Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আনোয়ারায় মুকুলে ভরে গেছে ডাল ফলন বাড়াতে প্রয়োজন বিশেষ যত্ম

| প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে : চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গৃহস্থ বাড়ির গাছে গাছে আমের মুকুল সুবাস ছড়াচ্ছে সর্বত্র। এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় আমগাছে মুকুল এসেছে অনেকটা আগেই। আগাম মুকুল দেখে চাষিদের অনেকে খুশি হলেও কৃষিবিদরা বলছেন, শীত বিদায় নেয়ার আগেই আমের মুকুল আসা ভালো কিছু নয়। ঘন কুয়াশা হলেই গাছে আগেভাগে আসা মকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা ফলনে প্রভাব ফেলবে। তবে এখন থেকেই আমগাছের বিশেষ যতœ নিলে ফলনে কোনো সমস্যা হবে না। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, শুধুমাত্র ১৪০ হেক্টর জমির উপর সনাতন পদ্ধতিতে আমচাষ হয় এ উপজেলায়। বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুর পাড়, রাস্তাঘাট ও পরিত্যক্ত জায়গায় সীমিত আমগাছ লাগানো হলেও এ চাষে তেমন কোনো পরিচর্যা করেন না চাষিরা। দেশি ও স্থানীয় জাতের আমগাছ হওয়ায় তাতে ফলনও কম। এদিকে কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রায় ৮ বছর আগে উপজেলার বৈরাগ, আনোয়ারা সদর, পরৈকোড়া ও হাইলধর ইউনিয়নে ১০ শতক করে ৪টি আম্রপালি (রূপালী) জাতের প্রদর্শনী বাগান করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এসব বাগান থেকে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। বাগানে এ বছরও আমের মুকুলে ভরে গেছে। রীতিমত বাগান পরিচর্যায় চাষিদের সহায়তা করছে উপজেলা কৃষি অফিস। এছাড়া বিশেষ বিশেষ জায়গায় স্বল্প পরিসরে উন্নতজাতের আমচাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে পারকি সৈকতের লুসাই পার্ক, কেইপিজেডের বাগান বিলাস ও গুচ্ছগ্রামের কয়েক জায়গায় আমচাষ পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব বাগানে আম্রপালি, হাড়িভাঙ্গা ও দেশি জাতের আমগাছ লাগানো হয়েছে। বাগানের এসব আম রূপ্তানিযোগ্য না হলেও এলাকার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে। আম বাগানে কিভাবে পরিচর্যা করতে হয় এ নিয়ে বিস্তারিত জানালেন উপজেলার পরৈকোড়া গ্রামের আমচাষি শিশির কুমার দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আমের মুকুল আসা অবস্থায় ছত্রাকজনিত নানা রোগের আক্রমণে ফলন ব্যাহত হতে পারে। এসব ছত্রাকজনিত রোগের একটি হচ্ছে শুকনা ক্ষত রোগ। মুকুল বা ফুল এ রোগে আক্রান্ত হলে তা কালো হয়ে ঝরে পড়ে। আমের মুকুলে এ রোগের আক্রমণ হলে সব মুকুল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এ সময় ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহার করে রোগ দমন করা যায়। এক্ষেত্রে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে ঔষধ মিশিয়ে গাছের, মুকুল ও ডালপালা ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। এতে করে আমের ফলন ভালো পাওয়া যাবে। উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরওয়ার আলম জানান, গ্রামবাংলায় গৃহস্থ বাড়িতে কয়েকটা আমগাছ থাকেই। কিন্তু এর পরিচর্যা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় কারো গাছে মুকুল আসে তো ফল হয় না, কারো আবার ফল পাকার আগেই ঝরে পড়ে যায়। আসলে ভালো আম পেতে যতœ নিতে হবে বছরভর। অন্যান্য ফলের মতো আম বাগানেও নানা সমস্যা দেখা যায়। এসব সমস্যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণই প্রধান। তবে সঠিক সময়ে, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বালাইনাশক ব্যবহার করলে আমের ফলন কমে যাওয়ার আশংকা অনেকটাই কমে যায়। এজন্য চাষিদের সুবিধার্থে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের কৃষি পরামর্শ কেন্দ্রে ফুট পাম (স্প্রে মেশিন) রাখা হয়েছে। সেখান থেকে চাষিরা নিয়ে ব্যবহার শেষে আবার ফিরিয়ে দেন। এছাড়াও কৃষি মাঠ কর্মকর্তারা চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা করে থাকে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, এবার শীত কম, তাপমাত্রা বেশি। এজন্য আগাম আমের মুকুল এসেছে। ঘন কুয়াশা বা শৈত্যপ্রবাহ নামলে এসব মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখনো তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। তবে আবহাওয়া শেষপর্যন্ত এমন থাকলে আমের ফলন ভালো হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ