রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার উদপুর ইউনিয়নে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে শীতলক্ষ্যার পয়স্তি জমির মাটি। অভিযোগ রয়েছে, শীতলক্ষ্যার পারের ইটভাটাগুলোর পোড়ানো মাটির বেশির ভাগই চুরি করা মাটি। আর এসব মাটি দিনদুপুরেই কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় সন্ত্রাসীও প্রভাবশালী মহল। বিধি অনুযায়ী নদীর তীরের পয়স্তি জমির ভোগ দখলের জন্য পাশের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির মালিকের অগ্রাধিকার থাকলেও এ অঞ্চলের পয়স্তি জমির মাটি কেটে স্থানীয় ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। স্থানীয়রা প্রশাসনকে জানালেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন তারা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দাউদপুর ইউনিয়নের খাস দাউদপুর মৌজা, বেলদী, দেবগ্রাম ও খৈসাইর এলাকায় শীতলক্ষ্যা পারের পয়স্তি জমির মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে। স্থানে স্থানে কৃষকের জমির মাটির পাশাপাশি শীতলক্ষ্যা পারের পয়স্তি জমির মাটিসহ কভার্ট ভ্যান, ট্রাক ও অবৈধ ইছারমাথাসহ জলের সীমানায় ট্রলার দিয়ে এসব মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একই এলাকার অর্ধশতাধিক ইটভাটায়। প্রকাশ্যে এমন দুর্বিত্তায়ন ঘটলেও দেখার যেন কেউ নেই। দাউদপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের নাকের ডগায় এমন অপকর্ম ঘটলেও নীরব ভূমিকায় রয়েছেন তারা। তাদের নাকি কিছুই করার নেই; এমনটাই জানালেন তারা। অভিযোগ রয়েছে দাউদপুরের আসলিপাড়া এলাকার মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে কবীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের দল দিনদুপুরে স্থানীয় কৃষকদের জমি থেকে নামে মাত্র দাম দিয়ে টপসয়েল কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় ইটভাটায়। এই সুযোগে শীতলক্ষ্যা পারের পয়স্তি জমির মাটিও অবাধে কেটে বিক্রি করছেন তারা। এতে শীতলক্ষ্যার উভয় পারের ভাঙনের কবলে পড়তে দেখা গেছে। দাউদপুর ইউনিয়নের আসলি পাড়া ও খাসদাউদপুর মৌজায় দেখা গেছে আরো ভয়াবহ চিত্র। ওই সন্ত্রাসী কবীরের তত্ত্বাবধানে মাটি কাটায় ব্যবহৃত ভারী যন্ত্র ব্যাকু যোগে ডেমরা কালীগঞ্জ সড়কের পার্শ্ব রাস্তার মাটিও কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্র্বৃত্তরা। একই রাস্তার ও রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সেচপ্রকল্পের অধীনে (পাউবোর) জমিতেই নির্মাণ করা হয়েছে পাকা স্থাপনা। এই স্থাপনার আন্ডারগ্রাউন্ড করা হয়েছে একই রাস্তা খুঁড়ে। অভিযোগ রয়েছে আসলি পাড়ার এই জমিগুলোও এক পয়স্তি জমির অন্তভূক্ত। ফলে দাউদপুর অংশের রাস্তায় দেখা দিয়েছে ফাটল। আসলি পাড়া বাজার এলাকায় সন্ত্রাসী কবীর বাহীনির সদস্যরা পয়স্তি জমি থেকে মাটি কাটার চিত্র ধারণ করতে চাইলে এই প্রতিবেদকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা দাবি করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ মাটি কাটা হচ্ছে। সূত্র জানায়, এসব অপকর্মের মূল হোতা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এটি এম জাহাঙ্গির। তাদের মধ্যে সভাপতি মজিবুরের নির্দেশেই এসব মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, ফসলি জমির টপসয়েল কেটে নেয়ায় পরবর্তী বছরের আশানুরূপ ফসল ফলাতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। মাটির উর্বরতা হ্রাস করে এমন ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদে নাম প্রকাশ না করে প্রশাসনকে জানিয়েও প্রতিকার পাননি তারা। তাদের ভয়ে স্থানীয় নিরীহ লোকজন মুখ খুলছেন না। ফলে অধরা থেকে যাচ্ছে তাদের অপকর্ম। এদিকে বাড়ি ভিটের জমি পাশে শীতলক্ষ্যা পারের পয়স্তি মাটি কেটে নেয়ায় বেশ কিছু বাড়ি-ঘর রয়েছে হুমকির মুখে। উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের তারাইল ও বিরাব এলাকায় রয়েছে এমন ভয়াবহ চিত্র। এসব বিষয়ে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গির বলেন ভিন্ন কথা, তিনি বলেন, এই এলাকার জনপ্রতিনিধিরাই (মেম্বার) মাটি কাটার ব্যবসায় জড়িত, ফলে আমার কিছুই করার নেই। এসব বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারর (ভূমি) সাইদুর রহমান বলেন, শীতলক্ষ্যার পয়স্তি জমির মাটি কাটা বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।