বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
২০ কেজি ওজনের মিষ্টিরও ছড়িছড়ি
মহসিন রাজু ও আলামিন ম-ল বগুড়া থেকে : সন্যাসীর মেলা দিয়ে শুরু হয়ে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা কালের বিবর্তনে এখন তা মাছের মেলায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষায় মেয়ে-জামাই মেলা। গতকাল বুধবার থেকে বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় দেড়শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা শুরু হয়েছে।
এই মেলায় তোলা ৮২ কেজি ওজনের বাগাড় মাছের দাম হাঁকা হয়েছে এক হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে দুপুর পর্যন্ত এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দাম বলেছে ক্রেতারা। এ ছাড়া মেলায় উঠেছে ১০ কেজির বোয়াল, ৪০ কেজির কাতল, ১০ কেজির রুই ও ১৫ কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছ। মাছের পাশাপাশি ২০ কেজি ওজনের মিষ্টিরও ছিল ছড়াছড়ি। মেলার প্রথম দিন জামাই বরণ এবং আজ বৃহস্পতিবার বউমেলার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে ঐহিত্যবাহী পোড়াদহ মেলা।
জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নে ইছামতি নদীর শাখা (খাল) সংলগ্ন পোড়াদহ নামক স্থানে বসে এই মেলা। প্রায় দেড়শতাধিক বছর আগে বগুড়া-চন্দনবাইশা সড়ক সংলগ্ন পোড়াদহ খালের পাড়ে এক বিশাল বটবৃক্ষ তলে আয়োজন করা হতো সন্যাসী পূজার। প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার আয়োজিত এই মেলা কালের বিবর্তনে হয়ে ওঠে পূর্ব বগুড়াবাসীর মিলনমেলা। পোড়াদহ নামক স্থানে হয় বলে এ মেলার নাম হয় পোড়াদহ মেলা। মেলাকে ঘিরে আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মেয়ে ও মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। তাদের সাথে নিমন্ত্রণ দিয়ে থাকে স্বজনদের। এ কারণে স্থানীয়রা আবার এ মেলাকে জামাই-মেয়ে বলে থাকে। মেলায় আসা মাছ বিক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের বড় মাছ বিক্রির প্রতিযোগিতা লেগে যায়। মাছ বিক্রেতাদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামে মিষ্টি বিক্রেতারাও।
গত বছরের পর এ বছরও একটি ২০ কেজি ওজনের মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। ষেযদ আহম্মেদ কলেজ এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের দোকানে এ মিষ্টি বিক্রি হয়েছে আট হাজার টাকায়। এ ছাড়া এক কেজি, দুই কেজি, তিন কেজি, চার কেজি ওজনের মিষ্টিও মেলায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে।
ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় এবারের সবচেয়ে বড় ৮২ কেজি ওজনের বাগাড় মাছটি নিয়ে এসেছেন গাবতলী উপজেলার মহিষাবান গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী দুখু মিয়া। রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে আনা মাছটি পদ্মা নদীর বলে তিনি জানান।
বুধবার মেলার শুরুতে মাছটির দাম হাঁকা হয় এক হাজার ৫০০ টাকা কেজি। বাগাড় মাছের পাশাপাশি বোয়াল ১০ কেজি, কাতলা ৪০ কেজি, রুই ১২ কেজি, পাঙ্গাস ১৫ কেজি ওজনের, বিগ্রেড ১০ কেজি ওজনের মাছ উঠেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আকারের মাছ এবারের মেলায় উঠেছে।
এ মেলায় মাছ, মিষ্টি, ফার্নিচার, বড়ই, পান-সুপারি, তৈজসপত্র ও খেলনা থাকলেও কালক্রমে মাছের জন্য বিখ্যাত হয়ে আসছে। মেলাকে ঘিরে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে থাকে। বিশেষ করে মেয়ে ও মেয়ে জামাইকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি চলে আনন্দ উৎসব। মেলায় যেমন মাছের আকর্ষণ, তেমনি বাড়ি বাড়ি জামাই আকর্ষণ। কোন জামাই কত বড় মাছ কিনেছে তা নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। গতকাল পোড়াদহ মেলা শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার একই স্থানে বসবে বউমেলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।