Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়ার ১০ গ্রামের মানুষ আর্সেনিক ঝুঁকিতে

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়ার মিরপুরে ১০টি গ্রামের প্রায় ১৯ হাজার ৭১০ জন আর্সেনিকের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামে ৩০ হাজার ৮৬৫ জন জনসংখ্যার সববাস। এরমধ্যে ১০টি গ্রামের প্রায় ১৯ হাজার ৭১০ জন আর্সেনিকের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গ্রামগুলো হলোÑ মালিহাদ, আবুরী, বাজিতপুর, মাগুরা, মল্লিকপুর, সুতাইল, আসাননগর, ঝুটিয়া ডাঙ্গা ও চক হাড়দী। বর্তমানে এসব গ্রামে প্রায় ১ হাজার মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কার্যকরী তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলে জানান ভুক্তভুগীরা। জানা গেছে, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের মানুষরা অনেকটা জেনে বুঝেই আর্সেনিকের মতো বিষপান করে চলেছেন। বর্তমানে বাজিতপুর গ্রামটি এখন আর্সেনিকের গ্রামে রূপ নিয়েছে। এ গ্রামের প্রায় ৩৭৭০টি টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে এই এলাকার প্রায় ১ হাজার নারী-পুরুষ এরোগে আক্রান্ত রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নে ১০টি গ্রামে আর্সেনিকের সমস্যা প্রায় ১০ বছর ধরে। এসব গ্রামের অধিকাংশ খাবার পানি আর্সেনিক ধরা পড়েছে। এরপর অনেকেই স্থান পরিবর্তন করে একাধিকবার অন্যত্র টিউবঅয়েল বসালেও তাতে আর্সেনিকমুক্ত পানি পাওয়া যায়নি। এভাবেই আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকটা নিরুপায় হয়ে জেনে শুনেই প্রতিনিয়ত আর্সেনিক বিষপান করতে হচ্ছে এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষকে। এসব গ্রাামের অনেক নারী-পুরুষ ছাড়াও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আর্সেনিকের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। আক্রান্তরা হাতে পায়ে গুটি, সারা গায়ে কালো তিল দাগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে শরীরে কালো কালো দাগ, হাতে পায়ে ঘা দেখা দিচ্ছে। আশঙ্কার কথা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি পান করতে না পারায় আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ এই দীর্ঘসময়ে মানুষকে সচেতন করতে বা আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস তৈরি করতে সরকারি বা বেসরকারি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আর্সেনিক আক্রান্ত মালিহাদ ইউনিয়নের আবুরী গ্রামের সেলিম চৌধুরী জানান, আমাদের ৩টি টিউবওয়েলের মধ্যে ২টিতে আর্সেনিক রয়েছে। বাকি ১টি টিউবওয়েলের পানি পরিবারের সবাই পান করি। আমি নিজেও এখন আর্সেনিকে আক্রান্ত। তিনি অভিযোগ করেন, এই গ্রামের অনেক টিউবওয়েলে আর্সেনিক ধরা পড়লেও এখানে পানি পরীক্ষার জন্য কেউ আসেননি। আমরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি নিয়ে যেয়ে পরীক্ষা করে নিয়ে এসেছি। এবিষয়ে উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জানান, মালিহাদ ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ১৯ হাজার ৭১০ জন আর্সেনিকের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ১ হাজার মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত। এসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তিনি জানান, এ এলাকার অধিকাংশ টিউবওয়েল আর্সেনিকে আক্রান্তের বিষয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি প্রেরণ করা হয়। এরপর সরকারিভাবে এসব এলাকায় কিছু গভীর নলকূল স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত চাপের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ