Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কালভার্টের রেলিং ভাঙায় ঝুঁকিতে পথচারী ও যানবাহন

| প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ব্যস্ততম সড়কের কালভার্টের রেলিং ভেঙে রড বেড়িয়ে পড়েছে। একই কালভার্টের মাঝে মাঝে আস্তর ওঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। এতে উভয় পাশের রেলিংয়ের প্রায় পুরোটাই ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করছেন। এমনই চিত্র পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নগরপাড়া খালের ওপর নির্মিত একটি কালভার্টের দৃশ্য। সূত্রে জানা যায়, কালভার্টটি দীর্ঘ ৮ বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে মানুষ মারার ফাঁদে পরিণত হলেও মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে ওই এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৭ হাজার জনসাধারণ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন এ কালভার্টটি। স্থানীয়রা জানান, ওই ব্রিজটি ৮ বছর আগে সিমেন্টের ঢালাইগুলো খসে জরাজীর্ণ অবস্থা ধারণ করলেও স্থানীয় প্রশাসন এর দিকে অদৃশ্য কারণে নজর দিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ব্রিজটি জরাজীর্ণ হয়ে চলাচলা অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। জানা যায়, প্রতিদিন ওই ব্রিজ দিয়ে বালুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খামারপাড়া দারুল উলুম ইসলামিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও মাঝিনা মৌজার আহম্মদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থী, নারী, বৃদ্ধরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয়রা আরো জানান, কালভার্টটির রেলিং মেরামত না করায় প্রতিনিয়তই যানবাহন খালে পড়ে যাচ্ছে। এতে যানবাহন ও চলাচলরত মানুষজন হতাহত হচ্ছেন। এদিকে একা কোনো পথচারী কালভার্টটি দিয়ে হেঁটে গেলেও ব্রিজটি কেঁপে উঠতে দেখা গেছে। ফলে লোকজন অতিরিক্ত ওজনের মালামাল নিয়ে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে ভয় পাচ্ছেন। নগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চর্তুথ শ্রেণীর ছাত্র তামিম ইকবাল বলেন, আমাদের এই কালভার্টটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া লাগে। তখন ভয়ে আৎকে ওঠি এই বুঝি তা ভেঙে পড়ে যাবে। পিরুলিয়া গ্রামের শীতল চন্দ্র সরকার বলেন, আমাগো পোলাপান স্কুলে যায়, আমরা বাজারে যাই এ ব্রিজ দিয়া। কোন সময় যে কালভার্টটি ভাঙ্গিয়া যায় কেডা জানে। ব্রিজ নতুন করে করলে করবে না হলে ভাইঙ্গা লাইবে। আমরা নৌকা দিয়াই পাড়ামু। বালুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ গোপাল সরকার বলেন, ওই কালভার্টটি দিয়া প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসে। ব্রিজটির আবস্থা খুবই খারাপ। একটা দুর্ঘটনা হয়েই যেতে পারে, তাই শিগগিরই ভেঙে দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। খামারপাড়া দারুল উলুম ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা আবু হানিফ সাহেব বলেন, কালাভার্টের ওই পাড়ের শিশুরা প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে। অনেকের পিতা-মাতা এসে এগিয়ে দিয়ে যায়। বর্ষার সময় এটির খুটিগুলো স্রোতের সময় কাঁপতে থাকে। দীর্ঘদিনের পুরাতন এ কালভার্টটিকে সংস্কার না করায় স্থানীয়দের ক্ষোভের শেষ নেই। এদিকে মাদকসেবীরা রড চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। একজন মানুষ হেঁটে গেলেও নগরপাড়া-দেইলপাড়া খালের ওপর কালভার্টটি কেঁপে ওঠে। অথচ প্রতিদিনই পাঁচ টন ওজনের ট্রাকে মাল বোঝাই করে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা। যেকোনো সময় তা ভেঙে অথবা রেলিং দিয়ে গাড়ি খালে পড়ে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় লোকজন জানান, নির্বাচন এলে প্রতিযোগীরা প্রতিশ্রæতি দিলেও পরে পাস করে কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। ৫ নং ওয়ার্ডের নগরপাড়া, খামারপাড়া, বাঘবাড়ি, দেইলপাড়া, নয়ামাটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ও গ্রামের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এ কালভার্টটি পুনঃনির্মাণের দাবি জানান তারা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন জানান, চনপাড়া হতে নগরপাড়া সড়কের কাজ চলছে। এর সাথে নগরপাড়া খালের ওপর কালভার্টটিও সংস্কার করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ