Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোদাগাড়ীতে সক্রিয় মাদক সিন্ডিকেট ধ্বংসের পথে হাঁটছে যুবসমাজ

| প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পথগুলো দিয়ে ব্যাপকহারে দেশে অনুপ্রবেশ করছে হেরোইন, ফেনসিডিল, দামি মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। ফলে যুবসমাজ অকালে ধ্বংস হচ্ছে। ভারত থেকে চোরাই পথে আনিত হেরোইন, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা প্রভৃতি মাদকদ্রব্য বিষবাষ্পের মতো ছড়িয়ে দিচ্ছে মাদক সিন্ডিকেট। এসব মাদক সিন্ডিকেট। মাদক পাচারের সব চেয়ে নিরাপদ রুটগুলো হলো গোদগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়া দহ, মানিকচক, কানাপাড়া, চাঁপাইনবাবগজ্ঞ সদর উপজেলার কোদালকাটি, আলাতুলি, ঝাইলাপাড়া, ক্লাবঘাট প্রভৃতি এলাকা। ভারত থেকে হেরোইন, ফেনসিডিল, মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য পাচার করে নিয়ে আসে নিজ বাড়ীতে কিংবা টাকার বিনিময়ে অন্যের বাড়ীতে রাখেন, সে গুলো কোন স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা পড়–য়া ছাত্রছাত্রী, গরুর রাখাল, সুন্দরী কিশোরী, গৃহবধূর মাধ্যমে পদ্মা নদীর এপারে গোদাগাড়ী পৌরসভার সিএন্ডবি, গড়ের মাঠ, মাদারপুর, হাটপাড়া, রেলওয়ে বাজার, কুঠিপাড়া, শিবসাগর, বারুইপাড়া প্রভৃতি এলাকার বাসাবাড়ীতে রেখে রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, চিটাগাং, কুমিল্ল­াসহ দেশের বিভিন্ন ¯া’নে পাচার করা হয়ে থাকে। মাদকদ্রব্য পাচার, ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত রয়েছে শত শত নানা ধরনের মানুষ। মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানি পণ্য পাচার ক্রয়-বিক্রয় তাদের একমাত্র পেশা। বেসরকারী এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত ২৫ বছরে গোদাগাড়ী উপজেলাসহ পৌরসভা এলাকার ৫ শতাধিক ব্যক্তি মাদকদ্রব্যের ব্যবসা করে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন এবং লাখপতি হয়েছেন কয়েক হাজার। তাদের অবস্থান এখন সমাজের শীর্ষে স্থানে। কেউ কেউ কালো টাকার ছড়াছড়ি করে নির্বাচনে প্রভাব খাটিয়ে হয়েছেন চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার, কাউন্সিলার, রাজনৈতিক দলের তথাকথিত প্রভাবশালী নেতা, কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। সংগত কারণে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাদকদ্রব্য সেবন করে অকালে মারা গেছে, শাতাধিক মাদকসেবী। আর মৃত্যুর প্রহর গুনছেন কয়েক হাজার মাদকসেবী। এই সব চোরকারবারীর গডফাদারেরা নিয়োগ করেছেন শত শত এজেন্ট। উপজেলার খেয়াঘাট ছাড়াও তারা ব্যবহার করছেন প্রাইভেট নৌকা, কার, মাইক্রো হোন্ডা, মোবাইল ফোন, ভারতীয় সিম এবং তাদের ভারতীয় এজেন্টদের নিকট রয়েছে বাংলাদেশী সিম যাতে সহজে অল্প খরচে সহজে কথা বলা যায়। ওই সব মাদক চোরা কারবারীর গডফাদারেরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোবাইল সিম ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় বিজিবি চঁঁঁাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সীমান্তবর্তী আলাতুলি, কোদলকাটি এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সীমান্ত ডি.এম.সি চর আষাড়িয়াদহ প্রভৃতি এলাকায় কেজি কেজি হেরোইন, হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল আসামিসহ আটক করেন থানায় মাদক আইনে মামলা দেন। ওই সব মাদক সম্রাটদের মাদকের মালিক হিসেবে আসামি করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আসামিদের পক্ষে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেন বলেই তারা পার পেয়ে যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা সব সময় অসৎ জনপ্রতিনিধি, অসৎ রাজনৈতিক নেতা, পাতিনেতাদের হাত করে চালার চেষ্টা করে, অনেক সময় নিজেকে ক্ষমতাশীন দলের লোক বিভিন্ন মহলে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন নিজেকে প্রশাসনের লোকদের নিকট থেকে নিজেকে আড়াল করতে। গোদাগাড়ী পৌরসভা ও উপজেলায় ভাল ভাল জায়গায় আলাতুলি, কোদালকাটি, চর আষাড়িয়াদহ এলাকার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা মাটি কিনে রাজকীয় বাড়ী তৈরি করেছেন এবং প্রধান প্রধান বাজারে দোকান কিনে কথিত মোবাইল দোকান, গার্মেন্স, জুতা স্যান্ডেলের দোকান করেছেন। কিন্তু ওই সব দোকানে মূলত মালিক কোন সময় আসেন না, অন্য লোক দিয়ে সারা বছর চালানো হয়। ওই সব কথিত দোকান ও বাড়ীর আড়ালে চালানো মাদক ব্যবসা। গোদাগাড়ী পৌরসভা ও উপজেলায় ভাল ভাল জায়গায় আলাতুলি, কোদালকাটি, চর আষাড়িয়াদহ এলাকার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা মাটি কিনে রাজকীয় বাড়ী তৈরি করেছেন এবং প্রধান প্রধান বাজারে দোকান কিনে কথিত মোবাইল দোকান, গার্মেন্স, জুতা-স্যান্ডেলের দোকান করেছেন। কিন্তু ওই সব দোকানে মূলত মালিক কোন সময় আসেন না, অন্য লোক দিয়ে সারা বছর চালানো হয়। ওই সব কথিত দোকান ও বাড়ীর আড়ালে চালানো মাদক ব্যবসা। রাজশাহী-১ আসনের এমপি সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরী আইন শৃঙ্খলার সভায় একাধিক বার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন গোদাগাড়ীতে যে কোন মূল্যে মাদক ক্রয় বিক্রয় বন্ধ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লি­ষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা চোরাচালানী, মাদক সম্রাটরেরা দেশ, জাতি, সমাজের শত্রæ। এরা যুবসমাজকে ধ্বংস করছে, কোন কোন পরিবারকেও গ্রাস করে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে। দেশ, যুবসমাজ, বাঁচাতে হলে প্রথমে যে কোন মূল্যে মাদক চোরাকারবারী বন্ধ করতে হবে। গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি হিপজুল আলম মুন্সী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহতভাবে চলছে, তারা যত শক্তিশালী হউক না কেন তাদের কোনভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। গোদাগাড়ীর তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ী বীর দাপটে চলাচলা করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ