পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : অমর একুশে বইমেলার গতকাল ছিল দশম দিন। ছুটির দিন হওয়াতে বইমেলায় ছিল উপচেপড়া ভিড়। কোথাও তিল ধারণের স্থানটুকুও ছিল না। মেলায় প্রবেশের দীর্ঘ লাইন ছিল প্রবেশ পথ হতে টিএসসি ও দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে। তবু দর্শনার্থীদের মধ্যে দেখা মেলেনি কোনো ক্লান্তির। বরঞ্চ উল্লাস প্রকাশ করতে করতে তারা পার করছিলেন দাঁড়িয়ে থাকা সময়টুকু। নারী-পুরুষ কিংবা ছোট শিশু কারোই কমতি ছিল না গতকালের বইমেলায়। সরকারি ছুটির দিন হওয়াতে নানা ধরণের পেশাজীবী, স্কুল-কলেজ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সবাই এসেছে বইমেলায়। বিক্রেতারাও উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন এত দর্শকের আগমনে। জানালেন বেচাকেনা গত দিনগুলোর তুলনায় আজ অনেক ভালো যাচ্ছে। বইপ্রেমীরা বিভিন্ন স্টল ঘুড়ে দেখছেন পছন্দের বইয়ের খোঁজে। প্রত্যেকের হতেই দেখা যাচ্ছিল বইয়ের ব্যাগ। বিগতদিনের খরা কাটিয়ে কাল যেন সবগুলো প্রাণ এসে মিলেছে এই বইমেলায়। এমনই বক্তব্য স্টলকর্মী ও আগত বইপ্রেমীদের। মেলা ঘুরে দেখা যায়, কাল ছিল স্টলগুলোতে বই বিক্রির সর্বোচ্চ হার। দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। একজনের সাথে কথা শেষ না হতেই আরেক ক্রেতা এসে জানতে চাচ্ছেন তার পছন্দের বইয়ের দাম। অন্যপ্রকাশ, ঐতিহ্য, মাওলা ব্রাদার্স, আগামী প্রকাশনী এরকম পরিচিত প্রকাশনীগুলোর স্টলে ক্রেতাদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে মেলায় পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষবিন্দুতে ছিল হুমায়ূন সাহিত্য। মেলা ঘুরে দেখা যায়, হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের জন্য পরিচিত প্রকাশনী ‘অন্যপ্রকাশ’ ও ‘কাকলী প্রকাশনী’র স্টলে ছিল অন্যান্য স্টলগুলোর চাইতে অনেক বেশি ভিড়। তারাও তাদের প্রকাশিত অন্যান্য বইয়ের চেয়ে স্টলে বেশি সাজিয়ে রেখেছেন হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও সায়েন্স ফিকশনের সংকলনসমূহ। পাঠকদের সুবিধার জন্য এবার তারা হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত গল্প, উপন্যাস ও নানা লেখাসমূহের সংকলন প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লেখা তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বইগুলোও পাঠকদের পছন্দের ক্রমে উপরেই থাকছে।
অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী নুরউদ্দিন বলেন, আমাদের যে বইগুলো বিক্রি হচ্ছে, তার বেশির ভাগই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বই। অন্য লেখকদের বই তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারছে না। পাঠকরা আগের মতোই হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বই কিনছে।
কাকলী প্রকাশনীর প্রকাশক নাসির আহমেদ সেলিম বলেন, যা চলছে তা সবই হুমায়ূন আহমেদের বই। অন্যান্য বইয়ের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ অনেক কমই। আর আমাদের স্টলে মূলত পাঠকরা হুমায়ূন আহমেদের বই কেনার জন্যই আসেন। তার স্ত্রী শাওনের লেখা বইটিও পাঠকরা কিনছেন।
ইডেন মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার নুপুর বলেন, এবারের মেলায় আজ প্রথম আসলাম। দেখে ভালোই লাগছে। হুমায়ুন আহমেদের বই দেখার জন্যই আসা। নতুন কি সংকলন এসেছে তা দেখে গেলাম, পরে এসে কিনব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ ও আমিনুর রশিদ সৈকত বলেন, হুমায়ূন আহমেদের বই কিনব বলেই আজ এসেছি। হিমুসমগ্র ও সায়েন্স ফিকশন সমগ্র সংগ্রহ করলাম আজকে। মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় সম্বন্ধে লেখক সৈয়দ জাহিদ হাসান বলেন, আজকে মেলায় বিগত দিনগুলোর তুলনায় অনেক বেশিই ভিড় দেখা যাচ্ছে। দর্শনার্থীরা বইও কিনছেন প্রচুর।
মেলার পরিচালক ও বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনীর সদস্য গফুর হোসেন বলেন, মেলায় আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা আজ ভালোই। তবে সবাইযে বই কিনছেন এমন না, সবাই বই কিনলে তো স্টলের বই শেষ হয়ে যেত। তবে মেলায় আসাটাও ভালো দিক, দুই-তিন দিন আসলে একদিন বই কিনবেন সবাই। মেলায় কাল নতুন বই এসেছে ৩১৩টি এবং ৪৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।