Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আত্মরক্ষায় কারাতে

| প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো: আলতাফ হোসেন : মার্শাল আর্টস বিধিবদ্ধ অনুশীলনের বিস্তীর্ণ পদ্ধতি এবং যুদ্ধের ঐতিহ্য যেটি বিভিন্ন কারণে অনুশীলন করা হয় যেমন নিজস্ব প্রতিরক্ষা, প্রতিযোগিতা, শারীরিক আরোগ্য এবং সুস্থ, অধিকান্ত মানসিক। শারীরিক এবং অ্যাধ্যাত্মিক উন্নতি। মার্শাল আর্ট পরিভাষাটি ব্যাপকভাবে প্রাচ্যএশীয় লড়াইয়ের কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু লড়াইয়ের পদ্ধতি হিসেবে সূত্রপাত ১৯৫০ সালে ইউরোপে। ১৬৩৯ সালের হস্তাচালিত ইংলিশ অসিক্রীড়াকে তলোয়ার চালানোর ‘বিজ্ঞান এবং কলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরিভাষাটি লাতিন শব্দ থেকে এসেছে। মার্শাল আর্ট হচ্ছে ‘মঙ্গলের কৌশল’ যিনি ‘রোমান যুদ্ধের দেবতা’। কিছু মার্শাল আর্টকে বিবেচনা করা হয়। ‘ঐতিহ্যগত’ যেটি জাতিগত, সাংস্কৃতিক অথবা ধর্মীয়ভাবে পটভূমিতে সংযুক্ত, পক্ষান্তরে অন্যগুলো আধুনিক পদ্ধতি যেগুলো প্রতিষ্ঠাতা বা সমিতির মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেছে। জিৎকুনদো হলো পৃথিবী বিখ্যাত ব্রুসলি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি মিশ্র মার্শাল আর্ট সিস্টেম এবং জীবনদর্শন। অতিদ্রুত বিভিন্ন সিস্টেমের মার্শাল আট হলো জিৎকুনদো। ব্রুসলি বলেন, ‘যুদ্ধ ছাড়া যুদ্ধ আর্ট অথবা শৈলী ছাড়া শৈলী’ হচ্ছে জিৎ ব্রুনদোর মূলভাব। ইপ মান একজন চীনা মার্শাল আর্টিস্ট যিনি ব্রুসলিকে হাতে কলমে কুংফু শিখিয়েছিলেন, ইপ মানের জন্ম চীনের ফোশানে। ইপ মান চান ওয়া শুনের কাছ থেকে উইং চুন শিখেন। ইপমানের মৃত্যু ঘটে ১৯৭২ সালের ২ ডিসেম্বর ২ং হংকংয়ে। মৃত্যুর সময় বয়স ছিল ৭৯ বছর গলার ক্যান্সারে মৃত্যুরবণ করেণ তিনি। ইপ মান ইউং চুন স্টাইলের অন্যতম ধারক ও বাজক। আর জন্ম হয়েছিল ১ অক্টোবর ১৮৯৩ ফোসান, গুয়াংডং চীন।
কারাতের চূড়ান্ত লক্ষ্য তার আংশগ্রহণকারীদের চরিত্রের পরিপূর্ণতার মধ্যে, বিজয় অর্জন বা পরাজিত করা নয়, একজন সৎ ব্যক্তির শিক্ষণ অনেককে প্রভাবিত করতে পারে যা এক প্রজন্ম থেকে শত প্রজন্ম সঞ্চালিত হয়। কারাতে শিক্ষার উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে আজ থাকছে ওয়ার্ম আপ ও দোসাখী।

ওয়ার্মআপ ও দোসাখী
ব্যায়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওয়ার্মআপ। ওয়ার্মআপ এর মাধ্যমে শরীর ও মন দু’টোকেই ব্যায়ামের জন্য তৈরি করা হয়। এর মাধ্যমে ব্যায়ামের ফলে ইনজুরি, মাসেল পুল, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদির হাত থেকে দূরে থাকা যায়। অন্যান্য সুবিধাগুলোর মধ্যে আছে শরীরে ধীরে ধীরে রক্তসঞ্চালন বাড়ানো, শক্তি বাড়ানো, হার্টরেট বাড়ানো, শ^াস প্রশ^াস বাড়ানো, সর্বোপরি শরীরে হঠাৎ কোনো চাপ না দেয়া। মাসলের তাপমাত্রা বাড়লে, মাসেল টিলা ও স্থিতিস্থাপক হবে ফলে মাসেলে আক্সিজেন ও রক্ত সরবরাহ বাড়বে। যা মাসেলে পুষ্টি সরবরাহ করে। তা ছাড়া মাসেলের কাজ করার গতিও বাড়ে ওয়ার্মআপ করার ফলে। অনেকেই ব্যায়াম শুরুর আগে ওয়ার্মআপ করেন না। কিন্তু এটি শরীরের জন্যে খুবই ক্ষতিকর বা বিপদজ্জনক।
মনে রাখবেন, আপনি যদি ঠিকমতো ওয়ার্মআপ না করে ব্যায়াম করেন, তবে আপনার শরীরে ব্যায়াম ঠিকমতো কাজ তো করবেই না উপরোন্ত আপনার শরীরের ক্ষতি হতে পারে। অনেকে ওয়ার্ম আপ না করেই পেটের ব্যায়াম করেন, ওয়েট ট্রেইনিং করেন এরোবিকস করেন, এমনকি দৌড়ান, এতে কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায় না, বরং শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
তাই কিছুক্ষণ ব্যায়ামের পর তার পর ছালাম, বো ও কিবাডাসীর মাধ্যমে ক্লাশ শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের অনুশীলদের মাধ্যমেই দক্ষতা অর্জন করবে এবং সেইসাথে কৌশলী হয়ে ওঠবে এবং প্রতিটি ক্লাশেই সে তার দক্ষতা পারফর্ম করবে, প্রশিক্ষার্থী কিবডাসী থাকা অবস্থায় সোডনসসখী ১০-২০ বার করে নিবে। তার পর দোসখী করার পূর্বে দু হাত মুষ্টি-মুষ্টিবব্ধ অবস্থায় দুপাশের কোমড়ে থাকবে। যখন দোসখী মারবে তখন কোমড়ে থাকা দুই হাত এক সঙ্গে ঘুরে বুক বরারর ঘুসিমারবে। তবে মনে রাখতে হবে মারার সময় কিবাডাসী থাকা অবস্থায় মাথা, ঘাড় মুখ কিছুই সাড়বে না বুক টানটান অবস্থায় থাকবে। এ দোসখী প্রথম দিন ১০-২০ করা যেতে পারে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী তার দক্ষতা ও কৌশল দিয়ে রপ্ত করে নেবে প্রতিটি খবংংড়হ শিক্ষার্থী যত বেশি প্র্যাকট্রিস করবে তত বেশি রপ্ত হবে তার প্রতিটি খবংংড়হ  এর কৌশল । দোসখীতে দুই বাহুর শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে দু’হাতের কব্জিতেও শক্তি বৃদ্ধি হতে থাকে এবং দুহাতেই সমান জোর পায়। দোসখী অর্থাৎ ডবল পাঞ্চ যখন মারবে তখন কোমড়ে থাকা হাত ঘুরে একসাথে বুক বরাবর মেরে রাকবে এবং আবার কোমড়ে চলে আসবে তার দুইহাত। এভাবে দোসখী প্র্যাকট্রিসের মাধ্যমে একজন প্রশিক্ষণার্থী আরো পটু হয়ে ওঠে যদি সে নিষ্টার সাথে খবংংড়হ  গুলো সঠিকভাবে আয়ত্ব করে। নিখুঁতভাবে প্রতিটি খবংংড়হ এর গুরুত্ব সহকারে যে পারফর্ম করবে পরবর্তীতে একসময় সে একমন ভালো কারাতে ম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করবে। তাই একজন ভাল কারাতে ম্যান হওয়ার জন্য চাই কঠোর অনুশীলন। দোসখী প্র্যাকট্রিসের পরবর্তী খবংংড়হ পেতে হলে তাকে সঠিকভাবে দোসখী আয়ত্ব করতে হবে। তবেই পাবে সে প্রশিক্ষকের কাছে পরবর্তী খবংংড়হ. (চলবে)
লেখক ঃ সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ, কারাতে কোচ
ও চেয়ারম্যান মানিকগঞ্জ গ্রীণ ক্লাব



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন