যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
মো. আলতাফ হোসেন : সুস্থ্য থাকা এবং ওজন কমানোর উপায় হিসেবে মার্শাল আর্ট, কুংফু ও কারাতে খুব জনপ্রিয় ব্যায়্যাম। কুংফু চমৎকার একটা জিনিস। মানুষ আত্মরক্ষার জন্য এটা ব্যবহার করে। কুংফু হচ্ছে এক প্রকারের কারাতে বা মার্শাল আর্ট। মার্শাল আর্ট সুবিধিবদ্ধ অনুশীলনের বিস্তীর্ণ পদ্ধতি এবং যুদ্ধের ঐতিহ্য যেটি বিভিন্ন কারণে অনুশীলন করা হয়। যেমন- নিজস্ব-প্রতিরক্ষা, প্রতিযোগিতা শারীরিক আরোগ্য এবং সুস্থ্য, অধিকান্ত মানুসিক, শারীরিক আরোগ্য এবং সুস্থ্য, অধিকান্ত মানুসিক, শারীরিক এবং আত্মিক উন্নতি। মার্শাল আর্ট পরিভাষাটি ব্যাপকভাবে প্রাচ্য এশীয় লড়াইয়ের কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু লড়াইয়ের পদ্ধতি হিসেবে সূত্রপাত ১৫৫০ সালে ইউরোপে। ১৬৩৯ সালের হস্ত চালিত ইংলিশ অসি ক্রীড়াকে তলোয়ার চালানোর ‘বিজ্ঞান এবং কলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরিভাষাটি লাতিন শব্দ থেকে এসেছে, মার্শাল আর্ট হচ্ছে -মঙ্গলের কৌশল, যিনি ‘রোমান যুদ্ধের দেবতা’। কারাতে রিউকু দ্বীপে বিকশিত একটি মার্শাল আর্ট। বর্তমানে জাপানের ওকিনাওয়া। এটা আংশিকভাবে দেশীয় যুদ্ধ পদ্ধতি এবং চীনা কেনপে থেকে বিকশিত হয়েছে। প্রিয় পাঠক ‘আত্মরক্ষায় কারাতে’ ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পঞ্চম পর্বে আজ থাকছে ‘জুনজুন সখী’।
জুনজুন সখী.....
‘জুনজুন সখী’ শুরু করার আগে অন্যান্য দিনের মতো কিছুক্ষণ ওয়ার্ম আপ করে নিলে ভালো হয়। সেই সঙ্গে হাত ও পায়ের ব্যায়ামও থাকা চাই। ব্যায়াম করলে শরীরটা নমনীয় হয়। তখন অনুশীলন করতে প্রশিক্ষণার্থীর জন্য সহজ হয়ে যায়। তাই ব্যায়াম করার পরে যখন প্রশিক্ষণার্থী তার লেসনে যাবে তার আগে পূর্বের লেসনও করে নিবে। ছালাম বা ‘বো’ এর পর কিবাডাসী পজিশনে যখন শিক্ষার্থী থাকবে তখন সোডন সখী, দোসখী, লাইজুলক, উরুনকী ১০/১৫ কিংবা এবং অধিক করে নিলে ভালো। প্রশিক্ষাণার্থীকে মনে রাখতে হবে, কারাতে প্রশিক্ষণ যেহেতু দীর্ঘ মেয়াদী তাই কঠোর সাধনার মাধ্যমেই অর্জন করে নিতে হয় এর প্রতিটি লেসন। আর যে প্রশিক্ষণার্থী প্রতিটি লেসন গুরুত্বসহকারে করবে তার দক্ষতা তত বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে তার প্রতিটি লেসনই রপ্তর হবে এবং সে আরো কৌশলী হবে উঠবে। আজকের পর্বে আমরা শিখছি জুনজুন সখী। জুনজুন সখী প্রশিক্ষণ নেয়ার পূর্বে প্রশিক্ষণার্থী ছালাম বা ‘বো’ করার পর কিবাডাসী পজিশনে দাঁড়াবে। কিবাডাসী পজিশন অর্থাৎ দুই হাঁটুর উপর ভর করে দেহ সোজা করে দাঁড়াবে। বুকটা টান টান অবস্থায় থাকবে। হাত দুটি কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় রেখে দাঁড়াতে হবে এর পর প্রথম ডান হাতে যখন জুনজুন সখী করবে বাম হাতে কোমড়ে থাকবে। আবার বাম হাতে যান জুনজুন সখী করবে তখন ডান হাতে কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় থাকবে। ডান হাত সোজা কোমড় থেকে সজোড়ে লাজুইক অর্থাৎ চপ মারবে। লাইজুক মারার সময় পাঁচটি আঙ্গুলই যেনো লাগালাগি অবস্থায় থাকে। লাইজুক মারার সময় বাম হাত কোমড়ে থাকবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায়। এরপর ডান হাত চলে আসবে কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায়। একই সাথে বাম হাতে আবার সোডন সখী সিঙ্গেল পঞ্জ করবে। এরপর বাম হাত চলে আসবে কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায়। পরের স্টেপে কোমড়ে থাকা মুষ্টিবদ্ধ ডান হাতটি একটু ঘুরে বাম কাঁধের বরাবর পাঞ্চ করবে। এরপর কোমরে থাকা বাম হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় বাম কাঁধের উপরের দিকে পাঞ্চ করবে বারবার। পাঞ্চ করার সময় মনে রাখতে হবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় থাকা বাম হাতটি তালুর অংশ ভেতরের দিকে থাকবে। মারার সময় একই সাথে ডান হাত আবার মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমরে চলে আসাবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায়। একই সাথে একবার বাম হাত দিয়ে কোমরের নিচে কনুই দিয়ে সজোড়ে আঘাত করবে। এরপর ডান হাতে একবার বাম হাতে একবার একইভাবে করতে হবে। যেমন আমবা প্রথমে কিবাডামী থাকা অবস্থায় ডান হাত লাজুইক মেরে ছিলাম। এবার কিবাডাসী পজিশনে থাকা অবস্থায় আমরা প্রথম বাম হাতে লাজুইক মারবো। অর্থাৎ বুক বরাবর সোজা প্রতিটি আঙ্গুল লাগালাগি অবস্থায় থাকবে। পরে বাম হাত কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় চলে আসবে একই সাথে কোমড়ে থাকা মুষ্টিবদ্ধ ডান হাতে সোডন সখী মারতে হবে অর্থাৎ সিঙ্গেল পাঞ্জা। এরপর ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমড়ে চলে আসবে এর কোমড়ে থাকা বাম হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ডান কাঁদে বরারব পাঞ্চ করতে হবে। এরপর ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় সোজা উপরের দিকে কাঁধ বরাবর পাঞ্চ করতে হবে। সোজা কাঁধ বরাবর এভাবে আবার দুই হাত কোমড়ে চলে আসবে এবং ডান হাতের কনুই দিয়ে সজোড়ে পেছনের দিকে আঘাত করতে হবে। কিবাডাসী অবস্থায় এভাবে পালাক্রমে হাত বদল করে জুনজুন সখী অনুশীলন করতে হবে। ১০/১৫ কিংবা এরও অধিকবার অনুশীলন করা যেতে পারে। প্রশিক্ষণার্থীকে মনে রাখতে হবে, যেহেতু কারাতে একটি শিল্প তাই প্রতিটি লেসনই গুরুত্বসহ আয়ত্ব করতে হবে। প্রতিটি লেসনের মধ্যে নিহিত থাকে কৌশল। আর এ লেসন আয়ত্ব করে যে যথার্থ প্রয়োগ করতে পারবে সেই পরবর্তীতে প্রতিটি লেসনই শিখে নিজেকে একজন দক্ষ ফাইটার হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। সেই সাথে তার পরবর্তী লেসনের দ্বার উন্মোচন হবে।
এভাবে র্দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী ধারাবাহিকভাবে রপ্ত করবে প্রতিটি লেসন। পর্যায় ক্রমে শিক্ষার্থীকে তার ধারণ ক্ষমতানুযায়ী জুনজুন সখী প্রতিনিয়ত অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়ানো যেতে পারে। যে যত বেশি নিষ্ঠার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেবে তার প্রতিটি কৌশল তত বেশী সঠিক হবে। যথক্ষণ পর্যন্ত জুনজুন সখী পারফেক্ট না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রশিক্ষক তাকে পরবর্তী লেসন দেবেন না। প্রশিক্ষণার্থীকে তার দক্ষতা ও নৈপুণ্যতার মধ্য দিয়ে অর্জন করে নিতে হবে প্রতিটি লেসন।
জুনজুন সখী অনুশীলন করলে বেশ কয়েকটি কার্যকর ফল পাওয়া যায়। এটা নিয়মিত করলে হাতের আর্ট সদৃঢ় হয়। পক্ষান্তরে দুই হাতেই শক্তি বৃদ্ধি হয়। ওফেন্স ও ডিফেন্সের ফলপ্রসূ ধারণা পাওয়া যায়। আঘাত করার কৌশল কিংবা প্রতিহত অর্থাৎ বøকিং এর কৌশল রপ্ত হয়। প্রতিটি জুনজুন সখী মারার সময়ই হোইস শব্দের মাধ্যমে তা মারতে হবে। (চলবে)
লেখক : সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ,
কারাতে কোচ ও চেয়ারম্যান মানিকগঞ্জ গ্রীণক্লাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।