে’ হূমায়ুন আহমেদের দারুচিনি দ্বীপ সিনেমার গানের মতো করেই পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতে ৪টি দিনের জন্য হারিয়ে গিয়েছিল মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের শিক্ষার্থীরা। একাডেমিকের অংশ হিসেবে গত ফেব্রæয়ারি মাসের ২৫ তারিখ রাতে ৪ দিনের উদ্দেশ্যে মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে থেকে রওনা দেন তারা। প্রায় ১৯০ জন শিক্ষার্থীকে ৪ ভাগে ভাগ করে পরিচালনা করা হয় শিক্ষা সফর-২০১৭। ভর্তি হওয়ার পর ক্লাস-পরীক্ষার চাপে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সময়ই পাওয়া যায় না। তাই শিক্ষা সফরের দিনগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে ভীষণ আনন্দের। আমাদের সাথে সফরের দিক-নির্দেশনা প্রদানকারীর দায়িত্ব পালন করেন ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক  মো. শাহ আলম ও ফিন্যান্স বিভাগের বিভাগীয়প্রধান বিপুলেন্দু বিশ্বাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. জুয়েল আক্তার ও মার্কেটিং বিভাগের শাহরিয়ার আল মামুন স্যার। আর ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন ইব্রাহীম হোসেনও সাইফুল ইসলাম মুন্না। সপ্তাহজুড়ে চলে সফরের প্রস্তুতি। বাস ভাড়া করা থেকে শুরু করে সকল কাজকর্ম শেষ হয়ে যায় সময়মতো। এরপর অপেক্ষার প্রহর গণনা শুরু। হঠাৎ করেই চলে আসে সেই কাক্সিক্ষত দিন। শনিবার রাত ১১টা থেকেই শুরু হয় বাস যাত্রা। একের পর এক বাস ছেড়ে যেতে শুরু করে কলেজ থেকে। কুমিলা রোড হয়ে আমাদের গাড়ি চলতে শুরু করে দ্রæত গতিতে আর আমাদের আনন্দও চলে সমান তালে। সারারাত চলার পর সকাল ৮টায় আমাদের গাড়ি পৌঁছায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সেখানে সকালের খাওয়া শেষ করে আবার যাত্রা শুরু করি, সাড়ে ১১টায় আমরা কক্সবাজার পৌঁছাই। ১২টার মধ্যে সব বন্ধুরা মিলে চলে যাই পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। সকল যাত্রার ক্লান্তি যেনো নিমিষেই দূর হয়ে গেল সমুদ্রের কাছে গিয়ে। দুপুরের খাওয়া শেষ করে আবার পাড়ি জমাই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সুগন্ধ্যা বিচে। এর বিশেষত্ব হচ্ছে এই বিচে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের বুকে সূর্যের আত্মসমর্পণ খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করা যায়। পরদিন সকাল ৬টায় রওনা দেই টেকনাফের উদ্দেশ্যে। গন্তব্যস্থল আকাক্সিক্ষত সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সোমবার সকাল ৯টায় আমাদের জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি জমাই আমরা। প্রচÐ রোদে আমরা যখন প্রায় অস্থির ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের মনকে প্রশান্তি প্রদান করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বিভক্তকারী নাফ নদ। দুই রঙয়ের পানির ফলে স্বচক্ষেই ধরা পড়ে সাগরের বুকে একমাত্র নদীর মোহনা। আর এর প্রধান আকর্ষণ গাঙচিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আমরা পৌঁছাই আমাদের সেই আকাক্সিক্ষত সেন্টমার্টিন দ্বীপে। মনোমুগ্ধকর ও মনোরম পরিবেশের জন্য এক নিমিষেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেন্টমার্টিন।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা সেরে দৌড় দেই সবাই। উদ্দেশ্য সেন্টমার্টিনের সবচেয়ে সেরা আকর্ষণ ছেঁড়াদ্বীপ। এরমধ্যে বিপুল স্যার, জুয়েল স্যার ও শাহরিয়ার স্যারের মাথায় ভ‚ত চেপেছে। তারা সাইকেলে করে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি ঘুরার পরে যাবে নিঝুম দ্বীপ। তারপর হাঁটতে হাঁটতে যাবে ছেঁড়াদ্বীপ। যে কথা সেই কাজ। শুরু হলো তাদের অভিযান। পথে মধ্যে আমাদের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদুর রহমান আবিষ্কার করলেন এই তিনজন দুঃসাহসিক সমুদ্র প্রেমীককে।
ছেঁড়াদ্বীপে গেলাম আর ডাব খাওয়া হবে না, এমনটা হতেই পারে না। সবাই মিলে একসাথে ডাব খাওয়া শুরু করি। সেখানে যেনো ডাবের পানি খাওয়ার প্রতিযোগিতা চলছিল।
দুপুরের খাওয়ার পর আমরা আবার কক্সবাজারের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি। ফিরে আসার সময়টা ছিল আরও বেশি আনন্দদায়ক। জাহাজ বাঙালিতে গানের তালে তালে বিপুল ও শাহরিয়ার স্যারের নাচ আমাদের করেছে আরো মুগ্ধ। বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে জাহাজও দুলতে থাকে। আর সেই সাথে ভয়ে আর আনন্দে আমাদের মনও দুলতে থাকে। এভাবে দুলতে দুলতে আমরা টেকনাফে চলে আসি। সেখান থেকে আমরা টেকনাফ ঘুরে আবারও চলে যাই কক্সবাজারে। রাতটা কাটিয়ে বুধবার সন্ধ্যা ৮টায় রওনা দেই আমাদের চিরচেনা প্রিয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে।
ষ শাকিল ও সানোয়ার



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ