Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলনবিলের ১৬ নদীর বুকে এখন মৎস্য খামার ও ফসলি জমিতে চাষাবাদ

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আফতাব হোসেন, চাটমোহর (পাবনা) থেকে : চাটমোহরসহ চলনবিলের ১৬টি নদী এখন মৎস্য খামার ও ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় সকল নৌপথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষিকাজে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। কালের বিবর্তনে শত বছরের ঐতিহ্যধারী চলনবিল আজ মরা বিলে রূপান্তরিত হচ্ছে। মহাসড়ক নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ, কালভার্ট, ¯øুইচগেট, ক্রসবাঁধ ও দখল-দূষণসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কারণে ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে এ বিল। শুকিয়ে গেছে প্রবাহিত নদীগুলো। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নানা প্রতিক‚ল পরিবেশের কারণে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে এর আয়তন। বিলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার ১৬টি নদী করতোয়া, ইছামতি, গুমানী, গোমতী, আত্রাই, ভদ্রাবতী, গোহালা, বড়াল, নন্দকুজা, গাড়াদহ, কাকন-কানেশ্বরী, সরস্বতী, মুক্তাহার, গোহালা, ঝবঝবিয়া, ফুলজোড় নদী ছিল চলনবিলের প্রাণ, কিন্তু ধীরে ধীরে এসব নদীর অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। সেইসাথে বিলুপ্তির পথে চলনবিলের দেশীয় প্রজাতির মৎস্য সম্পদ। এক সময় বিলের মাছ দেশর চাহিদা মিটিয়েও ভারতে রফতানি করা হতো। অন্যদিকে প্রভাবশালী ভ‚মিগ্রাসীরা জাল দলিল তৈরী করে দখলে নিয়েছে কয়েক হাজার একর জমি। উপজেলা ভ‚মি অফিসের রেকর্ড থেকে জানা গেছে, চলনবিলের ১০টি উপজেলার আবাদযোগ্য বেশির ভাগ খাসজমি ও জলাশয় এখন প্রভাবশালীদের দখলে। নদীগুলোতে এখন আবাদ হচ্ছে বোরো, গমসহ নানা ফসল। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গঠনকালে চলনবিলের আয়তন ছিল প্রায় ১ হাজার ৮বর্গ কি.মি.। এই বিলে রয়েছে ৩৯টি উপবিল, ৪ হাজার ২৮৬ হেক্টর আয়তনবিশিষ্ট ছোট-বড় ১৬টি নদী এবং ১২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ২২টি খাল। ২২টি খালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ নিমাইচড়া খাল, নবীর হাজির জোলা, বেশানীর খাল, হক সাহেবের খাল, উলিপুর খাল, গুমানী খাল, কুমারভাঙ্গা খাল, গাড়াবাড়ি খাল, জানিগাছার জোলা, কিনু সরকারের ধর ও সাত্তার সাহেবের খাল। এগুলো এখন মৎস্য খামারে পরিণত হয়েছে। ২৫ বছর আগেও চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এসব নদ-নদীতে বছরজুড়েই ৬-১২ ফুট পানি থাকত। ফলে সারা বছরই নৌচলাচল করত। কিন্তু বছরের পর বছর পলি জমে এসব নদী ভরাট হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ, ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব ও ১৯৮০’র দশকে পদ্মার উৎসমুখে অপরিকল্পিত ¯øুইসগেট নির্মাণের ফলে চলনবিলের বিভিন্ন নদ-নদী ও বিল, জলাশয়, খালগুলো পলি জমে ক্রমে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া বিলের মাঝ দিয়ে যথেচ্ছভাবে সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট, নদী দখল করে বসতি ও দোকানপাট স্থাপন করায় নদীগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, চলনবিল ও এর উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোকে রক্ষা করতে সরকারের দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। নইলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চল মরুভ‚মিতে পরিণত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ