Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গম চাষের নিষেধাজ্ঞায় কুষ্টিয়ায় সরিষার আবাদ বাড়ছে

| প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে : ব্লাস্ট রোগের কারণে গম চাষে নিষেধাজ্ঞা থাকায় কুষ্টিয়ায় সরিষা চাষ বেড়েছে। চলতি বছর জেলায় বছর ৭ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ২৫০ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২২৫ হেক্টর, দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৭৫০ হেক্টর ও খোকসা উপজেলায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ৯৫ শতাংশ জমিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এবং বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল বারি সরিষা-৯, ১৩, ১৪ ও বিনা সরিষা-৪ ও ৯ জাতসহ উচ্চফলনশীল টোরি-৭ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এছাড়াও বাকি ৫ শতাংশ জমিতে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, স্থানীয় জাতের হেক্টরপ্রতি ফলন হয় দশমিক ৫ থেকে দশমিক ৬ টন সে তুলনায় বিনা ও বারিসহ উচ্চফলনশীল জাতের সরিষায় ফলন হয় হেক্টরপ্রতি দেড় থেকে ২ টন। উচ্চফলনশীন জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করায় তারা এ বছর এটির চাষ বেশি করেছে। এছাড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরিষা চাষ সফল করতে সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসুমে কৃষকরা সরিষার ফলন ভালো বলে হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার আব্দালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম ম-ল জানান, চলতি মৌসুমে তিনি দেড় একর জমিতে বারি সরিষা-১৪ জাতের উচ্চফলনশীল সরিষা চাষ করেছেন। যা থেকে তিনি প্রায় ২২ মণ সরিষা পাবেন বলে আশা করছেন। মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, দেড় বিঘা জমিতে বারি সরিষা-৯ জাতের উচ্চফলনশীল সরিষা চাষ করে প্রায় সাত মণ সরিষা পাবেন বলে আশা করছেন। উভয় কৃষকই ভালো দামে সরিষা বিক্রি করতে পারবেন বলে তারা জানান। মিরপুর উপজেলা কৃষি র্কমকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, মিরপুর উপজেলায় ৮৮৫ হেক্টর সরিষার চাষ হয়েছে। তামাক প্রবণ এই উপজেলায় সব থেকে বেশি তামাক চাষ হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে নিরন্তর পরিশ্রম করেও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে তামাক চাষ বন্ধ করে সরিষার চাষ বাড়াতে পেরেছি। এর ফলে এই উপজেলায় তামাক চাষ অনেকটাই কমে গেছে। তিনি বলেন, এবার বারি সরিষা-১৩, ১৪ ও বিনা সরিষা-৪ ও ৯ জাতের চাষ করা হয়েছে বেশি। সদর উপজেলা কৃষি র্কমকর্তা মো. সেলিম হোসেন জানান, কৃষকদের সরিষা চাষে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও ঋণ সহায়তা সরবরাহ করছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত) উপপরিচালক ডা. হায়াৎ মাহমুদ জানান, কুষ্টিয়া অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ব্লাস্ট রোগের কারণে গম চাষে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবং মসুর এবং সরিষার আবাদ বেড়েছে। এছাড়াও সরিষার ক্ষেত্রে কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ায় জেলায় গতবারের থেকে এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় স্থানীয় জাতের তুলনায় উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা বেশি চাষ করছেন কৃষকরা। সরিষা চাষে কৃষি বিভাগ সবধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সরিষার ভালো ফলন পাওয়ার পাশাপাশি ভালো দাম পাবেন বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ