পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রস্তুত থাকুন আন্দোলনের ডাক আসবে -মির্জা আব্বাস
স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সরকার দেশটাকে নরকে (দোজখে) পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার বিকালে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। একই সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমাদের সকলকে আন্দোলনে জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। নিশ্চয় ডাক আসবে, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন খবরের কাগজ খুলে দেখবেন, আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, এ ওকে গুলি করছে, এ ওকে মারছে। কি নিয়ে দ্বন্দ্ব? লুটের বখরা নিয়ে। অর্থাৎ সমাজকে তারা এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে, যেখানে কোনো কিছুর জবাবদিহিতা নেই, যেখানে কোনো কিছুর নিশ্চয়তা নেই, জনগণের স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনো গ্যারেন্টি নাই, মা-বোনের ইজ্জতের কোনো গ্যারেন্টি নেই, শিশুরাও রক্ষায় পায় না। আজকে এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে নরকে পরিণত করেছে। কারো মনে কোনো শান্তি নেই।
এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন একটা অনিশ্চয়তা-শ্বাসরুদ্ধকর-অস্থিতিশীল পরিবেশে আমরা বাস করছি। আমাদের সবাইকে এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে, পারস্পরিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে, পরাজিত করতে হবে এই অপশক্তিকে যারা আমাদের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে দলের সিনিয়র ভাইস- চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটা নয়, দুইটা নয়, অসংখ্য মামলা, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা। যখন উনি গুলশানে চারিদিকে পুলিশ বেষ্টিত অবরুদ্ধ তখন নাকী একেবারে উড়ে গিয়ে দারুস সালামে গিয়ে বোমা মেরে এসেছেন। আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যখন আমি জাতীয় প্রেসক্লাবে ভেতরে আটকা, তখন আমি নাকী ৯টা জায়গায় একসঙ্গে গাড়ি পুঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, আজকে সরকার এই অবস্থার মধ্যে রাজনীতিকে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে, ব্যানক্রাফট। এজন্য রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করতে পারে না, মামলা দিয়ে মোকাবিলা করতে হয়।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মামলা দিয়ে, হত্যা করে, গুম করে আমাদেরকে দমিয়ে রাখা যাবে না, দেশের ১৬ কোটি মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তার গণতন্ত্রের জন্য যে আকাংখা ও অঙ্গীকার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করার জন্য সে বেরিয়ে আসবেই, সোচ্চার হবে, পরাজিত করবে এই অপশক্তিকে।
সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা বার বার বলছি, এই কয়েক বছরে সরকার দেশটাকে রসাতলে নিয়ে গেছে। অর্থনীতির যে মিথ্যাচার করছে, এটা জাতিকে তারা বিভ্রান্ত করছে। খুব ফলাও করে প্রচার করে বাংলাদেশ নাকী উচ্চ আয়ের দেশ হবে, উন্নত দেশ হবে। আজকে একজন মন্ত্রী বলেছেন, ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের দেশের পরিণত হবে। আনন্দের কথা। কিন্তু আসল ব্যাপারটা কী?
অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন অর্থনীতি লুটে নিয়ে যাচ্ছে। যে কাজ ১০ টাকায় হওয়ার কথা সেই কাজ হচ্ছে ৫০ টাকায়। এই যে ফ্লাইওভার হচ্ছে ঢাকা শহরে, প্রতিদিন নির্মাণ ব্যয়ের খরচ বাড়ছে, যেটা ৩ কোটি ছিলো, সেটা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। এখন নতুন রাস্তা হবে পায়রা বন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত। সেখানে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকায় এই রাস্তা তৈরি হবে। কাদের সঙ্গে হচ্ছে, যাদের সঙ্গে টেন্ডার হয় নাই। অর্থাৎ সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটে হবে। তারা টাকা দেবে, তারাই তৈরি করবে, আপনি শুধুমাত্র সুদ দেবেন, বেশি করে টাকা পরিশোধ করবেন। আমার পকেট থেকে টাকা কেটে নেয়া হবে। বিনিয়োগ কত হচ্ছে, সেই বিনিয়োগ কোন কোন খাতে হচ্ছে, জনগণের আর্থিক অবস্থা কেমন, তাদের পকেট থেকে কিভাবে টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে তা গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের অনুসন্ধান করার অনুরোধ জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে এক সেমিনারে সরকারের এক মন্ত্রী বলেছেন, রেমিটেন্স কমতে শুরু করেছে, ইতিমধ্যে শতকরা ২০ ভাগ কমে গেছে। গার্মেন্টেস রপ্তানি যে পরিমাণ প্রতিবছর এগোনোর কথা, তা থেকে অনেক নিচে নেমে গেছে। ৪০ লাখ যুবক এখন একেবারে বেকার তাদের কোনো কর্মসংস্থান নেই। আমাদের ছেলে চাকরি পাচ্ছে না। পায় কারা যারা লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে পারে, যারা আওয়ামী ঘরানার মানুষ তারাই শুধুমাত্র চাকরি পায়।
গণমাধ্যমও ‘সত্য কথা’ বলতে পারছে না বলে অভিযোগ করে সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরে আওয়ামী লীগের নেতার গুলিতে সমকালের সাংবাদিক আব্দুুল হাকিম শিমুল নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
সভাপতির বক্তব্য মহানগর আহ্বায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, অনেকে এখানে আন্দোলনের কথা বলেছেন। কে কখন কোত্থেকে ডাক দিয়ে বসবে, সেটা আল্লাহই বলতে পারেন। তবে আমাদের সকলকে আন্দোলনে জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। নিশ্চয় ডাক আসবে, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, মহানগর বিএনপির কাজী আবুল বাশার, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, যুব দলের সাইফুল আলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, ছাত্র দলের রাজীব আহসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।