Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চাঁদপুরে ভেজাল ইউরিয়া সারে সয়লাব

| প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : চাঁদপুরে সরকারিভাবে সরবরাহকৃত নষ্ট ইউরিয়া সার নিয়ে বিপাকে পড়েছে ১০৬ জন ডিলার। নষ্ট সার আমদানির খবরে জেলার ৩ লাখ ৫৬ হাজার কৃষক অনেকটা হতাশাগ্রস্ত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ও অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কৃষি কাজে অনুপযোগী নি¤œমানের চিকন সার আমদানি করে সুযোগ গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে। চীন থেকে আমদানিকৃত নি¤œমানের জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার নিয়ে যখন বিপাকে চাঁদপুরের ব্যবসায়ী ও কৃষক, তখন কতিপয় ডিলার অবৈধভাবে অন্য জেলা থেকে চিকন দানার ইউরিয়া সার আমদানি করে প্রকাশ্যেই বিভিন্ন ইউনিয়নে বিক্রি করার খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাঁদপুরের শতাধিক ডিলার। সরকারি নিয়মের বাইরে এক ইউনিয়নের ডিলার ও সাব-ডিলার অন্য ইউনিয়নে সার বিক্রি করছে। একাধিকবার চাঁদপুর কৃষি বিভাগকে অবহিত করা সত্তে¡ও বন্ধ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বৈধ ডিলাররা। জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বৈধ-অবৈধ সার বিক্রেতারা অন্য জেলা থেকে চিকন দানার ইউরিয়া সার ক্রয় করে চাঁদপুরে বিক্রি করছে। তারা সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ৮০০ টাকা বস্তা সার ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছে। কৃষকরাও চাঁদপুরে সরবরাহকৃত মোটাদানা ও জমাটবাঁধা সার না কিনে বেশি দামে ওই চিকন সার ভালো ফলনের আশায় ক্রয় করছে। এতে করে একদিকে যেমন ফসল উৎপাদনে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে ওই ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। চাঁদপুর ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রæয়ারি থেকে চাঁদপুরে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের বরাদ্দকৃত সার ১০৬ জন ডিলারের কাছে আসা শুরু করে। নিয়ম অনুযায়ী ওইসব সার আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার সার কারখানা থেকে সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা এখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট বাফার ট্রানজিট গোডাউন থেকে পাঠানো হচ্ছে। অথচ ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের সরবরাহকৃত ৬ হাজার ৮শ ১৭ মেঃটন ইউরিয়া সারের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যা ব্যবহার উপযোগী নয় বলে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানায়। সরেজমিন দেখা যায়, ওইসব সার জমিতে ব্যবহার অযোগ্য হওয়ায় কোন কৃষক তা নিচ্ছে না। এদিকে নি¤œমানের ইউরিয়া সার প্রসঙ্গে চাঁদপুরের সার ব্যবসায়ী সমিতি ও চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, চীন থেকে আমদানিকৃত নি¤œমানের সারের বিষয়ে ইতোমধ্যে বিসিসিআইসি চেয়ারম্যান, শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। অবৈধ সার ব্যবসায়ী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলায় আমরা ১০৬ জন ডিলার রয়েছি, এর বাইরে কেউ সার বিক্রি করলে তা হবে অবৈধ। চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী আহম্মদ বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে সভা করে অবৈধ সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, এ বছর আমদানিকৃত ইউরিয়া সারের মধ্যে কয়েক বস্তা সার একটু শক্ত ও ধূসর বর্ণের হওয়ায় চাঁদপুরের ডিলার ও কৃষক একটু সমস্যায় পড়েছেন। তবে এ সার ব্যবহারে ফসলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা নেই। কৃষক বাতাসে ভেসে আশা খবরে শুধু শুধু আতঙ্কিত হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ