রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে বোয়ালখালী খালের ওপর নির্মিত সেতু কোনো কাজে আসেনি এলাকাবাসীর। দীর্ঘ ৫ বছরেও যান ও জনচলাচল সচল করতে না পারায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে দু’পারের হাজার হাজার মানুষ। ফলে মান্ধাতার আমলের মতো এখনো পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে এখানকার মানুষকে। বোয়ালখালী-পটিয়া সংযোগ সেতুর বোয়ালখালী অংশে সড়কের সাথে সংযোগস্থলটি ঠিক না করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু ৫ বছরে জনগণের কোনো উপকারে না আসায় এলাকাবসী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দুর্নীতিকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী। জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর বহুল পরিচিত আটতলা দরগাহ ঘেঁষে দক্ষিণে বোয়ালখালী খাল। এর ঠিক ওপারে রয়েছে পটিয়া উপজেলার করণখাইন-মুকুট নাইট গ্রাম। বোয়ালখালী খালের দু’পাড়েই ঘনবসতিপূর্ণ জনবহুল এলাকা হলেও স্বাধীনতাপূর্ব থেকে প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দু’পারের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় পারাপার হতো। এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা ভেবে স্থানীয় এক বিত্তশালীর উদ্যোগে বোয়ালখালী-পটিয়া যোগাযোগ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বাঁশের সাকো থেকে লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয় এ সেতুটি। এভাবে দীর্ঘদিন চলারপর এলাকাবাসীর দাবির মুখে গত বিএনপি সরকারের শেষের দিকে সেতুটি নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ নেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা প্রায় ৭০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেন। পরবর্তীতে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ঠিকাদাররা এটি নির্মাণে অনাগ্রহ প্রকাশ করে চলে যায়। ফলে এ নির্মাণ প্রকল্পটির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে। এভাবে দীর্ঘদিন পড়ে থাকলেও এ নিয়ে কেউ কাজ করেনি। অবশেষে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি মঈন উদ্দিন খান বাদল এ সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরের সাথে যোগাযোগ করে পূর্বের বরাদ্দকৃত ৭০ লাখ টাকার সাথে আরো প্রায় ৪১ লাখ টাকা যোগ করে মোট ১ কোটি ১১ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নযোগ্য করে তোলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০১০ সালে এ সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন মঈনউদ্দিন খান বাদল এমপি। সেতুর কাজ পরবর্তী বছর ২০১১ সালের শুরুতে শেষ করে জনচলাচলের জন্য উপযোগী করে দেয়ার কথা থাকলেও যথাযথ তদারকি ও দেখভালের অভাবে ২০১২ সালের শেষের দিকে এসে ১৬০ ফুট দীর্ঘ ২২ ফুট প্রস্থ এ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। তবে কাজ সমাপ্তির ৫ বছরেও জনচলাচলের জন্য উপযোগী করতে না পারায় এলাকাবসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার মুর্দারিস আলহাজ মাওলানা মাহবুবুল আলম কাদেরী বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলের সহযোগিতায় ২০১২ সালের দিকে বোয়ালখালী-পটিয়াবাসীর মধ্যে সহজ যোগাযোগের লক্ষ্যে সেতুটি নির্মাণ করলেও বোয়ালখালী অংশের যোগাযোগ ও সংযোগ সড়ক ব্যবস্থা ভঙ্গুর হওয়ায় ৫ বছরেও কোনো কাজে আসছে না কোটি টাকার এ সেতুটি। ফলে সেই মান্ধাতার আমলের মতো এখানো পায়ে হেঁটে পারাপার ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। ফলে এলাকার শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চাকরিজীবী পুরুষ-মহিলা, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমেনি একটুও। এখানকার ইউপি সদস্য মো. শহিদুল আলম বলেন, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির বোয়ালখালী অংশে সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন না করায় এ ভগ্নদশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ২০১৪ সালের দিকে পটিয়ার সাংসদ তাঁর এলাকা পটিয়া অংশে সেতুর সাথে সংযোগের কাজ সম্পন্ন করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বোয়ালখালী অংশ রয়েছে গেছে অবহেলিত। ফলে এলাকাবাসী এখনো এর সূফল ভোগ করতে পারছে না। অথচ এ সামান্য কাজের জন্য প্রতিনিয়ত এখানকার শত শত মানুষকে যেমন প্রায় ১০ কিলোমিটার পথঘুরে পটিয়া মহকুমায় যেতে হয়, ঠিক তেমনি এর চেয়ে আরো বেশিপথ পাড়ি দিয়ে ওখানের মানুষকে আসতে হয় বোয়ালখালীতে। তাই বোয়ালখালীবাসী এ সমান্যতম সংযোগ সড়কটি উন্নয়রপূর্বক যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার দাবি জানান। জানতে চাইলে বোয়ালখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাশেদুল আলম বলেন, সেতুটি যান ও জনচলাচলের উপযোগী করতে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। আশা করি আগামী জুনের মধ্যে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে পারব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।