Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : পীরগঞ্জের পৃথক ৮টি স্থানে পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি থামছে না। প্রতি মাসে ১২ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। একটি সংগঠনের আওতাভুক্ত পরিবহন খাত থেকে অপর একটি সংগঠন লাঠিসোটা নিয়ে চাঁদা উত্তোলন করায় রাজশাহীর রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স এ লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে দুটি সংগঠনের শ্রমিকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করায় যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযোগ ও ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, বাংলাদেশ সরকারি গেজেটের বিধি অনুযায়ী অটো টেম্পো, অটো রিকশা (সিএনজি), ট্যাক্সি, বেবিট্যাক্সি, মিশুক ও ট্যাক্সিকাব এসব পরিবহন নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে, যার রেজিঃ নং রাজ-৩০৪০। কিন্তু সংগঠনটি অসহায়, পঙ্গু শ্রমিকদের কল্যাণের নামে কোন টাকাই তোলেনি। অপরদিকে রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং বি-১১৬৩ সংগঠনটির পীরগঞ্জ উপজেলা নেতৃবৃন্দ বাস-ট্রাকের পাশাপাশি বছর খানেক ধরে জোরপূর্বক রেজিঃ নং রাজ-৩০৪০ এর আওতাভুক্ত পরিবহন থেকেও চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। ফলে রেজিঃ নং রাজ- ৩০৪০ এর পক্ষ থেকে শ্রমিক সংগঠন রেজিঃ নং বি-১১৬৩ এর বিরুদ্ধে চাঁদা উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গত বছরের ২০ নভেম্বর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে রাজশাহীর ওই কার্যালয়ের যুগ্ম শ্রম পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে গত ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশ শ্রম আইন মোতাবেক অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের জন্য শ্রমিক সংগঠন ১১৬৩-কে নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও চাঁদাবাজি থামছে না। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রমিক সংগঠন ১১৬৩-এর পক্ষে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, বিশমাইল, খালাশপীর, চতরা, শানেরহাট, গুর্জিপাড়া, মাদারগঞ্জ ও ভেন্ডাবাড়ীতে অটো টেম্পো, অটো রিকশা (সিএনজি), ট্যাক্সি, বেবিট্যাক্সি, মিশুক ও ট্যাক্সিকারসহ ইঞ্জিনচালিত রিক্সা-ভ্যান থেকে ২০ টাকা হারে চাঁদা তোলা হচ্ছে। এতে উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৭শ পরিবহন থেকে ৩৪ হাজার এবং মহাসড়কে বাস থেকে ৫ হাজার টাকা করে প্রতিদিন মোট ৩৯ হাজার টাকা করে মাসে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, লাঠি যার, রাস্তা তার। এখানে কোন আইন মানা হচ্ছে না। পুলিশও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগকারী শ্রমিক সংগঠন (৩০৪০)-এর সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীন বলেন, আমরা শ্রমিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। রেজিস্ট্রেশন থাকা সত্ত্বেও আমরা অসহায় শ্রমিকদের কল্যাণে টাকা তুলতে পারছি না। থানা পুলিশ এবং চিহ্নিত বিশেষ মহল শ্রমিক সংগঠন ১১৬৩-কে টাকা তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। অথচ তারা বিধির বাইরের পরিবহন থেকেও প্রতিদিনই লাঠিসোটা নিয়ে টাকা তুলছে। পীরগঞ্জের পুলিশও ওই টাকার ভাগ নেয়। সংগঠনের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মন্টু বলেন, টাকা তোলা নিয়ে যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য পুলিশ প্রশাসন দায়ী থাকবে। আমরা ওসির কাছে গেলেও তিনি আমাদের কথা শুনছেন না। শ্রমিক সংগঠন ১১৬৩-এর পীরগঞ্জ শাখার সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, আমি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো শুনেছি। আমাদের জেলা নেতা যা বলছে, তাই করছি। ওসি রেজাউল করিম বলেন, আমরা শ্রমিকদের কাছে টাকা নেই না। শুধু রাতে আসামি ধরার জন্য একটি করে সিএনজি নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ