Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিষাক্ত পণ্যে বাজার সয়লাব প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা

কুড়িগ্রামে ৬ মাসে ১৩১ প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

| প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামে বিষাক্ত পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের অসাধুতায় ভোক্তারা কী খাচ্ছেন নিজেরাই বুঝতে পারছেন না। ভেজাল পণ্য, মেয়াদোতীর্ণ ঔষধ, অস্বাস্থ্যকর খাবার, ওজনে কারচুপি, অধিক মূল্যসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে ঠকানো হচ্ছে ভোক্তাদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিগত ৬ মাসে কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়াও হাজার হাজার ভেজাল ও নকল খাদ্যসামগ্রী বিনষ্ট করলেও থেমে নেই বিষাক্ত পণ্য তৈরির কাজ। ভোক্তাদের ঠকিয়ে রাতারাতি কীভাবে লাখ লাখ টাকার মালিক হওয়া যায় এই প্রতিযোগিতায় নেমেছে সবাই। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে মহাজনী ব্যবসায়ীরাও অসাধু উপায় অবলম্বন করায় সরকারিভাবে অভিযান চালিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না এসব অপকর্ম। কুড়িগ্রাম ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিগত ৬ মাসে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৫৫০টি প্রতিষ্ঠানে বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরমধ্যে ৪১৯টি প্রতিষ্ঠানকে মৌখিকভাবে শতর্ক করা হলেও বাকি ১৩১টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অংকে ৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরমধ্যে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ১৮৫টি, বেকারি ৪৫টি, আইসক্রিম কারখানা ১২টি, চানাচুর, আচার ও চকলেট ফ্যাক্টরি ৩০টি, সার, কীটনাশক ও বীজের দোকান ৫৫টি, মেডিকেল স্টোর ও ফার্মেসি ৬৫টি, এছাড়াও সরিষার তেলের মিল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জর্দ্দা ফ্যাক্টরি, মিষ্টির দোকান, কাপড়ের দোকান, মাছ ও মাংসের দোকানও রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে খাদ্যপণ্য তৈরি ও খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, মেয়াদোতীর্ণ পণ্য ও ঔষধ, পণ্যের ওজন, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ না থাকা, পণ্য ও সেবার মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রয়, ওজনে কারচুপি, ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাসাধারণকে প্রতারিত করাসহ একাধিক অসাধু উপায় অবলম্বনের অভিযোগ রয়েছে। জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, বাজার তদারকিতে জরিমানা আরোপ ও আদায়ের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট ও প্যাম্পলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও অপরাধ পুনরায় না করতে সতর্ক করা হয়। জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু জানান, সমাজে ভেজাল মানুষের মতো ভেজাল পণ্যে সব সয়লাব হয়ে গেছে। মানুষের মধ্যে নীতি, মূল্যবোধ ও বিবেক মরে গেছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ এখন অসহায়। খাদ্যদ্রব্যে অধিকহারে নিষিদ্ধ পণ্য ব্যবহারের ফলে রোগ-ব্যাধি বেড়ে গেছে। এসব অপকর্ম ঠেকাতে হলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সজাগ হতে হবে। যার যার জায়গা থেকে প্রতিবাদী হতে হবে। তাহলে এরা অপকর্ম করতে সাহস পাবে না। এব্যাপারে কুড়িগ্রাম ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী জানান, ব্যবসায়ীদের অপরাধগুলো মারাত্মক। অনেক ব্যবসায়ী এব্যাপারে সচেতন নন। ভোক্তাদের পরিণাম চিন্তা না করে ব্যবসায়িক মুনাফা লাভের জন্য অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন হতে হবে। তাহলে অপরাধ কমে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ