Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনার টিনাবস্তির ১০ ঘর ভাঙচুর করে দখলের অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এটিএম রফিক, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীর দেবেন বাবু রোডের সরকারি জমির ওপর অবস্থিত টিনাবস্তির অন্তত ১০টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে রাতের আঁধারে। মহানগর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। জবর দখলের উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ওরা দীর্ঘদিন মাদক বিকিকিনির সাথে জড়িত। চিহ্নিত ওইসব মাদক বিক্রেতাদের অতিষ্ঠে এলাকাবাসী জর্জরিত। এলাকার সার্বিক শৃঙ্খলার রক্ষার্থে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে দাবি তাদের। গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, টিনাবস্তিতে কয়েকটি ঘরের ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেক ঘরের টিনের চালা ও দরজা নেই। এমনকি ইটের ওয়ালও ভেঙে দিয়েছে কে বা কারা। আবার অনেক ঘর উচ্ছেদ করে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। বস্তির ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, বস্তির ঘর ও জমি দখলের চেষ্টা করছেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি চ ম মুজিবুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মোল্যা ফারুক ইসলামের বিরুদ্ধে। উচ্ছেদ হওয়া ঘরের মালিকরা হলেন জাহিদ শেখ, রাবেয়া খাতুন, নাসিমা খাতুন, ফকরুল, রোকেয়া বেগম, রুকসানা বেগম, সুলতানা বেগম, জামিলা বেগম, পারুল বেগম ও সালামা বেগম। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর পক্ষে মো. জাহিদ শেখের মেয়ে লিজা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ফারুক মোল্যা, অলি শেখ, প্রিন্স কালু, সাইদ, জমির মিয়ার নেতৃত্বে অজ্ঞাত আরও ৮০/৯০জন মিলে হামলা চালিয়ে ১১টি পরিবারের ঘর-বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এঘটনায় নিকটস্থ সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলেও অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। বস্তিবাসীরা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে ৫৫টি পরিবার প্রায় এক বিঘা জমির ওপর গোলপাতার ঝুপড়ি বেঁধে বসবাস করতো। জমিটি পোল মুন্সির নামক একজন খিস্টান ধর্ম যাজক জমিটি দান করেছিলেন। পরবর্তীতে সরকার জমিটি নিয়ে নেয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সেখানে হতদরিদ্র্যদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করে দেন তৎকালীন স্পীকার এড. শেখ রাজ্জাক আলী। এরপর থেকে নিয়মিত ডিসিআর কেটে পরিবারগুলো এখানে বসবাস করছে। আওয়ামী লীগের নেতারা সকলেই দখলের বিষয়ে অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ২০নং ওয়ার্ডে মাদক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. গাউসুল আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মাদক বিক্রেতা উচ্ছেদের বিষয়ে কোন ধরনের সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ তাদের। মাদক প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ফারুক ইসলাম গতকাল টিনাবস্তিতে দাঁড়িয়েই বলেন, মাদক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে মাদক বিক্রেতাদের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরসাথে এলাকাবাসী সকলেই একমত। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে এলাকায় মিছিল বের হয় বলে জানান তিনি। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি চ ম মুজিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বস্তির কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিল। তাদের কয়েকবার নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা মাদক বিক্রি বন্ধ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদের অভিযোগে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট। কেসিসি’র স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আযম বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য আমাকে মাদক বিরোধী কর্মকা-ে আহ্বান করা হয়নি। তবে আমি সর্বসময়ে মাদকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মমতাজুল হক বলেন, টিনাবস্তি দখলের ঘটনায় কেউ মামলা করতে আসিন। তবে বিষয়টি আমি পুনরায় তদন্ত করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ