Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পরিত্যক্ত ভবনেই চালাতে হয় কার্যক্রম

| প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে রূপগঞ্জ থানাটি। রূপগঞ্জ থানায় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ি, ভোলাব তদন্ত কেন্দ্র, কাঞ্চন পুলিশ ক্যাম্প, চনপাড়া পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। এ সকল থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, পুলিশ সব মিলিয়ে ২৬ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ২১ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ২৫ জন কনস্টেবল ও ১৮ জন রিজার্ভ কনস্টেবল রয়েছে। অথচ সকল থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ক্যাম্পগুলোতে অফিসারদের বসার জন্য থানায় পর্যাপ্ত জায়গা নেই। পর্যাপ্ত বসার জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেক অফিসারকেই থানার পরিত্যক্ত ভবনগুলোতেই বসার জায়গা করে নিতে হচ্ছে। বসার জায়গা না পেয়ে অনেক অফিসারদের থানায় ডিউটি করতে সমস্যা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডিউটির জন্য ১৪টি ডিউটি পোস্ট নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত কনস্টেবল না থাকার কারণে অফিসাররা সঠিকভাবে কনস্টেবল নিয়ে ডিউটি করতে পারছেন না। থানায় পর্যাপ্ত অফিসার থাকলেও তাদের সঙ্গে ডিউটি করার জন্য পর্যাপ্ত কনস্টেবল নেই।  রূপগঞ্জ থানা সূত্র জানায়, রূপগঞ্জ থানার প্রধান সমস্যা হচ্ছে অফিসারদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় অফিসারদেরকে থানার পাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। যেসকল অফিসার কোয়ার্টার পাচ্ছেন তাদেরকে এক প্রকার বাধ্য হয়েই পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ভবনে থাকতে হচ্ছে। কোয়ার্টারের ভবনগুলো অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো সময় ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে। এক প্রকার অফিসাররা ঝুঁকি নিয়েই তাদের পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করে আসছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে গাড়ি সংকট। রূপগঞ্জ থানায় অফিসারদের চলাচলের দুটি পুলিশ ভ্যান রয়েছে। একটি ভ্যান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চলাচল করেন ও বাকি একটি দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিউটি করতে হয়। থানায় পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকার কারণে অফিসারদেরকে লেগুনা, সিএনজি দিয়ে ডিউটিতে বের হতে হচ্ছে। সিএনজি দিয়ে মহাসড়কে চলাচল করতে গেলে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। উপজেলার কোনো স্থানে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যবস্থা না থাকার কারণে ওই স্থানে পুলিশকে পৌঁছাতে হয় দেরি করে। পূর্বাচল উপ-শহর ও তার আশপাশের এলাকাগুলোর অপরাধমূলক কার্যক্রম দিন দিন বেড়েই চলছে। থানার পর্যাপ্ত পুলিশ ভ্যান না থাকার কারণে এসকল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল দিতে হচ্ছে সিএনজি অথবা লেগুনা করে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রূপগঞ্জ থানার যে কোয়ার্টারগুলো রয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগই পরিত্যক্ত। যেকোনো সময় এ কোয়ার্টারের এ ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে। ভবনগুলোর দেয়ালের ভিমের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেয়ালের বিভিন্ন অংশের সিমেন্ট ধসে পড়ছে। থানা ও কোয়ার্টারে কোনো বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকার কারণে থানার অফিসার ও কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া থানার ভেতরে অফিসারদের জন্য নেই কোনো স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যবস্থা। পায়খানাগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে বেশিরভাগ পায়খানাগুলোই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অফিসারদেরকে তাদের পরিবার নিয়ে পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করতে হচ্ছে। থানায় অফিসারদের পর্যাপ্ততা থাকলেও পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকার কারণে অফিসারদেরকে বাধ্য হয়েই চাপাচাপি করে বসতে হয়। থানায় পুলিশদের বিনোদনের জন্য কোনো ধরনের খোলা জায়গা নেই। রূপগঞ্জ থানায় মাত্র ৩ জন মহিলা পুলিশ রয়েছে। থানায় যে তিনজন মহিলা পুলিশ আছে তারা সব সময়ই অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকে। অথচ আইনে রয়েছে কোনো মহিলা অপরাধীকে গ্রেফতার করতে হলে মহিলা পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করতে হয়। পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে পুরুষ পুলিশ দিয়ে মহিলা অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করতে হচ্ছে। ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ক্যাম্পগুলোতেও কোনো মহিলা পুলিশ না থাকার কারণে মহিলা অপরাধীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা ও গ্রেফতার করার সময় পুরুষ পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করাতে হচ্ছে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (্ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, সমস্যাগুলো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ