Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষি খামারে সাফল্যের হাসি

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : চাকরি পছন্দ নয় মিরুর। ছোটকাল থেকেই স্বপ্ন নিজের পায়ে দাঁড়ানো। সেই থেকে পথ চলা তার। যশোর সিটি কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এর আগে যশোর শহরে কাটে অনেকটা সময়। ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করেও বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত নন তিনি। তাই ফিরে আসেন নিজ গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দক্ষিণ লংকারচর গ্রামে। ওই গ্রামের এম এ খালেকের ছেলে মোস্তফা তারেক মিরু। প্রকৃতির টানে সখের বসে নিজ গ্রামেই ১২০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন সমন্বিত কৃষি খামার। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সবুজ বৃক্ষরাজি আর বিভিন্ন প্রজাতির ফসলের সমারোহ ঘটেছে খামার এলাকায়। খামারের ভেতরে উন্নত জাতের ৪০টি গরু, ৫০টি যমুনাপাড়ি ও বøাকবেঙ্গল ছাগল, ৩৫টি রাজ হাঁস, খাকি ক্যাম্বেল হাঁস ৫০টি এবং শতাধিক কবুতরের ঘর। এগুলো দেখাশোনার জন্য বেশ কয়েকজন লোক নিয়োজিত রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। আর পুরো বিষয়টি তদারকি করেন মিরু। এর পাশাপাশি মৎস্য চাষ, ফলজ বাগান ও মাঠ ফসল উৎপাদনে তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রায় ৪ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে মাছের ঘের। সেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চিংড়ি, তেলাপিয়া ও সাদা মাছের চাষ হয়। ৭ একর জমিজুড়ে রয়েছে সহস্রাধিক বিভিন্ন জাতের আম গাছ এবং দু’শতাধিক অন্যান্য ফলজবৃক্ষ। এছাড়াও খামারের চারদিকে চাষ হচ্ছে বোরো ধান, মুশুর, খেসারি, মুগ, মটর, সরিষা। এ বিষয়ে খামার মালিক মোস্তফা তারেক মিরু এ প্রতিবেদককে বলেন, মূলত এলাকার টানে প্রকৃতিকে ভালোবেশে ইট-পাথরের শহর ছেড়ে গ্রামে চলে আসি। ২০০৮ সাল থেকে এ খামারের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৪ সালে এসে খামারটির নামকরণ করি “আর কে ফিসারিজ এন্ড এগ্রো লিমিটেড। ওই বছরেই বিশ্বব্যাংকের অঙ্গসংগঠন এফএও থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সমন্বিত এ খামারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে এখানে নিয়মিত এবং অনিয়মিত ২৬ জন শ্রমিক কাজ করছে। সমস্ত খরচ-খরচা বাদে প্রতি বছরে এখান থেকে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা লাভ হচ্ছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আগামীতে মধুমতি নদী তীরবর্তী ১২০ বিঘা জমির উপর এ খামারটি পর্যটন এলাকায় পরিণত করতে পারব। এতে করে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে এখানে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, খামারটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হলেও মোস্তফা তারেক মিরু’র এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তার এ সমন্বিত খামারটি থেকে যে পরিমাণ মাছ, দুধ, মাংস এবং বিষমুক্ত ফল উৎপাদন হচ্ছে তা এলাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছে। আমরা খামারটি উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ