রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : সেই এক বছর আগে হটাৎই উধাও হয়ে যায় মা আলপনা। তারপর তিনি আর ফিরে আসেননি। কিন্তু মা আসবেনই এমন বিশ্বাস নিয়ে ছোট্ট দুই ভাই-বোন পূজা ও নিলয় পথের দিকে চেয়ে থাকে। প্রতি রাতে তারা মায়ের জন্য কেঁদে বুক ভাষায়। তবুও মা ফিরে আসে না। এর মধ্যে বাবা আবার বিয়ে করেছেন। ফলে তাদের জীবনটা যেন কেমন অচেনা হয়ে গেছে। সৎ মা নয়, তাদের জন্মদাত্রী মাকেই চায় তারা। বাবার কাছে এই একটিই দাবি তাদের। কিন্তু বাবা কিছুই বলেন না। ফলে কেঁদেই বেলা কাটে তাদের। কোথায় গেলে মাকে পাবে সেটাই বুঝতে পারছে না শিশু দুটি। অবুঝ এ দুই শিশু পূজা ভারতী (১৪) ও নিয়ল ভারতী (১১)র বাড়ি সীতাকুন্ডের ছোটদারোগারহাটে। তারা ঐ এলাকার প্রবাসী দিলীপ ভারতীর সন্তান। জানা যায়, ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে হটাৎই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান দিলীপের স্ত্রী আলপনা ভারতী। এ ঘটনার পর থানায় একটি জিডি দায়ের করা হয়। সেসময় আলপনার মোবাইল ট্র্যাকিং করে পুলিশ জানতে পারে চকরিয়া থানার বি.এম চর ইউনিয়নের মোহাম্মদ রাশেদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। এই সূত্রে রাশেদের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আলপনা তার হাত ধরে ঘর ছাড়ে বলে ধারণা করা হয়। এ ঘটনার পর পুলিশের পরামর্শে আলপনা, রাশেদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা হলে পুলিশ রাশেদকে গ্রেফতার করে সীতাকুÐ থানায় নিয়ে আসে। থানায় রাশেদ পুলিশের কাছে আলপনাকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকারও করে। কিন্তু এরপরও পুলিশ আলপনাকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আতœগোপনে চলে যান রাশেদ। এরপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আলপনার সন্ধানে পাগলের মতো হয়ে যায় তার মা প্রভা অধিকারী ও ভাই সঞ্জয় অধিকারী। তারা বারবার পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে, চকরিয়া থানায়, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বহু দফতরে হন্য হয়ে ঘুরেছেন। কিন্তু আলপনার কোনো সন্ধান মেলেনি। চকরিয়ার এক ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে জানান, আলপনা রাশেদকে বিয়ে করে সংসার করছেন। কিন্তু একথারও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ফলে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তার বৃদ্ধা মা প্রভা, দুই অবুঝ শিশু সন্তান, ভাইসহ স্বজনরা। তারা সবাই অন্তত আলপনাকে একটি বার দেখতে চান। এই দাবিতে প্রশাসনের সাহায্য চেয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন তার মা প্রভা অধিকারী। এসময় উপস্থিত ছিল, আলপনার দুই শিশুসন্তান পূজা ভারতী ও নিলয় ভারতী, ও ভাই সঞ্জয় অধিকারী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে কাঁদতে থাকেন বৃদ্ধা মা প্রভা ও ভাই সঞ্জয়। তারা বলেন, আলপনা যদি স্বেচ্ছায় চলে গিয়ে রাশেদের সাথে সংসার করে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা আমরা তার মুখ থেকেই শুনতে চাই। আমরা মামলা করার পর রাশেদ ও তাদের লোকজন বহুবার আলপনাকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা বললেও সামনে আনতে পারেননি। এমনকি রাশেদের বাড়িতে লোক পাঠিয়েও আলপনার কোনো হদিস মেলেনি। ফলে প্রেমের সম্পর্ক করে নিয়ে যাওয়ার পর আলপনাকে কোনো পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে নাকি তাকে খুন ধর্ষণের মতো মর্মান্তিক কোনো ঘটনা তারা ঘটিয়ে বসেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে তারা মানসিকভাবে দারুণ হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা আলপনাকে উদ্ধারের জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্তত দুটি অবুঝ সন্তানকে তাদের মা ফিরিয়ে দিতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা চান তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।