Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভাষা শহীদদের আজো সম্মাননা দেয়নি বাংলা একাডেমি

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ আতিকুল্লাহ, (ময়মনসিংহ) গফরগাঁও থেকে : মহান একুশে ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে শোকাবহ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে। মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সেদিন যারা ঢাকায় রাজপথে শহীদ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ময়মনসিংহের কৃতি সন্তান ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার অন্যতম। একুশের দ্বারপ্রান্তে এসে দেশ বিদেশে গভীরভাবে স্মরণ করছে সেই সব শহীদদের যাদের আত্মহুতির বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীনভাবে মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। শহীদ দিবস আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘভুক্ত পৃথিবীর সকলদেশে ২১ ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে বিপুল শোকাবহ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে।
ভাষা সৈনিক শহীদ আবদুল জব্বারের জন্মস্থান ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ৬নং রাওনা ইউনিয়নের বর্তমান গ্রাম জব্বার নগর (সাবেক পাচুঁয়া গ্রাম)। বিগত ২০০৭-২০০৮ ইং সনের তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে গ্রামের নাম বদল করে রাখা হয়েছে জব্বার নগর। সেই গ্রামে সরকারীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার ব্যয়ে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থগার কাম স্মৃতি যাদুঘর। পাঠাগারে ১ জন কেয়ার টেকার সরকারীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রায় তিনবছর তিন মাস আগে দ্বিতীয় দফা লাইব্রেরীয়ান নিয়োগ দেয়া হয়। পাঠাগারটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে হলেও পাঠক সংখ্যা তেমন বাড়েনি। প্রতিদিন গড়ে ২০/৩০ জন পাঠক হয়ে থাকে। প্রচার-প্রসার কম থাকায় কারণে পাঠক বাড়েনি। পাঠাগার চালু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত রাখা হতো। কিন্তু গত প্রায় সাড়ে চার বছর যাবত জাতীয় পত্রিকায় বিল ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ পরিশোধ না করার ফলে বর্তমানে পাঠকরা দৈনিক পত্রিকা পড়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে। রুপালী ব্যাংক লিঃ গফরগাঁও শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে এত উন্নতমানের পাঠাগার আমি কোনো দিন দেখিনি। এখানে আরও বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের আরও বই থাকায় প্রয়োজন। গফরগাঁও বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এমদাদুল হক (ইন্তু) জানান, বহুদিন পরে হলেও এ গাঁয়ের সন্তানের নামে সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে পাঠাগার করেছে বলে আমরা গর্বিত। গফরগাঁও সরকারী কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর মোঃ আমির হোসেন জানান, বিশেষ করে ভাষা সৈনিক শহীদ আবদুল জব্বারের নিজ ইউনিয়নের সরকারীভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কাজ করা দরকার। তিনি বলেন, গফরগাঁওয়ে জব্বারের জন্মস্থানে একমাত্র সরকারীভাবে পাঠাগার ছাড়া তেমন কিছু করা হয়নি। নানান দিকে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে গফরগাঁও উপজেলা।
ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল জানান বাংলা একাডেমি ভাষা শহীদদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে এখন পর্যন্ত বাংলা একাডেমি সম্মাননা দেয়নি বা এমনকি তাদেরকে দাওয়াত পর্যন্ত দেয়া হয় না। তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তরে তৃতীয় শ্রেণীতে বাংলা বইয়ে ভাষা শহীদ সম্পর্কে কিছু লেখা হয়েছে। প্রথম শ্রেণী হতে উচ্চতর ডিগ্রী পর্যন্ত সকলস্তরে ভাষা শহীদদের জীবনী পাঠ্যপস্তকে অন্তভুক্ত করা দরকার। এ ছাড়া স্মৃতি বিজরিত গফরগাঁও উপজেলায় শহীদ জব্বারের নামে একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান। ১৯৭৩ ইং সনে সরকারীভাবে ঢাকায় তেজকুনিপাড়ায় সাড়ে ৫ শতাংশ জমি শহীদ আবদুল জব্বারের পরিবারকে দেয়া হয়। এ জমিতে বহুতল ভবন করার জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে ঢাকা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এখন পর্যন্ত অনুমোদন দিচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ