Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবস্থাপনার অভাবে সবকিছু থাকলেও নেই কার্যক্রম

দুপচাঁচিয়া উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি

| প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটির শুধুমাত্র সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সবকিছু থাকলেও কার্যক্রম নেই বললেই চলে। বই আমাদের অবসরের সঙ্গী। বই মানুষের চিত্তবিনোদনের নির্মল উপাদান। অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনার অনন্য উপায় হচ্ছে বই। কেননা বই হচ্ছে জ্ঞানের প্রতীক। বইয়ের সঙ্গে যার যত বেশি সম্পর্ক তার জ্ঞানের গভীরতা ততই প্রখর। সমাজের জ্ঞানীদের আলাদা একটি মর্যাদা আছে। আর আছে বলেই সমাজ ব্যবস্থা এখনো অতটা অধঃপতিত হয়নি। মানব জীবনে বইয়ের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কেননা বই হচ্ছে মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ প্রকাশ মাধ্যম। তারই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রশাসন বিকেন্দ্রীয়করণের সাথে সাথে ১৯৮৪ সালে উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটি স্থাপিত হয়। উপজেলা প্রশাসন চত্বরে একটি বিশাল কক্ষ নিয়ে এই লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু হয়। সু-সজ্জিত লাইব্রেরিটিতে শুরুতেই প্রায় ১ হাজার ৮শ বিভিন্ন প্রকার বই স্থান পায়। এরমধ্যে গল্প, উপন্যাস, কবিতাসহ এইচএসসি ছাত্রছাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বইও ছিল। শুরুতেই লাইব্রেরিটির পাঠকদের মাঝে বেশ সাড়া জাগায়। যুবকসহ অনেকেই জ্ঞান চর্চার একটি বড় মাধ্যম হিসেবে এই লাইব্রেরিটিকে বেছে নেয়। অনেক স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও অবসরে লাইব্রেরিতে ছুটে আসে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পদাধিকার বলে সভাপতি নিয়োগ করে একটি শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে খÐকালীন একজন শিক্ষক লাইব্রেরিটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। কোন এক সময় উপজেলা পরিষদে স্থান সঙ্কুলন না হওয়ায় নতুন অফিসগুলোর কার্যক্রম উক্ত লাইব্রেরিতেই চলতে থাকে। ফলে লাইব্রেরির কাজকর্ম ভাটা পড়ে। পরবর্তীতে প্রশাসন চত্বরে নতুন ভবনে অফিসগুলো স্থানান্তরিত হলেও প্রায় ১৫ বছর যাবত লাইব্রেরিটির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ সময় লাইব্রেরির অনেক মূল্যবান বইপত্র পোকায় খেয়ে ফেলেছে। আসবাবপত্রগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে স্থানীয় মাদ্রাসার লাইব্রেরিয়ানকে লাইব্রেরিটির খÐকালীন লাইব্রেরিয়ানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজকে সভাপতি ও অধ্যক্ষ আবুল বাসারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট লাইব্রেরিটির পরিচালনা কমিটি রয়েছে। কমিটি কাগজ-কলমের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকলেও লাইব্রেরিটির কার্যক্রম প্রায় নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে লাইব্রেরিটির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল বাসার “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, লাইব্রেরি সংলগ্ন মুক্ত ড্রেন যাওয়ার কারণে প্রসাবের গন্ধে লাইব্রেরিটির পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। যা বর্তমানে বই পড়ার স্বাস্থ্যসম্মত জায়গাও নয়। লাইব্রেরিটি অন্যত্র স্থানান্তরিত করলে তা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। উপজেলা লেখক সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক মন্টু জানান, মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে লাইব্রেরির বিকল্প নেই। লাইব্রেরি হচ্ছে সব সভ্যতার উন্নতির সেতুবন্ধন তিনি দুপচাঁচিয়ার এই পাবলিক লাইব্রেরিটি পুনরায় চালুর দাবি জানান। এ দিকে এই ভাষার মাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় লাইব্রেরিটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে প্রস্তাব এলে সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ পুনরায় লাইব্রেরিটি চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ