Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোয়ালমারীতে পৃথক সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক বাড়ি-ঘর ভাঙচুর-লুটপাট আহত ৩০

| প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের গঙ্গানন্দপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে হাবিবর মোল্যা ও জাহাঙ্গীর মোল্যার গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর গ্রæপের ইদ্রিস মোল্যা, তাহাজ্জদ মোল্যা, আলেয়া বেগম ও আছাদ মোল্যাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাবিবর গ্রæপের বাদশা মোল্যা, রতন মোল্যা, হিমায়েত মোল্যা ও মজিবর মোল্যাকে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে মজিবরের অবস্থার অবনতি হলে রাতে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে হাবিবর জানান, পিকনিকে যাওয়া নিয়ে জাহাঙ্গীর সমর্থক রাসেল শরীফের সাথে কামরুল মোল্যার কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। জাহাঙ্গীর জানান, কী কারণে মারামারি হয়েছে জানি না। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি বলে জানা গেছে। অপরদিকে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বনচাকী গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার এক মেয়েসহ কমপক্ষে ২০ জন মহিলা আহত হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা যায়, বনচাকী গ্রামে ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জালাল সিকদার ও একই গ্রামের নান্নু মৃধার সাথে গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে নান্নু মৃধার পক্ষের বিধবা হাসিনা বেগমের দুইটি ছাগল জালাল সিকদারের পক্ষে ইমামুলের ফসলের ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগে ইমামুল ছাগলের পা ভেঙে দেয়। এর জের ধরে নান্নুর পক্ষের রেজাউল ইমামুলকে চড়-থাপ্পড় মারে। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন সন্ধ্যার আগে জালাল সিকদারের পক্ষের দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নান্নুর বাড়িসহ ৩০টি বাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে ও লুটপাট করে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ করেছে। এ সময় বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় মহিলাদের এলোপাথাড়ি মারধর করে। হামলায় আহত নান্নু মৃধার স্ত্রী রেহেনা বেগম জানান, জালাল সিকদারের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। অপর আহত রউফ গাজীর স্ত্রী রেখসোনা বেগম জানান, তার বাড়ি থেকে দুইটি ছাগল লুট করে নিয়ে গেছে। এসময় তাকে মারধর করা হয়। প্রতিবেশী মোহাম্মদ গাজীর বাড়ি থেকে কয়েক মণ ধান লুট করে নিয়ে গেছে। এর রেষ ধরে গতকাল বুধবার সকালে নান্নু মৃধার পক্ষের শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জালাল গ্রæপের মুক্তিযোদ্ধা হিরু মৃধার বাড়িসহ ২০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তার মেয়ে মিরা রামদার কোপে আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধা হিরু মৃধা জানান, নান্নু মৃধা কয়েক দিন আগে আমার এক মেয়েকে মারধর করেছে। আমি ইউএনও বরাবর অভিযোগ দেয়ায় তারা আবার এ ঘটনা ঘটালো। হামলাকারীরা তার বাড়ি থেকে ১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৩০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন। পাল্টাপাল্টি হামলার ব্যাপারে জালাল সিকদার বলেন, নান্নু মৃধা মাঝে মধ্যে আমার লোকজনকে মারধর করে। গ্রামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। আমি এ হামলার সাথে জড়িত নই। নান্নু মৃধা মোবাইলে জানান, জালাল সিকদার অন্যায়ভাবে তার লোকজন নিয়ে এ হামলা চালায়। মুক্তিযোদ্ধা যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি ঘটনার কোনো কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে থানার এসআই মো: সহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। মতিয়ার নামে একজনকে আটক করে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তিনি জানান, থানায় কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ