Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কর্মবিরতি পালন করেছে লাইটার শ্রমিকরা

কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটে পণ্য খালাস বিঘিœত

প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সরকার ঘোষিত বেতন-ভাতার দাবিতে গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছে লাইটার শ্রমিকদের একাংশ। এতে করে কর্ণফুলীর ১৬টি ঘাটে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত মাদার ভেসেল থেকে পণ্য পরিবহনও বিঘিœত হচ্ছে। গতকাল বহির্নোঙরে পণ্যবাহী ৫৩টি বড় জাহাজ অবস্থান করছিল।
চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারে নৌপরিবহন মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলা হয়েছে, ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাস ও পরিবহনসহ দেশের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করে লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা। লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তলব করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে।
অধিকাংশ জাহাজের মালিক সরকার ঘোষিত বেতন-ভাতা দিচ্ছে জানিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বলেন, একজন শ্রমিক নেতার ইগো সমস্যার কারণে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একটি বৈঠকে লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেনকে না ডাকায় হঠাৎ করেই কর্মবিরতি পালন শুরু করে বলে জানান তিনি।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, আমরা মালিক পক্ষকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। তারা ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়েছে। তাই আমরা সময় দিয়েছি। যারা কর্মবিরতি পালন করছে তারা সঙ্গে আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে থাকলেও তো কর্মবিরতি পালন করতো না। তারা ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শনিবার থেকে শুরু করল কেনো সেটাও আমরা জানি না।
এদিকে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল এক জরুরি বার্তায় তিনি বলেন, শনিবার সকাল থেকে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশ কর্মবিরতি শুরু করে। কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটে ৬০টি লাইটারেজ জাহাজ থেকে ভোগ্যপণ্য, সার ও শিল্পের কাঁচামাল খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে এসব পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।
এ কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদারভেসেল থেকে পণ্য খালাস মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বর্ধিত মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে লাইটারেজ শ্রমিকরা বিগত কয়েক মাসে বারবার কর্মবিরতি পালন করে। ফলে ভোগ্যপণ্য ও কাঁচামাল খালাসের ক্ষেত্রে বিঘœ সৃষ্টি হয় এবং কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস বৃদ্ধি পায়। নৌযান শ্রমিক ও মালিকদের মজুরিসংক্রান্ত দ্বন্দ্বের কারণে পণ্য আটক করে আমদানিকারকদের জিম্মি করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না বলে মনে করেন চেম্বার সভাপতি।   
তিনি বলেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে জাহাজজট, কন্টেইনারজট এবং যানজটের কারণে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে এবং অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিগত কয়েক মাসে বন্দরের কন্টেইনারজট কিছুটা হ্রাস পেলেও নতুন করে শ্রমিক ধর্মঘট সার্বিক পরিস্থিতিকে আবারও বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ