Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মেহেদীর রঙ না মুছতেই লাশ হলো কনস্টেবল নীলা

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : মেহেদীর রঙ না মুুছতেই লাশ হলো পুলিশ কনস্টেবল নীলা (২২)। লাল শাড়ি পড়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসার মাত্র ২৫ দিনের মাথায় সাদা শাড়ি পরে বেরিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। পুলিশের চাকরি নিয়ে সৃষ্ট স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। গত রোববার সন্ধ্যায় মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দী গ্রামে এই নারী হত্যাকাÐটি সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার পর নীলার স্বামী রুবেল মিয়া পালিয়ে গেছে। পুলিশ তার শ্বশুর জালাল উদ্দিন, দেবর হিমেল ও কবিরকে আটক করেছে। পুলিশ কনস্টেবল আয়েশা আক্তার নীলা মনোহরদী উপজেলার হাফিজপুর গ্রামের কাজী মফিজ উদ্দিনের কন্যা। সে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিল। নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে, একই উপজেলার তারাকান্দী গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী রুবেল মিয়া ও আয়েশা আক্তার নীলার মধ্যে দীর্ঘ দেড়বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ১ বছর পূর্বে দুজনের মধ্যে আংটি বদল হয়। এরপর থেকেই নীলাকে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিতে রুবেল ও তার পরিবারের লোকজন চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। কিন্তু নীলা চাকরি ছাড়তে রাজী না হওয়ায় তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে দেরি হয়। গত ১ জানুয়ারি রুবেল মিয়া মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে নীলাকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসার নির্দেশ দেয়। নীলাও তার কথামত ২২ জানুয়ারি ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। পরদিনই রুবেল মিয়া, নীলাকে জানায় তার বাবা-মা তাকে দেখতে চায়। পরে নীলা রুবেলের কথামতো তার বাড়িতে যায়। সেখানে যাবার পর রুবেলের পরিবারের লোকজন গোপনে জোরপূর্বক রুবেল ও নীলার বিয়ে পড়িয়ে দেয়। বিষয়টি জানার পর নীলার বাবা মফিজ উদ্দিন তার মেয়ে এবং জামাতাকে আনতে গেলে রুবেলের স্বজনরা তাতে বাধা দেয়। এতে নীলার বাবা ফিরে আসতে বাধ্য হন। দু’দিন পর পুনরায় চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং শারীরিকভাবে নীলার ওপর নির্যাতন করে তার স্বামী রুবেল মিয়া। এই ঘটনা নীলা মোবাইল ফোনে তার পিতা ও ভাইকে অবগত করে। নীলার পিতা মফিজ উদ্দিন জানান, তার মেয়ের স্বামী এবং তার পরিবারের লোকজন তাকে চাকরি ছাড়তে কয়েকদিন শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে বলে নীলা তাকে ফোনে জানিয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যায় জামাতা রুবেলের পার্শ্ববর্তী চাচাতো ভাই আতিক হোসেন তার মোবাইলে ফোনে জানায় যে, নীলা তার স্বামীর বাড়িতে মারা গেছে। খবর পেয়ে সে তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ে নীলাকে উঠানে মৃত অবস্থায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। পরে সে ঘটনা অবগত হয়ে জানতে পারে যে একই দিন পুলিশের চাকরি ছাড়তে রাজী না হওয়ায় তার স্বামী রুবেল মিয়াসহ পরিবারের লোকজন তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে পিতা মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে স্বামী রুবেল মিয়া, দেবর কবির হোসেন, সোহাগ, হিমেল ও শ্বশুর জালাল উদ্দিন, শাশুড়ি জরিনা ও আতিকুল ডাক্তার এবং আরো ৪/৫জনকে বেনামে আসামি করে মনোহরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ