রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে পৈতৃক জমির হিস্যা চাওয়ায় ইউপি সদস্য ও তার ভাইয়ের সহযোগিতায় বৃদ্ধা মাকে ছেলেরা নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছেলে ও তাদের লোকজনের নির্যাতনে আহত বৃদ্ধা সাজেদা খাতুনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃদ্ধাকে ফেরাতে এসে গুরুতর আহত হয়েছেন ইবনে মাসুম নামের এক ভাতিজা। গত শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার এক নম্বর সদর ইউনিয়নের মাঝিয়াকান্দি গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর সাত মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে এক ছেলে মারা গেছে। দুই ছেলে হারুন অর রশিদ ও মঞ্জুর রশিদ বোনেদের হিস্যা না দেয়ার পাঁয়তারা করে একশত আশি শতক (আঠার কাঠা) জমি মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়ে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা লুৎফুর রহমান লতিফের কাছে। শামীমা বেগম জানান, তার দুই ভাই হারুন ও মঞ্জু তাদের সম্পত্তি না দিতে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে লীজ দিয়ে দেয়। এতে তারা বাঁধা দিয়ে তাদের হিস্য বুঝিয়ে দিতে চাপ দেন। ওই অবস্থায় গত শনিবার সকালে সালিশের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা হানিফের উপস্থিতিতে সালিশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু উত্তেজনা তৈরি হলে বিষয়টি মিটমাট না করে চলে যান ইউপি চেয়ারম্যান। পরে তার ভাইয়েদের সাথে বাক বিত-া শুরু হয়। শামীমা বেগম আরো জানান, ভাইয়েদের তাদের সাত বোনের জমি দেয়ার চাপ দিলে ভাইয়েরা দিতে রাজী হচ্ছিল না। ওই অবস্থায় তাদের মা সাজেদা খাতুন মেয়েদের জমি দিয়ে দিতে বলে। জুলেখা বেগম জানান, বাকবিত-ার এক পর্যায়ে তাদের ভাইয়েরা তাদের মারতে উদ্যত হয়। ওই সময় তাদের ভাই হারুন ও মঞ্জুর পক্ষে ইউপি সদস্য লতিফ ও তার ভাই হাবিবুর রহমান লাঠি নিয়ে দৌড়ে আসে। হাবিব লাঠি দিয়ে মারতে এলে তার মায়ের বুকে ও হাতে আঘাত পায়। এতে তার মা ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ দৃশ্য দেখে তাদের মাকে বাঁচাতে ছুটে আসে ইবনে মাসুম। ইবনে মাসুম বলেন, তার চাচিকে ফেরাতে গেলে ইউপি মেম্বার লতিফ তাকে প্রথমে ধরে। তার পর মেম্বারের ভাই হাবিব ও তার দুই চাচাতো ভাই হারুন ও মঞ্জু মারধর করে। মেম্বার নিজে তাকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতও করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠায়। ময়মনসিংহ হাসপাতালে নেয়ার পথে বৃদ্ধা সাজেদা খাতুনের মা জুলেখা জানায়, তাদের ভাই তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে ইউপি মেম্বার সহ লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে। মাকে গুরুতর আহত করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। এদিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ওই ঘটনায় আরো তিনজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃদ্ধা সাজেদা খাতুনের দুই ছেলে হারুন অর রশিদ ও মঞ্জুর রশিদ এবং ভাতিজা একরাম হোসেন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে হারুন ও একরামের অবস্থা গুরুতর। হারুন অর রশিদ দাবি করেন, তার চাচাতো ভাই মাসরুলসহ অন্যরা এবং বোনেরা তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লুৎফুর রহমান লতিফ বলেন, ফিসারি করার জন্য তিন বছরের চুক্তিকে হারুন ও মঞ্জুর কাছ থেকে ১৮০ শতক জমি লীজ নিয়েছেন। কিন্তু তাদের বোনেরা কাজে বাধা দেয়ায় মারা মারির ঘটনা ঘটে। বোনেরা মা ও ভাইদের নির্মমভাবে মারধর করেছে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে মিথ্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তিনি কাউকে মারধর করেননি। বৃদ্ধার ছেলে মঞ্জুর রশিদ বলেন, মায়ের অনুমতি নিয়ে জমি মেম্বারের কাছে লীজ দিয়েছেন। কিন্তু বোনেরা এসে বাধা দিয়েছে। বোনেদের পক্ষ হয়ে তাদের চাচাতো ভাইয়েরা তাদের উপর হামলা করে মারধর করেছে। ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা (হানিফ) বলেন, ভাই-বোনদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় তিনি মীমাংসার জন্য যান। কিন্তু বোনেরা ভাইদের লীজ দিতে রাজী হচ্ছিল না। ওই অবস্থায় তিনি পরবর্তী সময়ে বসে আলোচনা করে বিষয়টি মিটমাট করে দেবেন বলে চলে আসেন। কিন্তু পরে মারামারি হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।