বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। একই সাথে বর্তমান কমিটির আরো চারটি পদ বাড়তে পারে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের ১৫ ও ১৬ দুই দিনব্যাপী নগরের বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করার দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস পরও ‘ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ’ উত্তর ও দক্ষিণের থানা এবং ওয়ার্ডগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।
মহানগর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, প্রথম দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ‘পুষ্পদাম রেস্টুরেন্টে’ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি থানা-ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে নিয়ে বর্ধিত সভা করা হবে। বর্ধিতসভা শেষে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং দ্রুত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনের তিন বছর তিন মাস পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুইভাগে বিভক্ত করে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকার ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের অন্তর্গত ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। যদিও এসব থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল প্রায় ১০ মাস আগে।
এ অবস্থায় গত ২ জানুয়ারি রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদেরকে অবিলম্বে মহানগরের সব থানা, ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মহানগরের অন্তর্গত সব থানা এবং ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি শিগগিরই করতে হবে। এ কমিটিতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নারী কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারীরা সংখ্যায় অর্ধেক, তাই কমিটিতে তাদের গৌণভাবে দেখার সুযোগ নেই। তাই ৩০ শতাংশ নারীসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে নগর নেতাদের। এরপরই মহানগরের এসব থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দাবি করছেন নগর নেতারা।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ-প্রত্যাশীদের বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের নেতারা ইতোমধ্যেই খোঁজ-খবর নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দল ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই দলীয় পদ-পদবী পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তখন দলের অনেক ত্যাগী নেতা অবমূল্যায়িত হন। তাই নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের খোঁজ-খবর নিয়ে কমিটি করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক আমরা ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ অনুযায়ী এ বিষয়ে সবাইকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে।
একই বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদকের (ওবায়দুল কাদেরের) নির্দেশে ওয়ার্ড-থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির তিনটি সভা ও একাধিক বর্ধিত সভা করা হয়েছে। এতে কমিটি গঠন নিয়ে তারা মতামত দিয়েছেন। এ ছাড়াও ইতোমধ্যেই মাঠে আটটি টিম কাজ করছে। এই টিমের নেতৃত্বে আছেন সিনিয়র নেতারা। তারা বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি/সম্পাদকের সাথে আলাপ-আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নাম প্রস্তাব করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ ও ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়।
গত বছরের ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২০তম জাতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আর ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর তিন বছর তিন মাস পর ২০১৬ সালের এপ্রিলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুই ভাগ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।