রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা : সয়াবিনের রাজধানী হিসেবে খ্যাত লক্ষ্মীপুরে গত বছর ৫২ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ করে দেশে ইতিহাস রচনা করছিল এ জেলা। কিন্তু টানা তিন বছর সয়াবিনের নিম্নমুখী বাজারের কারণে স্থানীয় কৃষকরা এবার সয়াবিন বাদ দিয়ে চীনা বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সরেজমিনে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এবং রামগতির মাঠে গিয়ে এমন বাস্তব চিত্র পাওয়া গেছে। এ মৌসুমে বিভিন্ন হাটবাজারে সয়াবিনের পরিবর্তে এবার চীনা বাদামের বীজ বেশি বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বীজ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ২ শতাধিক বীজ দোকানের মধ্যে প্রায় শতাধিক দোকানিই বাদাম বীজ বিক্রি করতে হাটে নিয়ে এসেছেন। প্রতি কেজি বাদাম বীজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা এবং প্রতি কেজি সয়াবিন বীজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কৃষক মনির আহমদ জানান, এবার তিনি তার সকল জমিতে বাদাম রোপণ করবেন। তার মতে, এবার সয়াবিন ছেড়ে দেয়ার সময় এসেছে। সয়াবিনে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। তাছাড়া মৌসুমে ভারতীয় সয়াবিনের কারণে বাংলাদেশী সয়াবিন চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। স্থানীয় কৃষকদের মতে, জেলায় চলতি মৌসুমে বাদামের চাষ হবে বিগত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর লক্ষ্মীপুরে ৪ হাজার ২৯৩ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে রামগতি উপজেলায় দুই হাজার ১শ হেক্টর, কমলনগর এক হাজার ৩৫৩ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৭৫০ হেক্টর, রামগঞ্জ ৭৫ ও রায়পুর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছিল। গত বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৫ হাজার ৮৪৫ মেট্রিক টন। তাদের মতে, এবার বাদাম চাষ আরো বাড়বে। তবে কি পরিমাণ বাড়বে তা এখনো বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর কৃষি বিভাগ। গত বছর বাদামের গড় বিক্রি ছিল প্রতি মণ গড়ে ২৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। এ দিকে একই সময়ে গত বছর ৫২ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষ হয় লক্ষ্মীপুরে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর, রায়পুর ৭ হাজার ৭শ’ হেক্টর, রামগতি ১৮ হাজার ৬শ’ হেক্টর, কমলনগর ১৮ হাজার ৯০ হেক্টর ও রামগঞ্জ উপজেলায় ৮০ হেক্টর। গত বছর সয়াবিনে বাজার দর ছিল প্রতিমণ গড়ে ৯শ’ থেকে ১১শ’ টাকা। কৃষকদের মতে, সয়াবিনের তুলনায় বাদাম চাষে ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশি। কমলনগর উপজেলার লরেঞ্চ গ্রামের দুলাল মিয়া জানান, তিনি গত বছর এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার টাকা। বাদাম বিক্রি করেছিলেন ৬৫ হাজার টাকার। বাদাম চাষের সাথে জড়িত কয়েকজন চাষি জানান, বাদাম গাছে তেমন কোনো রোগ-বালাই নেই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৯ থেকে ১০ মণ বাদাম উৎপাদন করা যায়। কৃষি কর্মকর্তা সালেহ উদ্দিন পলাশ জানান, মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল লক্ষ্মীপুর বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এখানকার চাষিরা এত বছর সয়াবিন চাষে ঝুঁকে ছিল কিন্তু বিগত বছরগুলোতে খরচ এবং বিক্রি নিয়ে তেমন ভালো না করতে পারায় এবার তারা বাদাম চাষে ঝুঁকছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।