যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
মোঃ আলতাফ হোসেন : কারাতে বা মার্শাল আর্টের উৎপাত্তির সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা তিব্বত থেকে আদি কারাতের উৎপওি। কারাতের জনক হিসেবে প্রধানত ডঃ স্যার ডিগারো কানোকে ধরা হয়। তবে ব্রুসলিকে আধুনিক মার্শাল আর্ট-এর জনক বলে অভিহিত করা হয়। তিনি ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মার্শাল আর্টের ওস্তাদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর সিনেমার অনেক কলা-কৌশল রেখে গেছেন, যা যুগ যুগ ধরে মার্শাল আর্ট অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ব্রুসলি ছাড়াও জ্যাকি চান মার্শাল আর্টের ওস্তাদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সিনেমা করেছেন, যা যুগ যুগ ধরে মার্শাল আর্ট শিক্ষার্থীদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। মূলত কারাত, কুংফু মার্শাল আর্ট যে নামেই ডাকি না কেনো মূল তফাৎ ও উদ্দেশ্য একই। প্রিয় পাঠক ‘আত্মরক্ষায় কারাতে’ ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ পর্বে আজ থাকছে ‘ উরুনকি’।
উরুনকি....
উরুনকি শুরু করার পূর্বে ঠিক আগের মতোই ছালাম, বো এর পর কিবাডাসির মাধ্যমেই ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষার্থী যখন প্রশিক্ষণ নিবে তখন পা দুটি ভি পজিশনে দাঁড়াবে এবং দু’হাতে দু’পায়ের পাশে থাকবে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায়। এর পর ডান হাতে ছালাম দিবে বাম হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমড়ের পাশে থাকবে। ছালাম শেষ হলে ডান হাত আবার কোমড়ে চলে আসবে। শিক্ষার্থীরা মনে রাখতে হবে ছালাম দেওয়ায় সময় হোইস শব্দের মাধ্যমে কার্যক্রম চলবে। এর পর ভি পজিশনে থাকা পা দুটি কিবাডাসী পজিশনে চলে আসবে। কিবাডাসী অর্থাৎ দুপা ফাঁক করে হাঁটু ভাঙ্গা অবস্থায় কোমড়ে পাশে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় হাত থাকবে। সেই সাথে বডি সোজা অবস্থায় থাকবে। এর পর পূর্বের সোডনসখী, দোসখী , লাইজুইক, ১০/১৫/২০ বার করে নিলে ভাল হয়ে। কারণ কারাতে প্রশিক্ষণের জন্য নিয়মিত নতুন লেসনের সাথে পূর্বের লেসন যোগ করে নিলে ভাল হয়। কারণ একজন প্রশিক্ষণার্থী যত বেশি প্র্যাক্ট্রিজ করবে সে তত দক্ষও কৌশলী হবে। আর সেই সাথে তার দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। এর পর উরুনকী তার পূর্বে যখন মারবে কিবাডাসী থাকা অবস্থায় হাত কোমড়ের দুপাশে থাকবে। উরুনকি মারার সময় প্রথমে ডান হাতে মারবে এর পর বাম হাতে। কোমড়ে থাকা হাত দুটির মধ্যে ডান হাতে যখন প্রশিক্ষণার্থী উরুনকী মারবে তখন বাম হাত কোমড়ের পাশে থাকবে আর বাম হাতে উরুনকি মারবে বাম। হাত কোমড়ের পাশে থাকবে। ডান হাতে উরুনকি মারার সময় কোমড় থেকে ডান হাত ঘুরে মুষ্টিবদ্ধ হাতটি কপালের বরাবর থাকবে। মুষ্টিবদ্ধ হাতটি কপার থেকে একটু ফাঁক থাকবে ২/৩ ইঞ্চি। হাতের তালুতে যে আঙ্গুলগুলো মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় আছে সেটা কপালের বাহিরে দিকে থাকবে। আর কপালের ভেতর এর থাকবে দিকে তার বিপরীত অংশ। ডান হাতে উরুনকি মারার সময় বাম হাত কোমড়ের পাশে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় থাকবে। আবার একইভাবে বাম হাত অর্থাৎ ডান হাত যেভাব উরুনকী মারা হয়েছিল ঠিক এককই কায়দায় বাম হাতে উরুনকি মারতে হবে। বাম হাতে উরুনকী মারার পর ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমড়ের পাশে থাকবে। প্রশিক্ষণার্থীরা যখন এভাবে প্র্যাকটিজ করবে তখন হোইস শব্দের মাধ্যমেই করতে হবে। এভাবে উরুনকী ১০/২০ বা এর অধিক বার অনুশীলন করা যেতে পারে। প্রশিক্ষণার্থীরা যত বেশি অনুশীলন করবে ততো বেশি তার দক্ষতা ও নৈপুন্য বৃদ্ধি পাবে। উরুনকী প্রশিক্ষণে কয়েকটি কার্যকারিতা রয়েছে। তার বেশ মধ্যে এটা রাজুতে শক্তি বৃদ্ধি করে সেই সাথে হাতে কজি¦র ও শক্তি বৃদ্ধি হয়। এটা প্র্যাকট্রিজ মাধ্যমে শুধু হাতের ও কজি¦র শক্তিই বৃদ্ধি হয় না হাতে ও কজি¦ স্টুং হয়। এছাড়া ও ব্লকিং এ ও এর বেশ কার্যকারিতা রয়েছে। যেমন একজন প্রতিপক্ষ যদি ছুরি কিংবা লাঠি দ্বারা মাথায় আঘাত করতে চায় তখন উরুনকীর মাধ্যমেই প্রতিহত করা সম্ভব। প্রতিপক্ষ ছুরি বা লাঠি দ্বায় যখন মাথায় আঘাত করার জন্য চেষ্টা করে তখন ব্লকিং এর মাইলফলক হিসেবে কাজ করে থাকে। যখন সে উরুনকীর মাধ্যমে ব্লকিং করবে আঘাত হাতে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে তখন প্রতিপক্ষের আঘাত হতে নিজেতে রক্ষা করতে পারবে। সেই সাথে প্রতিপক্ষকে সে আক্রমণ করার সুযোগ পাবে। এভাবে নিয়মিত উরুনকী প্র্যাকটিজের মাধ্যমে একদিকে যেমন শারীরিক সৌন্দর্য কিংবা গঠন বৃদ্ধি করে। সেই সাথে একজন প্রশিক্ষণার্থী হয়ে ওঠে আরো কৌশলী। বৃদ্ধি হতে থাকে তার কারাতে প্রশিক্ষণের স্কীলগুলো। এ ছাড়াও উরুনকীর অনুশীলনের মাধ্যমে দুই হাতের সমান দক্ষতা বৃদ্ধি হয় এবং কজি¦র ও বাহুর শক্তি বৃদ্ধি হতে থাকে। একজন ভাল প্রশিক্ষণার্থী যখন নিষ্ঠার সাথে উরুনকীসহ কারাতের প্রতিটি লেসই মনোযোগসহ কারে নিয়মিত অনুশীলন করে তখন তার একদিকে যেমন শরীর ও স্বাস্থ্য অটুট থাকে অন্য দিকে তার প্রতিটি কাজেই আনন্দদায় হয়।
একজন ভাল কারাতে ম্যান কখনো সামাজিক কোনো অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকতে পারে না। সে সামাজিকভাবে একটি সুন্দর জীবন লাভ করতে পারে এবং দেশের কল্যাণজনক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারে। আজকাল কারাতের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে শিশু-কিশোররা। প্রচ- প্রতিযোগিতামূলক বিশে^ বাচ্চাদের আরো যোগ্য প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে তোলার দিকে নজর দিচ্ছে অভিভাবক মহল। মাঠের স্বলতার কারণে কম্পিউটার গেমসই বাচ্চাদের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠেছে। তথ্য-প্রযুক্তি উন্নতির বিকাশ ঘটার ফলে মেধায় শাণিত হলেও খেলাধুলার অভাবে শারীরিকভাবে অপরিশ্রমী হয়ে ওঠছে এখনকার বালক-বালিকা, কিশোর-কিশোরী বা তরুণ-তরুণীরা। তাই তাদেরকে খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার প্রয়োজন। আর এ ক্ষেত্রে কারাতে হতে পারে একটি উত্তম ক্রীড়া। (চলবে)
লেখক ঃ সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ, কারাতে কোচ ও
চেয়ারম্যান গ্রীণ ক্লাব, মানিকগঞ্জ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।