Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছদ্মবেশে ভুয়া পুলিশরা নানা অপরাধ করছে

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধূলো দিয়ে ছদ্মবেশে ভুয়া পুলিশরা নানা অপরাধ করছে। একের পর এক অপরাধের ঘটনায় দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের দায়ে গত পাঁচ বছরে পুলিশের ৫০৪ জনকে চাকরিচ্যুত অথবা বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্বতন্ত্র সদস্য আব্দুল মতিনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, অপরাধীরা তাদের অপরাধের ধরণ বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন করে থাকে। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধূলো দিয়ে নিজেদেরকে ছদ্মবেশে রেখে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের মতো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। এ বিষয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী আরো জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত কিছু সংখ্যক প্রতারক গোষ্ঠীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া পুলিশের জন্য নির্ধারিত পোশাক ও হ্যান্ডকাফ খোলাবাজারে বিক্রি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদেরকে তাদের ব্যবহৃত পোশাকের সাথে নিজস্ব আইডি কার্ড ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সরকার দলীয় এমপি মো. শওকত চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের দায়ে গত পাঁচ বছরে পুলিশের ৫০৪ জনকে চাকরিচ্যুত অথবা বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, থানায় জিডি করতে গেলে কর্মরত কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে টাকা আদায় করে এ কথাটি সত্য নয়। এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে অনুসন্ধান সাপেক্ষে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পুলিশের ৬১ হাজার ৯০১ জন সদস্যকে লঘুদ- এবং ৩ হাজার ৬০০ জনকে গুরুদ- দেয়া হয়েছে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- বিদ্যমান নেই। বর্তমান সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এই সরকার কোনোভাবেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- সমর্থন, অনুমোদন, অনুসমর্থন অথবা উৎসাহিত করে না।
মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট না থাকায় ভবিষ্যতে আরও জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীতে ৫০ হাজার পদ সৃজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে সব জেলার সাংগঠনিক কাঠামোতে থানা, তদন্ত কেন্দ্র ও ফাঁড়িসহ বিভিন্ন পদবীর ৪১ হাজার ৪২২টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে। অবশিষ্ট পদ সৃজনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্বতন্ত্র সদস্য আব্দুল মতিনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, অপরাধীরা তাদের অপরাধের ধরণ বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন করে থাকে। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধূলো দিয়ে নিজেদেরকে ছদ্মবেশে রেখে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের মতো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে। এ বিষয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী আরো জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত কিছু সংখ্যক প্রতারক গোষ্ঠীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া পুলিশের জন্য নির্ধারিত পোশাক ও হ্যান্ডকাফ খোলাবাজারে বিক্রি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদেরকে তাদের ব্যবহৃত পোশাকের সাথে নিজস্ব আইডি কার্ড ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- সমর্থন করে না
ওয়ার্কার্স পার্টির বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে কোন বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- বিদ্যমান নেই। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এই সরকার কোনভাবেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সমর্থন, অনুমোদন ও অনুসমর্থন অথবা উৎসাহিত করে না। আইনসংগত দায়িত্ব কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে কোনরূপ ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম রিফাত আমিনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতার খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ- কার্যকর করতে গঠিত টাস্কফোর্স সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পলাতক ছয় খুনীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি রয়েছে। ইন্টারপোল সদস্যভুক্ত সকল দেশের এনসিবিকে বিদেশে পলাতক এসব খুনীদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, বঙ্গবন্ধুর খুনী এ এম রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং অপর খুনী এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীর অবস্থান কানাডাতে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকায় এই দুই খুনীকে ফেরত আনতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনা ত্বরান্বিত করতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ল-ফার্ম নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশের ঘুষ আদায়
‘সাধারণ মানুষ থানায় জিডি করতে গেলে কর্মরত কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করে। অনেক ক্ষেত্রে ভিকটিমকে নাজেহাল করে’ বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরীর এমন প্রশ্নের সত্যতা অস্বীকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ মানুষ থানায় জিডি করতে গেলে কর্মরত কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করে; তা সত্য নয়। এমনকি ভিকটিমকেও নাজেহাল করা হয় না। এরকম কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে অনুসন্ধান সাপেক্ষে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ