Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলা ভাষার কদর এবং শফিক রেহমানের ভ্যালেন্টাইন্স ডে

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোবায়েদুর রহমান : দুই মাস হলো অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছি। মনে হলো, অস্ট্রেলিয়ার ওপর কিছু লিখি। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো, পৃথিবীজুড়েই বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আছেন। তারা ব্রিটেনে আছেন, আমেরিকায় আছেন, সৌদি আরবে আছেন, পাকিস্তানে আছেন, অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। প্রবাসীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসকারী তাদের আত্মীয়স্বজনরা ওইসব দেশ সম্বন্ধে কম-বেশি জানেন এবং নিয়মিত খবর পাচ্ছেন। তবে পরিসংখ্যান নিয়ে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক বা রেসিডেন্টের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। পরিসংখ্যান থেকে আরো দেখা যায়, বর্তমানে পাকিস্তানে বসবাস করছেন ২০ লাখ বাংলাদেশি। সৌদি আরবে কর্মরত ১২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক। সমগ্র আমেরিকায় বাংলাদেশিদের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায় না। তবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের সংখ্যা লক্ষাধিক। অবশিষ্ট আমেরিকায় আরও এক লাখ বাংলাদেশি আছেন বলে অনুমান করা হয়। ব্রিটেনে, ২০১১ সালের আদমশুমারি মোতাবেক, বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৪ লাখ ৪৭ হাজার। এই সংখ্যা ২০১৬-তে ৫ লাখে উন্নীত হয়েছে বলে অনুমিত হচ্ছে। এসব দেশের তুলনায় অস্ট্রেলিয়াতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক কম। ২০১১ সালের আদমশুমারি মোতাবেক বাংলাদেশিদের সংখ্যা ২৭ হাজার। পরবর্তীতে আর কোনো আদমশুমারি হয়নি। তবে ২০১২ সালের একটি বেসরকারি শুমারিতে এই সংখ্যা ৫৩ হাজার বলা হয়েছে। ৫৩ কেন, এই সংখ্যাটি হয়তো ৬০ হাজার হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস-ভুগোল নিয়ে কোনো আলোচনা না করলেও এখানকার বাংলাদেশিদের সম্পর্কে দুটি কথা না বলে পারছি না। আমেরিকায় অভিবাসনের নানা পদ ও শ্রেণি আছে। তার মধ্যে একটি বড় শ্রেণি ছিল ডাইভার্সিটি ভিসা (ডিভি ভিসা)। কারা অভিবাসী ভিসা পাবে সেটা লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হতো। হাজার হাজার মানুষ ডিভি লটারির মাধ্যমে আমেরিকায় প্রথমে স্থায়ী বাসিন্দা এবং পরে নাগরিক হয়েছেন। ডিভির মাধ্যমে যারা গেছেন তাদের অধিকাংশই অদক্ষ।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সেই ধরনের কোনো সুযোগ দেয়নি। অস্ট্রেলিয়াতে যারা গেছেন তাদের অধিকাংশই স্কিলড মাইগ্রেশনে গেছেন। সে জন্যই এখানে বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশীয়দের সংখ্যা এত কম। নিউইয়র্কে অন্তত ১০টি সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা রয়েছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে কোনো সাপ্তাহিক পত্রিকার খোঁজ আমি পাইনি। সিডনি থেকে দুটি বাংলা মাসিক পত্রিকা বের হয়। আকৃতি ট্যাবলয়েড। এই দুটি পত্রিকার একটির জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় প্রধান সংবাদ হিসেবে দুটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। জানুয়ারি সংখ্যার শিরোনামÑ “দেশি রাজনীতি বিভক্ত করেছে প্রবাসীদেরও।” ফেব্রুয়ারি সংখ্যার শিরোনামÑ “অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসীদের মধ্যে কমছে বাংলার কদর।” দ্বিতীয় সংবাদে বলা হয়েছেÑ “অস্ট্রেলিয়া প্রবাসে  ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছে বাংলা। বাংলা ব্যবহারের দিক দিয়ে স্কুলগুলোতে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, ঘরোয়া আড্ডায় এরকম প্রতিটি স্থানে বাংলার ব্যবহার কমে আসছে। বাংলা ভাষার যেসব মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন তাদের মধ্যে বাংলার কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় সিডনিসহ বেশ কিছু শহরে বাচ্চাদের বাংলা শেখানোর জন্য রয়েছে বেসরকারি বাংলা স্কুল। বাংলা স্কুলগুলোতে অনেকে আগ্রহ নিয়ে বাচ্চাদের ভর্তি করালেও বেশি দিন রাখছেন না। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য পড়াশোনার চাপ ও বাংলা ভাষা ব্যবহারের অভাবে আগ্রহ হারাচ্ছে বাংলা পড়ার প্রতিও।”
দেখা গেছে, এখানকার প্রবাসীদের ছেলেমেয়েরা অনেকেই বাংলা বলতে পারে না। অনেকে শুধু বুঝতে পারে, বলতে পারে, সামান্যই। আর বাংলা পড়তে পারাদের সংখ্যা তার থেকেও অনেক কম। লিখতে পারে না অধিকাংশ শিশুই। ফলে প্রবাসে যেসব বাংলাদেশি শিশু বড় হচ্ছে তারা কেবল নামেই বাঙালি। কার্যত বাংলা ভাষা সম্পর্কে তাদের ধারণা অত্যন্ত সীমিত। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরের জেনারেশন বাংলা শব্দটিও হয়তো ভুলে যাবে।
মাত্র এক দশক আগেও অস্ট্রেলিয়ার স্কুলগুলোতে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা নিতে পারত শিশুরা। কিন্তু ছাত্রছাত্রীর অভাবে বাংলাকে লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে একাডেমিক্যালি বাংলা ভাষা পড়ার সুযোগ নেই শিশুদের। অস্ট্রেলিয়াজুড়ে মাত্র ৭০ থেকে ৮০ জন ছাত্রছাত্রী আগ্রহ দেখালে পুনরায় বাংলাকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে কঠিন মনে করছেন অনেক অভিভাবক। অনেকে এটাকে কম প্রয়োজনীয় মনে করে বাচ্চাদের বাংলা শেখাচ্ছেন না। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। বাংলা প্রসার, একুশে একাডেমিসহ বেশ কিছু সংগঠন বাংলা নিয়ে কাজ করছে। রয়েছে মেলবোর্নে ‘বাংলা সাহিত্য সংসদ’ নামে একটি সংগঠনও। তবে অভিভাবকদের আগ্রহের অভাবে তাদের প্রচার খুব একটা কাজে আসছে না। আলোচ্য মাসিক পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ৩৯টি ভাষা রয়েছে। তার মধ্যে বাংলার স্থান নেই। অথচ এক সময় বাংলা এই ৩৯টি ভাষার অন্যতম ছিল। এখন ছাত্রছাত্রীর অভাবে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। সপ্তম বৃহত্তম ভাষা হওয়া সত্ত্বেও এখন সেটা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ রিপোর্টে আরো বলা হয়, অনেক অনুষ্ঠান বাংলা ভাষায় হওয়া সত্ত্বেও সেসব অনুষ্ঠানে আগ্রহ থাকে না শিশু ও বাচ্চাদের। ফলে দ্বিতীয় প্রজন্ম বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে বলতে গেলে তেমন কোনো ধারণা রাখে না। বাংলা ভাষার বইপত্র তারা পড়তে না পারার কারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের ধারণা অত্যন্ত অস্বচ্ছ।
প্রতি বছরই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। সিডনিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন, যারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে। ভাষার মাস আসলে এসব সংগঠনের মধ্যে অনুষ্ঠান পালনের আগ্রহ দেখা গেলেও অন্যান্য মাসে বাংলা ভাষার প্রচারে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যায় না। যারা বাংলাদেশে বড় হয়ে অস্ট্রেলিয়া এসেছেন তাদের মধ্যে বাংলা ভাষা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। তারা বাংলা গান শুনতে পছন্দ করেন। বাংলা ভাষার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আগ্রহ নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু তারা এই আগ্রহ তাদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে তৈরি করতে পারছেন না।
॥ দুই ॥
এতক্ষণ ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশিদের মধ্যে বাংলা ভাষার অবস্থান, বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মে বাংলার স্থান সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আগেই বলেছি, অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটি বেশ ছোট। ৬০ হাজার বাংলাদেশিও আছেন অন্তত ৬টি শহরে। এগুলো হলোÑ সিডনি, ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, অ্যাডেলাইড, ব্রিসবেন ও পার্থ। তাসমানিয়া এবং গোল্ডকোস্টেও কিছু বাংলাদেশি আছেন। তবে বাংলাদেশিদের কনসেনট্রেশন সবচেয়ে বেশি সিডনিতে। যাইহোক, এই ক্ষুদ্র বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যেও রয়েছে তীব্র বিভাজন। এই বিভাজন প্রধানত রাজনীতিকেন্দ্রিক। এ সম্পর্কে আলোচ্য পত্রিকা তাদের জানুয়ারি ইস্যুতে প্রধান সংবাদ হিসেবে যে খবর প্রকাশ করেছে তার শিরোনাম হলোÑ “দেশি রাজনীতি বিভক্ত করেছে প্রবাসীদেরও।”
রিপোর্টের এক স্থানে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের রাজনীতি এখন তরুণ সমাজের মধ্যে ঘৃণার পর্যায়ে চলে গেছে। মানুষ রাজনীতিকে এখন বিভক্তির হাতিয়ার হিসেবে মনে করছে। সেই বিভক্তির রেশ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না প্রবাসীরা। পত্রিকাটির মতে, বিভক্তিটি বরং প্রবাসে একধাপ এগিয়ে। বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে বড় দুটি দলের মধ্যে যেমন বিদ্বেষ ও রেষারেষি তার অবধারিত ফল হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও সেই বিভক্তি এবং রেষারেষি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবাসে বাংলাদেশিরা বেশির ভাগ ইস্যুতেই এক হতে পারছেন না। ওই পত্রিকাটি রিপোর্ট দিচ্ছে যে সিডনির সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অধ্যুষিত ল্যাকেম্বায় অবস্থিত ল্যাকেম্বা স্কয়ারের নামটি বাংলাদেশিদের নামে হওয়ার কথা ছিল। সেটিও নাকি বিভক্তির কারণে আর বাস্তবায়িত হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় বড় দুটি দলের রাজনীতির মধ্যে রয়েছে বিভক্তি। হাজার মাইল দূরে এসে যেখানে শুধুমাত্র বাংলাদেশের নামে এক হয়ে কাজ করার কথা ছিল সেটি আর ওই তীব্র বিভাজনের নামে হয়ে উঠছে না। দলের অনেক নেতা-কর্মী এসব বিভক্তিকে প্রবাসেও টেনে এনেছেন। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একত্রে বড় কিছুর আয়োজন করতে দেখা যাচ্ছে না। নিজেরা নিজেদের মতো করে আলাদাভাবে পালন করে যাচ্ছে এই দুটি দল।
বাংলাদেশের মানুষেরা মহান বিজয় দিবসটিও একত্রে পালন করতে সক্ষম হয় না। বিভিন্ন দল বা উপদলগুলো আলাদাভাবে বিজয় দিবস পালন করে। এটাই এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে সকলের কাছে। অথচ সিডনিতে বসবাসকারী অন্যান্য দেশের যে কমিউনিটি আছে তারা তাদের এমন জাতীয় দিবস দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে পালন করে থাকে। পত্রিকাটির রিপোর্টে এরপর বলা হয়েছে, দেশের রাজনীতির বড় দুটি দলের সম্পর্ক এখন শত্রুতার। একটি দল ক্ষমতায় থাকলে অপর দলের মানুষকে গুম, খুন করা থেকে শুরু করে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখে। সেই শত্রুতার রেশ এখন প্রবাসেও এসেছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, সিডনিতে একটি বড় অনুষ্ঠান বা মেলা হলে মানুষ প্রথমে জানতে চায়, এর পেছনে আয়োজককারী বিএনপি নাকি আওয়ামী লীগের লোক? বিএনপির হলে আমাদের কালচার এবং ইতিহাস নিয়ে একরকম ব্যাখ্যা। আর আওয়ামী লীগের হলে অন্যরকম ব্যাখ্যা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে যে, বড় দুটি দলের অনুষ্ঠানে একই ধরনের অতিথি থাকেন। তাদের চোখেও এই বিভক্তি ধরা পড়ে।
॥ তিন ॥
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ সামান্যই জানেন। তাই এ সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করার চেষ্টা করলাম। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স দিবস। এ সম্পর্কেই লেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু স্পেসের অভাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হলো না। তাই সে সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে দু-একটি কথা বলে আজকের আলোচনা শেষ করব।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শফিক রেহমান ১৯৯৩ সালে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ভালোবাসা দিবসের ওকালতি করে দেশ, সমাজ এবং পরিবারের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে সরকারের মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তিনি তৎপর হন। নরনারী, বিশেষ করে দেশের একশ্রেণির যুবক-যুবতীর মানসিক বিকৃতি ঘটিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি, একটি ভালোবাসা মন্ত্রণালয় খোলার জন্যও তিনি জোর ওকালতি করেছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এর আগে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তিনি সরকারের ওপর প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার একটি রাস্তার নামকরণ করেন ‘লাভ লেন’ অর্থাৎ ‘ভালোবাসা সড়ক।’ গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি জাতীয় বাংলা দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এক সংবাদে শফিক রেহমান বলেন, আগামীতে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে এই মন্ত্রণালয় তিনি প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বেন। আর বর্তমান আওয়ামী সরকার যদি তার এই চিন্তাধারা গ্রহণ করে ভালোবাসা মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করে তাহলে আওয়ামী সরকারকে তিনি মোবারকবাদ জানাবেন।
বিএনপি কি জানে যে, তাদের এই নেতা শফিক রেহমান সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরাজমান জেনারেল পারসেপশন কী? সাধারণ মানুষ তাকে দুই নামে জানে। একটি হলো ‘লাল গোলাপ শফিক।’ আরেকটি হলো ‘লারে লাপ্পা শফিক।’ শফিক রেহমানের এই পরিচিতি বিএনপির জন্য খুব সুখকর নয়। অবশ্য এ বিষয়টি বিএনপি অবগত আছে কিনা জানি না। অন্যদিকে আওয়ামী সরকারের অনেক দুঃশাসন এবং অপশাসন সত্ত্বেও শফিক রেহমানের এই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ক্রেজ’ বা ভালোবাসার উন্মাদনায় তারা মত্ত হয়নি। ২০১৬ সালে শফিক রেহমান গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং ৪/৫ মাস জেল খেটেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি ‘স্পিকটি নটের’ খাঁচায় স্বেচ্ছাবন্দিত্ব বরণ করেছেন। অন্যথায় এবার অর্থাৎ ২০১৭ সালে অশীতিপর বৃদ্ধ হয়েও ভালোবাসার উন্মত্ততায় তিনি দাপিয়ে বেড়াতেন। তার স্বেচ্ছানির্বাসন বাংলাদেশের মানুষকে বাঁধনহারা উত্তাল উন্মাতাল প্রেমের জোয়ার থেকে রক্ষা করেছে।



 

Show all comments
  • শুভ্র ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৭ পিএম says : 0
    এই দু'টি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য মোবায়েদুর রহমান সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • ফজলুল হক ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩০ পিএম says : 0
    পাকিস্তানের মত আমাদের দেশেও ভ্যালেন্টাইন্স দিবস পালন নিষিদ্ধ করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • সেলিম ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩২ পিএম says : 0
    তরুণ সমাজকে এই অপসংস্কৃতি থেকে বের করে আনতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Ahsan Patwary ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩৬ পিএম says : 0
    Valentina's​ day or বিশ্ব ভালবাসা দিবস একটি বিজাতীয় অপ-সাংস্কৃতি। আল্লাহ্‌র রাসুল সাঃ বিজাতীয়দের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ্‌ আমাদের এসব থেকে দুরে থাকার তওফিক ফরমাও, আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Murtaza Aman Galib ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৪৬ পিএম says : 0
    ১৪ ফেব্রুয়ারি কে ভালোবাসা দিবস না বলে অশ্লীলতা দিবস ঘোষনা করা উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • এনামুল ইসলাম মনির ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৫১ পিএম says : 0
    মুসলিম দেশে এই রকম ভালোবাসা মানায় না?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ